অবৈধভাবে গ্রিন টিভি বিক্রিরও চেষ্টা চালাচ্ছেন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:০২ এএম
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪৫ পিএম
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদের সঙ্গে সৈয়দ গোলাম দস্তগীর নিশাদ (নিশাদ দস্তগীর)। ছবি : সংগৃহীত
সৈয়দ গোলাম দস্তগীর নিশাদ এক বহুরূপী প্রতারকের নাম। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক তথ্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এই দালাল, দুর্নীতিবাজ সরকার পতনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে পাল্টে ফেলেছেন। এখন তিনি যুক্তরাজ্য বিএনপির একসময়ের মুখপাত্র হিসেবে নিজেকে দাবি করে বিএনপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছেন এবং আবারও নানা অপকর্ম শুরু করেছেন।
নিশাদ দস্তগীর হিসেবে পরিচিত এই ব্যক্তি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এহেন দুর্নীতি নেই যা করেননি। ওবায়দুল কাদের এবং হাছান মাহমুদের অন্যতম ক্যাশিয়ার হিসেবে সর্বত্র তার পরিচিতি ছিল। টাকা পাচার করেছেন যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে। সচিবালয়ে তদবির বাণিজ্য করতে তিনি সুন্দরী মেয়েদেরও সঙ্গে রাখতেন। তাদেরকে দিয়ে প্রভাবশালীদের বাগে আনতেন। আওয়ামী লীগ আমলে এমন কোনো মন্ত্রণালয় নেই যেখানে তার বিচরণ এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি ছিল না। তদবির বাণিজ্যে পটু নিশাদ নিজেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনেরও ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দিতেন এবং সবসময় নিজের মোবাইলে রাষ্ট্রপতিসহ বিগত সরকারের প্রভাবশালীদের ছবি রাখতেন। এ বিষয়ে আমরা রিপোর্ট প্রকাশ করব পরবর্তী পর্বে। যুক্তরাজ্যেও বিস্তৃত রয়েছে নিশাদের প্রতারণার জাল। সেটা নিয়েও পরবর্তীতে সিরিজ রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম সুবিধাভোগী এবং দালাল নিশাদ দস্তগীর গ্রিন টিভি নামে একটি টেলিভিশনেরও লাইসেন্স নেন ওই সময়। সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ না হলে কেউ সে সময় টেলিভিশনের লাইসেন্স পেতেন না। এতেই প্রমাণ হয় নিশাদ আওয়ামী লীগ সরকারের কত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। গ্রিন টিভির লাইসেন্সটি তিনি ইতোমধ্যে রংধনু গ্রুপের কাছে বিক্রি করেছেন। টেলিভিশনটি চালুর জন্য রংধনু গ্রুপ প্রয়োজনীয় বিনিয়োগসহ যাবতীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করে। একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সম্প্রচারও শুরু হয়। এর মধ্যে ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদসহ আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালীদের দাপট দেখিয়ে আরেক কাণ্ড করে বসেন নিশাদ দস্তগীর। জোরপূর্বক তিনি সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে যমুনা ফিউচার পার্ক কম্পাউন্ডের রংধনু করপোরেটে অবস্থিত গ্রিন টিভির কার্যালয় থেকে ২০-২৫ কোটি টাকার বেশকিছু যন্ত্রপাতি ও ক্যামেরা নিয়ে চলে যান। বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে রংধনু গ্রুপের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক পটপরিবর্তনের পর নিশাদ এখন বিএনপির ঘাড়ে সওয়ার হয়ে নতুন প্রতারণা শুরু করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিশাদ দস্তগীর এখন আবার গ্রীন টিভি বিক্রি করার জন্য নানাজনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। রংধনু গ্রুপের পক্ষ থেকে নিশাদ মজুমদারের প্রতারণার খপ্পরে না পড়ার জন্য সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলা হয়েছে, গ্রীন টিভির মালিকানার সিংহভাগ এখনও রংধনু গ্রুপের কাছে রয়েছে। প্রতারকের খপ্পরে পড়ে কেউ এই টেলিভিশন কিনতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতি কিংবা মামলার মুখে পড়লে তার দায়দায়িত্ব রংধনু গ্রুপ নেবে না।