× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

খুঁড়িয়ে চলছে বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরী

শেখ সোহেল, বাগেরহাট

প্রকাশ : ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:৪৩ এএম

বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরীর মূল ফটক। প্রবা ফটো

বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরীর মূল ফটক। প্রবা ফটো

অবকাঠামো ও নিরাপত্তার অভাবসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত বাগেরহাটের বিসিক শিল্পনগরী। প্রতিষ্ঠার দুই যুগ পার হলেও সেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তায় ড্রেনের পানি জমে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এর সঙ্গে রয়েছে বিদ্যুৎ ও পানির সংকট। 

তবে বিসিক কর্তৃপক্ষ বলছে, বিসিকে সুপেয় পানি নিশ্চিত করতে ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সাবমারসিবল পাম্প বসানোর জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ইতোমধ্যে বিসিকের গেট ও একটি রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব অন্যান্য সমস্যার সমাধান করে বিসিক শিল্পনগরীকে ব্যবসাবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলা হবে।

শিল্প-উদ্যোক্তা সৃষ্টির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ১৯৯৬ সালে বাগেরহাট শহরের ভৈরব নদের পাশে প্রায় ২১ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয়। এ শিল্পনগরীতে ১২৩টি প্লটের সবকটিই বরাদ্দ নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থার জন্য রয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ উপ-বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে নারিকেল তেল, অটো রাইস ও ফ্লোয়ার, সরিষা, ডাল মিল, ইজিবাইক সেটিংস, পুরাতন প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাতকরণ, কোকোনাট ফাইবার মিলস অন্যতম।

বিসিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর ১৯৯৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জমির লিজ বাবদ তারা বিসিক থেকে ২ কোটি ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় করেছেন। এ সময়ে সার্ভিস চার্জ, পানির বিল ও ভূমি কর বাবদ আয় হয়েছে ১ কোটি ৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২০১৭ সালে শিল্পনগরীতে থাকা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ, ভূমি উন্নয়ন কর ও পানির বিল বাবদ আয় ২০ লাখ ৫ হাজার টাকা, একই খাত থেকে ২০১৮ সালে ৭ লাখ ১৭ হাজার, ২০১৯ সালে ১০ লাখ ৬৯ হাজার, ২০২০ সালে ১০ লাখ ৪ হাজার, ২০২১ সালে ১৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা।

কোনো বছর বেশি আয়, আবার কোনো বছর কমের কারণ হিসেবে বকেয়া বিলের কথা উল্লেখ করেন বিসিকের উপব্যবস্থাপক। অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের স্বার্থে বিসিকের অবকাঠামো খাতে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৬ লাখ টাকা, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৯৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকা এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ টাকা। 

২০১৯-২০ সালের বরাদ্দকৃত প্রায় এক কোটি টাকার মধ্যে ৩৫ লাখ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয় পানি সমস্যা নিরসনের জন্য। তবে এখন পর্যন্ত তিনবার মাটি পরীক্ষা করলেও জায়গা নির্বাচন বা কাজ শুরু করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

সেখানকার নারী শ্রমিক মর্জিনা বেগম বলেন, রাস্তা খারাপ হওয়ায় হেঁটে যাতায়াত করা কঠিন। আবার বৃষ্টির সময় পানিতে তলিয়ে যায়। এ কারণে বেশি ভাড়া দিয়ে বাধ্য হয়ে রিকশা বা অটো গাড়িতে চড়তে হয়। 

বিসিকে কর্মরত একাধিক শ্রমিক বলেন, বিসিকে সুপেয় পানির কোনো ব্যবস্থা নেই বললে চলে। আর বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি খেতে পারলেও গরমের সময় আমাদের পানি কিনে খেতে হয়। রান্না ও গোসলের জন্য পানির ব্যবস্থা করতে হয় বাইরে থেকে। যে বেতন পাই, তা দিয়ে কোনোরকমে সংসার চলে। 

শিল্পনগরীতে অবস্থিত কোকোনাট অয়েল মিলের মালিক আল আমিন হাজী বলেন, সরকারকে ঠিকমতো ভ্যাট-ট্যাক্স দিলেও শিল্পবান্ধব কোনো পরিবেশ নেই বাগেরহাট বিসিকে। একটু বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে যায়। ড্রেন থেকে পানি যেতে পারে না। ফলে পানি উপচে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট।

বাগেরহাট বিসিক শিল্পনগরী মালিক সমিতির সভাপতি শিব পদ বিশ্বাস বলেন, একসময় বিসিকে ২৪ ঘণ্টা তিন শিফটে চলত বেশিরভাগ মিল। শ্রমিকদের একটুও দম ফেলার সময় ছিল না। অনেক দূর থেকে শোনা যেত মেশিন চলার শব্দ। সেই দিন এখন অতীত। দেড় যুগের ব্যবধানে শিল্পনগরীর প্রতিষ্ঠান সংখ্যা ৫৭ থেকে ৩৭-এ নেমে এসেছে। শ্রমিকসংখ্যা নেমে এসেছে দেড় হাজার থেকে ৭০০-তে।

বিসিক বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের উপব্যবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত) শরীফ সরদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিসিকের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বেশ বরাদ্দ রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা বিসিকের গেট ও একটি রাস্তার নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছি।’

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘এ শিল্পনগরীর বর্তমান সীমাবদ্ধতা নিরসনে জরুরি সমন্বিত সভা আহ্বান করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সব সমস্যার সমাধান হবে। সম্ভবনাময় এ শিল্পনগরীতে উদ্যোক্তাবান্ধব পরিবেশ ফিরে আসবে।’


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা