দ্য গ্রিন রেড স্টোরি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ মে ২০২৪ ২১:৪০ পিএম
আপডেট : ৩০ মে ২০২৪ ২১:৫৯ পিএম
যুব বিশ্বকাপজয়ী তানজিম হাসান সাকিব সেরাটা দিতে মুখিয়ে আছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে; ফাইল ছবি
সব ক্রিকেটারই
বিশ্বজয়ের আজন্ম স্বপ্ন দেখেন। ক্যারিয়ারের শুরুতেই সেই সাফল্য ধরা দিয়েছিল তানজিম
হাসান সাকিবের কাছে। ২০২০ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে জেতেন যুব বিশ্বকাপের
শিরোপা। এরপর ২০২৩ সালের এশিয়া কাপে সুযোগ পান জাতীয় দলে। সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে
অভিষেকেই বল হাতে নিজের ঝলক দেখান। খেলেছেন ভারতে অনুষ্ঠিত গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও। ডানহাতি
এই পেসার এবার খেলবেন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ক্রিকেটের
সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের এই আসরে দলের প্রতি অবদান রাখতে চান তানজিম। এজন্য নিজের সেরাটা
দিতে মুখিয়ে আছেন ২১ বছর বয়সি পেসার।
টি-টোয়েন্টি
বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে থাকা খেলোয়াড়দের নিয়ে ‘গ্রিন রেড স্টোরি’
নামে ধারাবাহিক সাক্ষাৎকারের ভিডিও নিজেদের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট
বোর্ড (বিসিবি)। বৃহস্পতিবার (৩০ মে) প্রকাশ করেছে পেস ইউনিটের তরুণ তুর্কি তানজিম হাসান
সাকিবের সাক্ষাৎকার। সেখানেই যুবাদের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটার জানালেন বিশ্বকাপে
তার লক্ষ্য, পরিকল্পনা এবং দল নিয়ে প্রত্যাশার কথা। বিশ্বকাপ নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ
করতে গিয়ে তানজিম সাকিব বলেন, ‘প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই একটা স্বপ্ন থাকে যে, নিজের দেশের
হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলবে। দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। এটা অবশ্যই একটা স্বপ্ন।
বিশ্বকাপ স্কোয়াডে আমি আছি এটা অবশ্যই একটা স্বপ্নের মতো।’
তানজিম
জাতীয় দলের জার্সি প্রথম গায়ে চাপিয়েছেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। সব মিলিয়ে এর মধ্যে খেলেছেন সাতটি ওয়ানডে ও ছয়টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
তবে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলার সময় থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার স্বপ্ন এই তরুণ
পেসারের, ‘এটা (আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার স্বপ্ন) শুরু থেকেই ছিল। যখন অনূর্ধ্ব-১৯
খেলি, তখন থেকেই লক্ষ্য ছিল যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলব। কখনও আমার আত্মবিশ্বাস কম
কাজ করেনি যে, আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পারব না। আমি এভাবেই নিজেকে প্রস্তুত করেছি
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য যে আমার ওখানে গিয়ে ডমিনেট করা লাগবে।’
কিছু দিন
আগেই আইসিসির সহযোগী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ।
সিরিজ হারলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে দল নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী তানজিম, ‘খুবই
আত্মবিশ্বাসী আমাদের দল নিয়ে। আমাদের দল মানসিকভাবে খুবই শক্তিশালী আছে। বন্ধনও খুব
শক্তিশালী। আমরা চাইলে যেকোনো দলকে হারাতে পারি। আমাদের এগারোজন যদি মাঠে ওই দিন সেরাটা
দিতে পারে, তাহলে কোনো দলই আমাদের সামনে ব্যাপার না। আমরা যেকোনো দলকে হারানোর মতো
দক্ষতা রাখি।’
সাধারণত
পেসাররা বেশ লম্বা হয়ে থাকেন। কিন্তু তানজিম সাকিবের উচ্চতা অন্য পেসারদের মতো নয়।
সেই চ্যালেঞ্জটা কীভাবে উতরে গেছেন, জানিয়ে তানজিম সাকিব বলেন, ‘পেস বোলার হিসেবে আমার
উচ্চতা ছয় ফুট না। সে হিসাবে আমার অবশ্যই আলাদা স্কিল থাকা লাগবে। চেষ্টা করি বল স্কিড
করানোর জন্য, যাতে ব্যাটারদের খেলতে কষ্ট হয়।’ যোগ করেন, ‘বিশ্বকাপ সব সময় একটা
উত্তেজনাপূর্ণ আসর। সবাই এটাকেই টার্গেট করে থাকে যে আমি বিশ্বকাপে খেলব। ব্যতিক্রম
নই আমিও। আমি যেন আমার সেরাটা দিয়ে দেশকে কিছু দিতে পারি। আমারও এটাই ইচ্ছা যে, আমি
যদি খেলার সুযোগ পাই অবশ্যই আমার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে দল যাতে জিততে পারে সেটাকেই
টার্গেট করব।’
২০২০
সালে বাংলাদেশকে প্রথম বৈশ্বিক শিরোপা এনে দেওয়া দলের তাওহিদ হৃদয়, শরিফুল ইসলাম, তানজিদ
হাসান তামিমরা এখন জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমের সঙ্গী। এদের মধ্যে নিজের পছন্দের ব্যাটারের
নামও বলেছেন তানজিম, ‘তাওহিদ হৃদয় আমার পছন্দের ব্যাটার। তার ব্যাটিং খুবই উপভোগ
করি। তার হিটিং আমার খুবই ভালো লাগে। নেটে বল করতেও ভালো লাগে। তার এবং আমার মধ্যে
সব সময় একটা চ্যালেঞ্জ কাজ করে। আমি সব সময় তাকে বলি, আমাকে ছয় মারেন! ছয় মারেন! তো,
আমি সব সময় তাকে চ্যালেঞ্জ দিই, সে-ও মজা পায় চ্যালেঞ্জ নিয়ে।’
দলে
সাকিব আল হাসানের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছেন। যিনি আসলে বিশ্বক্রিকেটেই বড় তারকা। সাকিবের
কাছ থেকে কী শিখেছেন বা শিখছেন? তানজিম জানালেন, সাকিবের মতো মানসিক শক্তি অর্জন করতে
চান তিনি, ‘সাকিব ভাইয়ের যে কঠিন মানসিকতা, সেটা আনার চেষ্টা করব। সব সময় ভালো লাগে
যে তিনি মানসিকভাবে শক্ত থাকেন। যেকোনো পরিস্থিতিকে খুবই শান্তভাবে সামাল দিতে পারেন। উনার এ ব্যাপার আমার খুব ভালো লাগে।’
নিজের
ব্যাটিং নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘লোয়ার অর্ডারে যখন ব্যাটিংয়ে নামি তখন আমার চিন্তা থাকে
দল আমার কাছ থেকে যা আশা করে তা দিতে পারছি কি না। আমি যে ভূমিকা পালন করব ওইটা আমি
ভালোভাবে করতে পারছি কি না। আমি যখনোই নামি পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করি। আমি
আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে ব্যাট করার চেষ্টা করি।’