× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

যেভাবে মহাবিশ্বের অতীত দেখাবে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ

মিরাজ শাওন

প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৩ ২০:৪৯ পিএম

আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৩ ২১:৫৫ পিএম

জেমস ওয়েবের পাঠানো এনজিসি ৪৪১৪ ছায়াপথের দৃশ্য। ছবি : সংগৃহীত

জেমস ওয়েবের পাঠানো এনজিসি ৪৪১৪ ছায়াপথের দৃশ্য। ছবি : সংগৃহীত

মহাকাশে ৩৩ বছর কাটানোর পর জীবনের শেষপ্রান্তে চলে এসেছে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ। বুড়ো হাবলের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে মহাকাশ সম্পর্কে নিত্য-নতুন তথ্য দিয়ে, ছবি পাঠিয়ে বিশ্ববাসীর মন জয় করে নিয়েছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।

হাবলের চাইতে ১০০ গুণ বেশি শক্তিশালী এই টেলিস্কোপ তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার। সময় লেগেছে ২৫ বছর! ২০২১ সালের ২৫ ডিসেম্বর উৎক্ষেপণ করা সর্বশেষ প্রযুক্তির টেলিস্কোপটি ৩০ দিনে প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তার নির্ধারিত গন্তব্যে অবস্থান নিয়েছে। 

ভূপৃষ্ঠ থেকে এত দূরে অবস্থান করে মহাবিশ্ব সৃষ্টির আদিম অবস্থা থেকে শুরু করে নক্ষত্রদের খসে পড়া, নতুন নক্ষত্র ও নীহারিকার জন্ম ইত্যাদির উপাদান সংগ্রহ করছে জেমস ওয়েব। ইতোমধ্যে টেলিস্কোপটির ছবিতে মুগ্ধ হয়েছে সারা বিশ্বের মানুষ। 

ধূমকেতু, গ্রহাণু ও বিভিন্ন গ্রহের কক্ষপথের বাইরের অপেক্ষাকৃত ছোট গ্রহ সম্পর্কেও নানা তথ্য জানাবে টেলিস্কোপটি। 

প্রতিফলিত আলোকরশ্মি যখন আমাদের চোখে এসে পড়ে, কেবল তখনই আমরা কোনো বস্তুকে দেখতে পাই। ঠিক সেভাবেই প্রতিফলিত আলোকে ব্যবহার করে অতীতের চিত্র দেখাবে এই টেলিস্কোপ।

দূরবর্তী ছায়াপথ থেকে আসা অবলোহিত আলোকরশ্মিগুলো কেবল অতীত সম্পর্কে তথ্য দেয়। তবে তা আক্ষরিক অর্থে অতিবাহিত হয়ে যাওয়া সময়ের দিকে তাকায় না। 

অবলোহিত আলোকরশ্মিগুলো লাখ লাখ বছর ধরে মহাশূন্যে নিরবচ্ছিন্নভাবে ভ্রমণ করছে। কারণ মহাবিশ্বের বেশিরভাগ স্থানই ফাঁকা। এই সুযোগে বাধাপ্রাপ্ত না হয়ে নির্বিঘ্নে ছুটে চলছে আলোকরশ্মিগুলো। 

‘এনজিসি ৪৪১৪’ নামের একটা ছায়াপথ রয়েছে, যেটা পৃথিবী থেকে ৬ কোটি ২০ লাখ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। অর্থাৎ এই ছায়াপথ থেকে পৃথিবীতে আলো এসে পৌঁছতে সেই আলোকরশ্মিকে ৬ কোটি ২০ লাখ আলোকবর্ষ পাড়ি দিতে হয়েছে। জেমস ওয়েব যেহেতু এনজিসি ৪৪১৪-এর ইমেজ পাঠাচ্ছে, এত পুরোনো ছায়াপথটি কেমন তা আমরা ২০২২ সালে দেখতে পেয়েছি। 

মহাকাশ সম্পর্কিত যাদের জ্ঞান একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে, তাদের জেনে রাখা ভালো, অবলোহিত আলোকরশ্মির বর্তমান সময়ের গঠন লাখ লাখ বছর আগে দূরবর্তী গ্যালাক্সি থেকে আসা সেই প্রথম তৈরি হওয়া আলোকরশ্মির গঠনের মতোই। তাই টেলিস্কোপে আসা অবলোহিত আলোকরশ্মির বর্তমান সময়ের অবস্থা দেখে ছায়াপথটি প্রাথমিক অবস্থায় কেমন ছিল সেটা সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়। 

একটা উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি আরও সহজভাবে বোঝানো যেতে পারে। ধরা যাক, একটি শিশুর ছবি তুলে তা মুদ্রণ করা হলো। ১০ বছর পরে ছবিটি দেখানো হলো। মুদ্রিত ছবিটি দেখার মানে হলো রূপকভাবে আপনি সময়ের দিকে ফিরে তাকাচ্ছেন। দেখতে পাচ্ছেন ১০ বছর আগে শিশুটি দেখতে যেমন ছিল। কিন্তু আপনি আক্ষরিক অর্থে অতীতের দিকে তাকাচ্ছেন না। কিন্তু শিশুটি আর শিশু নেই। মহাবিশ্বের কোথাও শিশু হিসেবে তার অস্তিত্ব নেই। বরং আপনি বর্তমানে বসে আলোর একটা গঠন ছবি আকারে দেখতে পাচ্ছেন, যা আলোর প্রতিফলনের মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল। গত ১০ বছরে আলোর এই গঠনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফলে ১০ বছর ধরে মুদ্রিত ছবিতে আলোকরশ্মির গঠন একই রয়েছে। 

ঠিক সেভাবে বহু দূর থেকে আসা অবলোহিত আলোকরশ্মি সেই সময়ের চিত্র দেখাবে, যখন সেই আলো সৃষ্টি হয়েছিল। বহু দূর থেকে আসা আলো যখন টেলিস্কোপে প্রতিফলিত হবে, তা পর্যবেক্ষণ করে আলোর সৃষ্টির সময়টি দেখা যাবে। যদিও আলোর বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ, তারপরও কোনো মাধ্যমে আলো বাধাপ্রাপ্ত হলে অতীত চিত্রে পরিবর্তন আসবে। 

সূত্র : নাসা 


শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা