× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

এই ঐতিহাসিক দিনটি কেবল আমাদের জন্যই তৈরি হয়েছে

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৩ ১০:২৮ এএম

আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৩ ১১:৪২ এএম

দেশবরেণ্য লেখক-শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবী সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

দেশবরেণ্য লেখক-শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবী সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম দেশবরেণ্য লেখক-শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবী। ১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে। বিবিসি’র এক সাংবাদিককে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ অনুবাদ করে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তার ওপর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে অবসরে যাওয়ার পর বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে অধ্যাপনা করছেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের সেদিনের স্মৃতি তিনি জানিয়েছেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফারুক আহমাদ আরিফ। 


প্রতিদিনের বাংলাদেশ : বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি আপনি তাৎক্ষণিকভাবে একজন বিদেশি সাংবাদিককে ইংরেজিতে অনুবাদ করে দিয়েছিলেন। সেদিনের এই ঘটনার প্রেক্ষাপট কী ছিল? 

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : বিবিসি রেডিওর একজন সাংবাদিক এসেছিলেন ইংল্যান্ড থেকে। তিনি বাংলা বুঝতেন না। দুপুর ১২টা বা ১টার সময় কোনো একজন ছাত্র এসে খবর দিল, টিএসসিতে কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিক এসেছেন। তারা দোভাষী খুঁজছেন, যিনি বঙ্গবন্ধুর সেদিনের ভাষণটি ইংরেজি করে দিতে পারবেন। তখন আমি গেলাম। সাংবাদিকের সঙ্গে কথা হলো। আমরা বর্তমান সূর্যসেন হল, তৎকালীন জিন্নাহ হলে থাকতাম। সকাল থেকেই এক ধরনের চাপা উত্তেজনা ছিল, বিকেলে বঙ্গবন্ধু ভাষণে কী বলবেন। 

দুপুরে খাবার খেয়ে একটু আগেই চলে গেলাম। তখন বিবিসির সাংবাদিক আমাকে মঞ্চের পাশে তাদের জন্য নির্ধারিত জায়গায় নিয়ে গেলেন। এটি মঞ্চের প্রায় কাছাকাছিই ছিল। বঙ্গবন্ধুকে খুব কাছ থেকে দেখলাম। তার ভাষণটি তাৎক্ষণিকভাবে ইংরেজি করে-করে দিচ্ছিলাম ওই সাংবাদিককে। এক মিনিটও যায়নি, তিনি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, তুমি ভাষণটি শোন ও সংক্ষেপে লেখো; যাতে পরে পুরোটা বুঝতে পারো। তখন তাই করলাম। আমি ভাষণটি শুনি। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের অসাধারণ একটি আকর্ষণ ছিল; তিনি উঠে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই সেটি প্রকাশ পেল। প্রথমে কথায় কিছুটা বিষণ্নতা ছিল। তিনি অসুস্থ ছিলেন বলে মনে হয়েছিল। পরে শুনলাম তার জ্বর হয়েছিল। তিনি স্বভাবসিদ্ধভাবে বক্তৃতা দিতে শুরু করলেন। দেখলাম সাংবাদিক খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। যদিও তার বোঝার কথা নয়। অঙ্গভঙ্গি দেখছেন। ভাষণে ইংরেজি কম ছিল। ‘কি অপরাধ করেছি আমরা? আর যদি একটা গুলি চলে, দাবায়ে রাখতে পারবা না’Ñবাংলাতে তার টান ছিল।

প্রবা : মানে আঞ্চলিকতা?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : হ্যাঁ, মাঝে মাঝে প্রমিত বাংলা ছিল। আমি মুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম। দেখলাম বঙ্গবন্ধু থেকে মুখটা-চোখটা নামাতে পারছি না। আমি বাংলাতে লিখছি, ইংরেজিতে লিখছি। পরে দেখি ভাষণটি শেষ হয়ে গেল। এত ছোট একটি ভাষণ! তিনি মনে হয় এর আগে এত ছোট ভাষণ কখনও দেননি। এত কম্প্যাক্ট, যাকে বলে ঘনবদ্ধ ভাষণ। যার ভেতরে সবকিছু আছে। এখন তো সবাই সেটি নিয়ে কথা বলছেন। ভাষা নিয়ে, কাঠামো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। 

কয়েকটি পার্টও ছিল ভাষণে। প্রথমে তিনি আমাদের অবস্থানটা বর্ণনা করলেন। পরে তাঁর দাবিগুলো একটা একটা করে বললেন। তাদের কারণে আমাদের জন্য যে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে, তা তুলে ধরলেন। একদম শেষে আমাদের করণীয়গুলো বলে দিলেন। ‘খাজনা দেবে না। ট্যাক্স দেবে না। অমুক চলবে, এটা চলবে।’ তার গলা ছিল অত্যন্ত উঁচু; মনে হলো তিনিই সবকিছু শাসন করছেন। 

প্রবা : তার মানে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : না, তিনি তো নিজেকে রাষ্ট্রপ্রধান মনে করতেন না। কথা বলতেন গণমানুষের নেতা হিসেবে। রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার ব্যাপারে তার কোনো আগ্রহ ছিল বলে আমার মনে হয় না। যোদ্ধা ছিলেন সেই অর্থে। আর একটা সুবিধা ছিল, প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবি ছিল তাঁর। 

প্রবা : তিনি তো নিয়মতান্ত্রিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী হন?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : না, তাকে ডিনাই করা হয়েছিল। ডিনাই করেছিল বলেই তো আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে যেতে পারলাম। ভাষণ শেষে বিবিসির সাংবাদিককে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় গিয়ে বসলাম। যখন তার সঙ্গে কথা বলছি, তখন তিনি বললেন, বঙ্গবন্ধু কী বলেছেন তা আমি বুঝতে পেরেছি। আশ্চর্য হলাম। তার বোঝার কথা নয়। কেননা তিনি বাংলা জানেন না। তাকে বললাম, তুমি কী বুঝলে? যা বুঝলে তা থেকে আমাকে তিনটি পয়েন্ট দাও, যা থেকে হেডলাইন করা যাবে। তখন তিনি যা বললেন, তাতে দেখলাম তিনি যা বললেন, তা বক্তৃতার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। পরে মনে হয়েছিল, তিনি অঙ্গভঙ্গি থেকে বুঝেছেন। 

সাতই মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতাকে মোটামুটি হাতের কাছে নিয়ে এলেন। সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন না যে, কালকে থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বিবিসির সাংবাদিকও বললেন, ‘এটি করলে তার সমস্যা হতো। কেননা একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল মেনে নেবে না। তোমার নেতা খুবই ইন্টেলিজেন্ট। তিনি জানেন একপাক্ষিক ঘোষণা দিলে পৃথিবী নাও মেনে নিতে পারে। তখন তিনি কোথায় যাবেন? তিনি বরং বলটা পাকিস্তানিদের কোর্টে ছেড়ে দিয়েছেন।’ এই কথাগুলো আমার খুব মনে দাগ কেটেছিল। তার সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলছিলাম। তিনি বললেন, বঙ্গবন্ধু যা বলেছেন, তা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হবে এ জন্য যে, তিনি সাংবিধানিকভাবে কথা বলেছেন, সাংবিধানিকভাবে দেখিয়ে দিয়েছেন তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে তা গণতন্ত্রের মধ্যে পড়ে না। ওই মিটিংয়ে সাংবাদিক দেখলেন, কেউ বন্দুক নিয়ে আসেননি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু বলেছেন, ‘যার যা আছে’; তিনি বলেননি, বন্দুক তুলে নাও। আমি তাকে বললাম, ‘বঙ্গবন্ধু বলেছেন যার যা আছে তাই নিয়ে দুর্গ গড়ে তোলো।’ তখন সাংবাদিক বলেছিলেন, ‘দুর্গ মানে যুদ্ধের দুর্গ বা চিন্তার দুর্গ বা চিন্তার প্রতীক হতে পারে।’ যার যা আছে বলতে একজন সাংবাদিক, ছাত্র তার কলম নিয়ে প্রস্তুত থাকবে। একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ তার রিভলভার নিয়ে প্রস্তুত থাকবে। একজন সেনাবাহিনীর সদস্য তার অস্ত্র, বন্দুক-কামান নিয়ে প্রস্তুত থাকবে। বঙ্গবন্ধু সেই জনযুদ্ধের ডাক দিলেন। তিনি যে ঘোষণা দিলেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রামÑপ্রকারান্তরে স্বাধীনতারই ডাক দিলেন। আবার পাকিস্তানিদের শেষ সুযোগ দিলেন। সেদিন পাকিস্তান রেডিও ও টেলিভিশন ভাষণটি প্রচার করেনি। রেডিও-টেলিভিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্ট্রাইক করেছেন, ভাষণ না শোনালে তারা কাজ করবেন না। একদিন তো ১২টা পর্যন্ত জাতীয় সংগীত না বাজিয়ে বুঝিয়ে দেয়, তোমাদের জাতীয় সংগীত এখানে বাজবে না। এটা কল্পনা করা যায়? কয়টা মানুষ? বাঙালির হাতে তো কোনো অস্ত্র ছিল না। এখন দুঃখ লাগে, আমরা সব হারিয়ে ফেলেছি।

