প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২৪ ২০:৩২ পিএম
আপডেট : ০১ জুলাই ২০২৪ ২০:৫২ পিএম
স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে নাটকীয় ম্যাচ জয়ের পর কথার আগল খুলে বসেছিলেন বেলিংহাম— ছবি : এক্স
জার্মানির ভিলটিনস অ্যারেনায় দাপট ছিল ইংল্যান্ডের। একের পর এক আক্রমণে নাজেহাল অবস্থায় পড়েছিল স্লোভাকিয়া। কিন্তু ম্যাচের মূল সময়ে এগিয়ে ছিল তারাই। স্লোভাকিয়া জিতে যাচ্ছে বলেই যখন সবাই ধরে নিয়েছিল, তখন অতিরিক্ত সময়ে খেলার ব্যাপ্তি বাড়ান জুড বেলিংহাম। পরে স্লোভাকিয়ানদের ঝলকে দেন হ্যারি কেন। ইউরোতে তাতেই আসে রোমাঞ্চকর জয়, ইংল্যান্ডের নিশ্চিত হয় কোয়ার্টার ফাইনাল।
অথচ এই ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্স নিয়ে ইউরোর শুরু থেকেই চলছে সমালোচনা। হ্যারি কেন একবার সংবাদ সম্মেলনে অনুরোধও করে বসেছেন, অন্তত টুর্নামেন্ট চলার সময় যেন দলের পাশে থাকে সবাই। সমালোচনা যদিও থামেনি, বরং বেড়েছে। স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ইংলিশদের আশা বাঁচিয়ে বেলিংহাম তাই একহাত নিয়েছেন সমালোচকদের। ‘ফালতু কথা’ বলা সমর্থকদের তিরষ্কার করেছেন। একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার ক্ষেত্রেও অনেক সাবধান থাকতে বলেছেন। কারণ হিসেবে ইংলিশ ফরোয়ার্ড টেনেছেন, এখনকার সাংবাদিককরা নাকি খুব বেশি জাজমেন্টাল হয়ে যান। তাই কথায় নয় মাঠে জবাব দেওয়াতে বিশ্বাসী বেলিংহাম।
ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে শেষ ষোলোর লড়াইয়ে ইংলিশদের প্রায় বিদায় করে দিতে যাওয়া স্লোভাকিয়া হারে ২-১ ব্যবধানে। ইভান স্রানজের গোলে প্রথমেই এগিয়ে যায় স্লোভাকিয়া। পরে ইংল্যান্ডকে ৯০.৫ মিনিটে দৃষ্টিনন্দন বাইসাইকেল কিকে সমতায় ফেরান বেলিংহাম। ইংলিশদের জয়সূচক গোলটি অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই করেন কেন। ৬ জুলাই (শনিবার) ইংলিশদের শেষ চারে ওঠার প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড।
গতকাল এক মিনিটের মাঝে খেলা ঘুরিয়ে দেওয়া বেলিংহাম ম্যাচ শেষে ক্ষোভ ঝাড়েন। সমালোচকদের উদ্দেশে এ ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ফুটবলে, নকআউট ম্যাচে এই অনুভূতি খুবই বাজে… বিদায় নেওয়ার বাকি আছে আর ৩০ সেকেন্ড। কিন্তু ফালতু সব কথা শুনতে হচ্ছে, মনে হয় যেন গোটা জাতিকে হতাশ করছি। কিন্তু এই ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই বলে একটি শট এবং সবকিছুই বদলে যায়। এই অনুভূতি কখনোই চাই না, এই পরিস্থিতিতেও পড়তে চাই না। কিন্তু যখন এটা হয়ে যায়, দারুণ লাগে।’
বেলিংহাম তবে মুখেই শুধু নয়, মাঠে পারফর্ম করেও জবাব দিতে চান, ‘ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা দারুণ উপভোগ্য, তবে এটা প্রচণ্ড চাপেরও। লোকে প্রচুর ফালতু কথা বলে। এটা ভালো যে, পারফর্ম করতে পারলে কিছুটা জবাব দেওয়া যায়। সংবাদ সম্মেলনগুলোতে সাক্ষাৎকার দেওয়া, ফুটবলার হিসেবে খোলামেলাভাবে কথা বলা খুবই কঠিন, কারণ সব সময়ই আমাদের নিয়ে নানা কিছু ধরে নেওয়া হয়।’
বেলিংহাম সমালোচকদের জবাব দিতে পেরেও খুশি, ‘ফুটবলারদের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গর্বের মুহূর্তগুলোর একটি হওয়া উচিত ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা। কিন্তু কখনও কখনও এটা প্রচণ্ড চাপের। লোকে অনেক অনেক কথা বলে এবং কখনও কখনও তা হৃদয়ে আঘাত করে। এত পরিশ্রম করি, তারপরও কখনও কখনও ভালো পারফরম্যান্স না-ই হতে পারে। মাঝেমধ্যে মনে হয়, অন্যায্যভাবে এটা বাড়তেই থাকে। যার যা খুশি, যখন-তখন বলতে থাকে। আজকের ম্যাচের মতো এ ধরনের মুহূর্তে কিছু লোককে জবাব দিতে পারা তাই দারুণ।’
দলের ওপর বিশ্বাস রাখতে বলেছেন ইংলিশদের গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ড। বেলিংহামের পর তিনিও কথা দিয়েছেন ইংল্যান্ডকে গর্বিত করবেন তারা। স্লোভাকিয়ানদের থামিয়ে দেওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে পিকফোর্ড বলেছেন, ‘একদম শেষ মুহূর্তে সব ঘটেছে, আমরা দেখিয়েছি পুনর্জীবন এবং জেতার মানসিকতা। স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে জিতে স্বস্তি ফিরেছে। কিন্তু আপনি জানেন আমি কতটা আবেগী। আমাদের এখনও অনেক কিছু করার বাকি। আমরা আমাদের জাতীকে গর্বিত করতে চাই। আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখুন। এই ব্যাচটার জন্য সব সময় শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করব।’