এম আর মাসফি
প্রকাশ : ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:১৯ এএম
মাত্র ৭০ থেকে ৮০ টাকায় যে স্মার্ট কার্ড পাওয়া যায় তার খরচ ধরা হয়েছে ৩০০ টাকা। ৮ থেকে ৯ লাখ টাকা মূল্যের স্প্রেয়ার ড্রোনের দাম ধরা হয়েছে ৬ কোটি টাকা। যে ট্রে কেনা যায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়, তার দাম ধরা হয়েছে ৪০০ টাকা। এমন অস্বাভাবিক দামে হাবুডুবু খাচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পার্টনার প্রকল্প প্রস্তাব।
কৃষি খাতের আধুনিকায়ন ও উন্নয়নে প্রণীত এই মেগা প্রকল্পের সার্বিক খরচ পড়বে ৭ হাজার ২১৪ কোটি টাকা। এত দাম দেখে সন্দেহ হওয়ায় প্রকল্পটি সংশোধন করে আবারও উপস্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ প্রকল্পে এই অপ্রয়োজনীয় ও অস্বাভাবিক ব্যয় ধরা হয়েছে। প্রকল্পটিতে বিশ্বব্যাংক ৫০০ মিলিয়ন এবং আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) ৪৩ মিলিয়ন ডলার দেবে। সরকারি অর্থায়ন থাকবে ১৪৫৪.৬৫ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পটিতে বৈদেশিক ঋণ ছাড়ের শর্তে থাকবে ১০টি ফলভিত্তিক লক্ষ্য অর্জন।
অস্বাভাবিক ব্যয়ের ছড়াছড়ি
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রকল্পটিতে ১ কোটি ৮০ লাখ কৃষককে স্মার্ট কার্ড দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য খরচ ধরা হয়েছে ৫৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ একটি স্মার্ট কার্ডের পেছনে খরচ হবে ৩০০ টাকা। অথচ গত বছর কৃষকদের স্মার্ট কার্ড দিতে স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল এবং সেখানে একেকটি কার্ডের পেছনে ৭০ থেকে ৮০ টাকা খরচ ধরা হয়েছিল। স্মার্ট কার্ডের পেছনে এত ব্যয় নিয়েও প্রশ্ন তুলছে পরিকল্পনা কমিশন।
অবশ্য এই প্রস্তাব ‘যৌক্তিক’ বলে দাবি করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান (প্রকল্প প্রিপারেশন) মো. রাকিবুজ্জামান খান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এই কৃষি স্মার্ট কার্ডের কোয়ালিটি আলাদা হবে। অনেক বেশি তথ্য সংযুক্ত করা হবে। এটা সিকিউরড হবে। এটাতে বেশি লেনদেন করা যাবে। তাই এখানে ব্যয়ও বেশি লাগবে। অন্যান্য সংস্থার কার্ডের রেটের তুলনায় এটা অনেক কম।’
প্রকল্পটিতে ৬ কোটি টাকা হিসেবে পাঁচটি স্পেয়ার ড্রোন কেনার খরচ ধরা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। অথচ এর থেকে অনেক কম দামে দেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এ ধরনের ড্রোন কেনা সম্ভব। জিনিংওলং মেশিনারি কোম্পানির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ৮ থেকে ৯ লাখ টাকায় এই ড্রোন বিক্রি হচ্ছে। সাইএগ্রো কৃষাণ টুলস এগ্রো লিমিটেডের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, তারা ৬ লাখ ৩০ হাজার টাকায় এই ড্রোন বিক্রি হচ্ছে। জিয়াংসু ডিজিটাল ঈগল এস অ্যান্ড টি ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি এই ড্রোন বিক্রি করছে ৯ থেকে ১১ লাখ টাকায়।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা বলেন, ‘এই ড্রোন প্রকল্পে নাও থাকতে পারে। এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। তবে এই ড্রোন ব্যবহারের সক্ষমতা আমাদের নেই। তাই হয়তো এর পরিচালনা এবং কেনাসহ বিভিন্ন দায়িত্ব কোনো প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হতে পারে। এজন্যই এই ব্যয় ধরা হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে এসেছে, ‘যদি অন্য একটি সংস্থাকেই এসে ড্রোন দিয়ে পানি দেওয়ার কাজ করতে হয়, তাহলে এ প্রকল্পের যৌক্তিকতা কোথায়?’ এর কোনো উত্তর মেলেনি সংশ্লিষ্ট কারও কাছ থেকে।
প্রকল্পটিতে দুই লাখ ট্রে কিনতে ৮ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ একেকটি ট্রে কিনতে খরচ পড়বে ৪০০ টাকা। অথচ দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৮০ থেকে ১৫০ টাকায় বিভিন্ন ধরনের ট্রে বিক্রি করছে। দেশের অন্যতম কৃষি যন্ত্রপাতির বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান কৃষি বন্ধুর ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ৫০ থেকে ৮৫ টাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ট্রে বিক্রি হচ্ছে।
কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রির আরেকটি বড় প্রতিষ্ঠান জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা জানান, ১০০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যেই এসব ট্রে বিক্রি হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে চলমান কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পেও ২৩৩ টাকা করে একেকটি ট্রে কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানান, ট্রের বিভিন্ন সাইজ আছে। সে অনুযায়ী এটির ব্যয় ধরা হয়েছে। তবে এখনই সবকিছু চূড়ান্ত হয়নি। পিইসি সভায় অনেক পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগে যেসব প্রস্তাব করা হয়েছিল, তার মধ্যে অনেক কিছুই থাকছে না সংশোধিত প্রস্তাবনায়। নতুন প্রস্তাবনায় আরও কিছু সংস্থাও যোগ করা হয়েছে।
মাথাভারী বৈদেশিক প্রশিক্ষণ
প্রকল্পটিতে সংস্থাভিত্তিক আলাদা আলাদা বৈদেশিক প্রশিক্ষণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাদের প্রস্তাবে প্রতি ব্যাচে ১০ জন হিসেবে ৫০ কর্মকর্তাকে বিদেশ প্রশিক্ষণে পাঠানোর কথা বলেছে। সে হিসাবে এই ৫০০ কর্মকর্তার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ একেকজন কর্মকর্তার প্রশিক্ষণের পেছনে খরচ দাঁড়াচ্ছে ১০ লাখ টাকা করে। অথচ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের (ড্যাম) প্রস্তাবনায় বৈদেশিক প্রশিক্ষণের খরচ ধরা হয়েছে ২১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সেখানে ১০ ব্যাচে ১০০ জন কর্মকর্তা বৈদেশিক প্রশিক্ষণে যাবেন। এর মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, আইএমইডি ও ইআরডির কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ৬ কোটি টাকা।
এদিকে বাংলাদেশ এগ্রিকালচার রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএআরসি) প্রস্তাবনায় বৈদেশিক প্রশিক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১০১ কোটি টাকা। এখানে প্রতি ব্যাচে ১০ জন হিসেবে ৮০টি ব্যাচের বৈদেশিক প্রশিক্ষণে খরচ ধরা হয়েছে ৮ কোটি টাকা। প্রতি ব্যাচে পাঁচজন হিসেবে ৮০টি ব্যাচের বৈদেশিক প্রশিক্ষণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি টাকা। এ প্রস্তাবনায় বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে পিএইচডি এবং মাস্টার্স ডিগ্রির জন্যও বিদেশে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য সংস্থাও তাদের প্রস্তাবনায় বৈদেশিক প্রশিক্ষণের অংশ রেখেছে। এই বৈদেশিক প্রশিক্ষণে পরিকল্পনা কমিশন, আইএমইডি ও ইআরডি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদেরও রাখা হয়েছে। তারা এ প্রশিক্ষণে গিয়ে কী করবেন, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
এ বিষয়ে কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা জানান, কৃষি মন্ত্রণালয়, আইএমইডি ও ইআরডি কর্মকর্তারা বিদেশ না গেলে সেখানে কী প্রশিক্ষণ হচ্ছে, সেটা বুঝতে পারবেন কী করে? এ জন্য তাদেরও রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) এ কে এম ফজলুল হক বলেন, পরিকল্পনা কমিশন, ইআরডি এবং আইএমইডির কর্মকর্তাদেরও এই প্রকল্পে বৈদেশিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে। যাতে তারা বুঝতে পারেন বিদেশে কী কাজ হচ্ছে। অপ্রয়োজনীয় কেউ এই বিদেশ প্রশিক্ষণে যেতে পারবেন না।
‘অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপস্থাপনায় দেখা যায়, ২৫৩টি মোবাইল ক্রপ ক্লিনিক ভেহিকল কিনতে ১৭৭ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া এই প্রকল্পে প্রত্যেকটি সংস্থার জন্য চাহিদার অতিরিক্ত গাড়ি কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ছয়টি জিপ কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। এ ছাড়া ড্যাম ৯টি জিপ, ৫টি পিকআপ এবং ২৫০টি বাইক কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। ব্রি ১৫টি করে জিপ এবং পিকআপ কিনতে ৩০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে। বিএডিসি ৪৫টি পিকআপ এবং ২টি মাইক্রো কিনতে চেয়েছে ৩২ কোটি ৯০ লাখ টাকা; ১০০টি মোটরসাইকেল মেরামতে চেয়েছে ৩ কোটি টাকা।
মোবাইল ক্রপ ক্লিনিকের বিষয়ে জানতে চাইলে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্ল্যান্ট প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক আহমেদ বলেন, ‘প্রকল্পের পর এগুলোর ব্যবস্থাপনা কীভাবে হবে, তা চিন্তা করা দরকার। কারণ এগুলোর সাসটেইনেবিলিটি খুবই দরকার। পরে দেখা যাবে প্রকল্পের পর অর্থের অভাবে এগুলো ঠিকভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে না।’
বিস্ময়ের কথা হলো, কৃষির আধুনিকায়নে এসব প্রকল্প অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই গ্রহণ করা হয়েছে। শেরেবাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু নোমান ফারুক বলেন, ‘প্রকল্প নেওয়ার বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি। তাই প্রকল্পে কী আছে, সেটা জানা নেই। তবে বৈদেশিক ঋণ নিয়ে এ প্রকল্প করা হচ্ছে। তাই প্রকল্পে যে অর্থ রাখা হয়েছে, সেটার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ এটা জনগণের টাকা।’
বিশ্বব্যাংক ও ইফাদের লক্ষ্যমাত্রা ১০টি
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রাকিবুজ্জামান খান বলেন, ‘এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক এবং ইফাদ ঋণ দিচ্ছে। তারা ১০টি লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছে। তারা ফলাফল দেখেই অর্থছাড় করবে। তাই এই প্রকল্পটি অনেক চ্যালেঞ্জিং। তবে এই প্রকল্পের কোনো খাতের ব্যয়ই এখনও চূড়ান্ত হয়নি। অধিকাংশ খাতেই ব্যয় সংযোজন বিয়োজন হবে।’
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য এ কে এম ফজলুল হক বলেন, ‘আপনি যে বিষয়গুলো বলছেন, সেগুলো নিয়ে আমাদেরও প্রশ্ন ছিল। আমরা ডিপিপি সংশোধন করে পাঠানোর জন্য বলেছি। অনেক খাতে ব্যয় কমাতে বলেছি।’
প্রস্তাবনায় বলা হয়, এ প্রকল্প সম্পন্ন হলে দেশের কৃষি খাতে যান্ত্রিকায়ন, বৈচিত্র্যকরণ ও সমন্বিত মূল্যচক্র যোগ হওয়ার মাধ্যমে ‘বৈপ্লবিক’ পরিবর্তন আসবে, যা পরিবেশগতভাবে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে বড় অবদান রাখবে। প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ লাখ হেক্টর ফল ও সবজি চাষের জমিকে গ্যাপ সার্টিফিকেশনের আওতায় আনা হবে।
ফলনের ঘাটতি পূরণে উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত চাষে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া হবে। সমাপ্তিকাল নাগাদ ২ লাখ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের প্রচলন চালুর লক্ষ্য রয়েছে। প্রকল্পে ধান ছাড়া অন্যান্য দানাদার শস্য, ডাল, তৈলবীজ ও উদ্যান কৃষির মাধ্যমে ফসলে বৈচিত্র্য আনা হবে। সমাপ্তিকাল নাগাদ ২ লাখ হেক্টর অ-ধানি জমিকে এর আওতায় আনার লক্ষ্য রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ হেক্টর আবাদি জমি নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে ‘কৃষাণ স্মার্ট কার্ড’ বিতরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজিটাল কৃষি পরিষেবা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করা হবে। এর আওতায় ১০টি মানসম্মত পরীক্ষাগারে ২০ ধরনের পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। এতে বাংলাদেশের উদ্যান কৃষি ফসলের খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে যেসব শঙ্কা রয়েছে তাও নিরসনের লক্ষ্য থাকবে। এসব লক্ষ্য অর্জনে বাণিজ্যিক কৃষি, কৃষি ব্যবসা, কৃষি উদ্ভাবনমূলক কোম্পানি ও কৃষি সেবামূলক উদ্যোগ প্রতিষ্ঠার জন্য ২০ হাজার নারী-পুরুষকে কৃষি উদ্যোক্তামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
পর্যবেক্ষক-বিশেষজ্ঞদের অভিমত
প্রকল্পটির বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক কতটা লাভবান হবেন সেটাই বুঝলাম না। প্রকল্পে শত শত কোটি টাকার গাড়ি কেনা হবে। বৈদেশিক প্রশিক্ষণে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা যাবেন, দীক্ষা নেবেন, পিএইচডি করবেন। তাতে কৃষক কি লাভবান হবেন? প্রকল্পের পুরো প্রস্তাবনাই প্রশ্নসাপেক্ষ। প্রকল্পের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, কর্মসূচিও সেই অনুযায়ী হওয়া উচিত; যাতে কৃষির উৎপাদন বাড়ে, কৃষক সহায়তা পায়।’
প্রকল্পটিতে অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাবনার বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘আমার কাছে আসার আগেই প্রকল্পের প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা যাচাই-বাছাই করে থাকেন। কোনো ক্ষেত্রে অযৌক্তিকতা দেখলে তারা সংশোধন করতে বলেন। আমার কাছে যখন প্রস্তাবনা আসে তখন একেবারে চূড়ান্ত হয়ে আসে। এটি এখনও আমার কাছে আসেনি। এলে বলতে পারব।’
প্রকল্পে অসহায়ক ব্যয় কেন প্রস্তাব করা হয়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেন বেশি ব্যয়ের প্রস্তাব দেয় সেটা তো বলা মুশকিল। সেটা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ই বলতে পারবে।’