তখন তো নিরীহ ছাত্রটাও একজন রাজনৈতিক কর্মী। আমার দুঃখ হচ্ছে, আমি যে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী, সেই মুহূর্তটিকে একেবারে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। 

প্রবা : সেদিনের পারিপার্শ্বিক অবস্থা কেমন ছিল? পাকিস্তানের পুলিশ বা অন্যদের কী অবস্থা ছিল? বাঙালিদের অবস্থাইবা কেমন ছিল?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : এ নিয়ে সেলিনা হোসেন ‘৭ মার্চের বিকেল’ নামে একটি উপন্যাস লিখেছেন। বর্তমানে যেখানে বইমেলা হয়, তারা সেদিন সেখানে ছিলেন বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে। সেলিনা আপা সেদিন আমাকে তার বাসায় সন্ধ্যায় যেতে বলেছিলেন। গেলাম। প্রায় সময়ই তার বাসায় সন্ধ্যায় গিয়ে খেয়েদেয়ে চলে আসতাম। সেদিনও বলেছিলাম, একটু আগে আগে চলে যাব। কিন্তু কীসের আগে-আগে! মহল্লার লোকজন চলে এলো, বঙ্গবন্ধু কী বলছেন তা শুনতে। আমি দেখেছি সাধারণ মানুষের মধ্যে কী প্রচণ্ড উত্তেজনা ছিল। প্রতিটি মানুষের প্রচুর আগ্রহ ছিল, কৌতূহল ছিল। সেসময়ের পারিপার্শ্বিক অবস্থা হচ্ছে, পুরো মার্চ মাস ধরে সর্বক্ষণ মিছিল-মিটিং চলেছে। কলাভবনের সামনে মানুষ আসছে। বক্তব্য শুনছে, চলে যাচ্ছে, আবার আসছে। জনসভা দেখেই মনে হতো কিছু একটা হতে যাচ্ছে। কিন্তু কী হতে যাচ্ছে, তা হয়তো বোঝা যাচ্ছে না। আমরা সেই মুহূর্তটাকে আর তৈরি করতে পারব না। আমার খুব দুঃখ লাগে, যখন দেখি সেই মুহূর্তটাকে ইতিহাস থেকে ভুলিয়ে দেওয়ার কাজ হয়েছে, মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। 

প্রবা : আপনার মতে, এই ভাষণের বিশেষত্ব কী বা ঐতিহাসিক গুরুত্ব কী।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : ৭ মার্চে পুরো বাংলাদেশ এক হয়ে গিয়েছিল। কোনো দ্বিধা ছিল না, দ্বন্দ্ব ছিল না। এই ঐতিহাসিক দিনটি, এই ঐতিহাসিক ভাষণটি যেন পৃথিবীর ইতিহাসে কেবল আমাদের জন্যই তৈরি হয়েছে। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা এত বীভৎস কাজ করবে কেউ কিন্তু ভাবতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুও ভাবতে পারেননি। কেননা প্রতিনিয়ত ইয়াইয়া ও ভুট্টোর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। তারা তার সঙ্গে মধুর ব্যবহার করেছে। পরে সায়মন ড্রিংসের সঙ্গে আমার কথা হয়। তিনিও বলেন, তারাও এরকম কিছু ভাবতে পারেননি। ভাবতে পারেননি, এতটা বীভৎস হবে পাকিস্তানিরা।

প্রবা : অনেকেই এই ভাষণকে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার প্রত্যক্ষ আহ্বান বলে মনে করেন। আপনার মন্তব্য কী?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু কতকগুলো নির্দেশ দিয়েছিলেন। ‘তোমাদের যার যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত হও।’ মানুষ তৈরি হয়েছে। অনেকেই ৭ মার্চেই তৈরি হয়ে গিয়েছিল। সিলেট আওয়ামী লীগের তৎকালীন এক নেতা আমাকে বলেছিলেন, ৭ মার্চের ভাষণই তাকে তৈরি করে দিয়েছে। অনেকেই দূরে থাকার কারণে বুঝতে পারেননি। তখন তো এত প্রযুক্তি ছিল না। গ্রামের মানুষ শুনে শুনে প্রস্তুত হয়েছে। কোনো যোগাযোগ ছিল না। অসংখ্য মানুষ ঘটনাপ্রবাহ জানত না। যখন জেনেছে, তখন তারা প্রস্তুত হয়েছে। তাই সেই সুবর্ণ সময়টি নিয়ে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা উচিত নয়। ইতিহাসে এ নিয়ে কোনো দ্বন্দ্ব থাকা উচিত হবে না। 

প্রবা : ভাষণে বঙ্গবন্ধু প্রথমে স্বাধীনতা ও পরে মুক্তির কথা বলেছেন। সেই মুক্তি কতটা এলো?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : মুক্তি কথাটা অনেক ব্যাপক। রাজনৈতিক স্বাধীনতা, সেটা আমরা পেয়েছি। ১৬ ডিসেম্বর পতাকা ওড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমরা স্বাধীনতা পেয়ে গেছি। অর্থনৈতিক মুক্তি বলতে বোঝায়, প্রতিটি গরিব মানুষ যতক্ষণ পর্যন্ত সচ্ছল না হবে। কোভিডের আগে আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি একটু ভালোর দিকে যাচ্ছিল। বিশ্বের সবাই সমীহ করতে শুরু করেছিল। এখন তো ভারতকে সবাই সমীহ করছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি তাকে কিছু বলতে পারছে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কারণে? পারছে না। কারণ ভারত একটি জায়গায় চলে গেছে। তারা এখন ইকোনমিক জায়ান্ট। অর্থনৈতিকভাবে আমরা শক্তিশালী হতে পারিনি, সেজন্য মুক্তিটা আসবে দেরিতে। সাংস্কৃতিক মুক্তি হচ্ছে মনের জানালাটা খুলে যাওয়া। শিক্ষা তখন আমাদের আলোকিত করবে। শিশুরা-নারীরা নিরাপদ থাকবে। মেয়েদের প্রতিটি মানুষ সম্মান দেখাবে। ব্যক্তিগত, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা থাকবে। তখনই বুঝতে পারব আমরা সত্যিকারের মুক্তি পেয়েছি। এটা বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন বলেই স্বাধীনতার সংগ্রাম আগে বলেছেন। মুক্তির সংগ্রাম পরে এনেছেন। শুধু স্বাধীন হলেই চলে না, মুক্তির সংগ্রামও থাকতে হয়Ñএটা ছিল তার চিন্তা। 

প্রবা : ৭ মার্চ নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : যারা বাংলাদেশে রাজনীতি করবেন, তাদের ৭ মার্চকে, একাত্তরকে ধারণ ও লালন করতে হবে। একাত্তর নিয়ে কোনো বিভক্তি ঠিক নয়। ৭ মার্চের দিনটি আমার জন্য স্মরণীয় একটি দিন। আমি ইতিহাসের সাক্ষী ছিলাম। অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে পারিনি, সেটি আমাকে দুঃখ দেয়। তবে আমার যে বন্ধুরা যুদ্ধ করেছে, তাদের জন্য গর্ববোধ করি। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে যুদ্ধে যেতে পারিনি। আর এত দ্রুত দেশ যে স্বাধীন হয়ে যাবে, আমরা কেউ তা ভাবতে পারিনি। ভাবতে পারলে হয়তো সব বাদ দিয়ে যুদ্ধে চলে যেতাম। ৭ মার্চকে যেন বিকৃত করা না হয়। এ দিনটিকে যেন সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে সবাই এক হয়ে গ্রহণ ও লালন করে নিজেরা বরং সমৃদ্ধ হতে পারি। 

প্রবা : আমাদের সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম : আপনাদেরও ধন্যবাদ।


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা