প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১২:০০ পিএম
আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০২৩ ১৮:৩৭ পিএম
শিল্পীর তুলিতে পেরুসেটাস কলোসাস। ছবি : সংগৃহীত
আজকের নীল তিমি দীর্ঘদিন ধরেই পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ওজনের
প্রাণী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু এক দশকের বেশি সময় আগে পেরুর রাজধানী লিমাতে
অবস্থিত ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়ামের খুঁজে পাওয়া জীবাশ্মের আলোকে এবার বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমরা এতদিন আসলে ভুলই জেনেছি।
এক দল জীবাশ্মবিদ ল্যাটিন আমেরিকার দেশ পেরুতে ‘পেরুসেটাস
কলোসাস’ নামের একটি
জলজ প্রাণীর জীবাশ্ম নিয়ে দীর্ঘ গবেষণা করেছেন। তারা এটিকে এনসিয়েন্ট হোয়েল (প্রাচীন
তিমি) হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এর দেওয়া বৈজ্ঞানিক নামটির অর্থ হলো ‘প্রকান্ড পেরুভিয়ান
তিমি’।
যদিও এই তিমিটির মাত্র ১৩টি কশেরুকা, চারটি পাঁজর ও নিতম্বের হাড়ই
কেবল পাওয়া গিয়েছিল। গবেষণা থেকে লব্ধ ফলে লম্বায় এটিকে নীল তিমির থেকে কম মনে হওয়ায়
শুরুতে এটিকে সবচেয়ে বড় প্রাণী হিসেবে ভাবা হয়নি। কিন্তু দীর্ঘ গবেষণায় বেরিয়ে আসে,
লম্বায় বেশি হলেও এর ওজনের ধারে কাছেও নীল তিমি নেই।
গবেষকরা বলছেন, এই প্রজাতির প্রাচীন তিমিটি ৩ থেকে ৪ কোটি বছর আগে ইওসিন যুগে সমুদ্র দাপিয়ে বেড়াত। এটি লম্বায় ছিল প্রায় ২০ মিটার (৬৬ ফুট) এবং এর ওজন ছিল ৩৪০ মেট্রিক টনের মতো। যা আজকের নীল তিমি বা এর আগে জানা বৃহত্তম ডাইনোসরের ওজনের থেকেও অনেক বেশি।
এখন পর্যন্ত জানা সবচেয়ে বেশি ওজনের নীল তিমিটি ১৯০ মেট্রিক টন। যদিও তা লম্বায় পেরুসেটাসের চেয়ে বেশি ছিল। এটি ৩৩.৫ মিটার (১১০ ফুট)। আর সবচেয়ে বড় ডাইনোসরটি আর্জেন্টানোসরাস।
লম্বা ঘাড়যুক্ত ও চার পায়ের তৃণভোজী প্রাণীটি ৯ কোটি ৫০ লাখ বছর আগে পৃথিবী দাপিয়ে
বেড়াত। এর ওজন ছিল ৭৬ টন।
পেরুসেটাস কলোসাস-সংক্রান্ত গবেষণাপত্রটি বুধবার (২ আগস্ট) বিজ্ঞান
জার্নাল ন্যাচারে প্রকাশিত হয়েছে। একই দিন থেকে লিমার ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়ামে
কশেরুকা ও বাকি হাড়গুলো প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে।
গবেষণাপত্রের সহলেখক ইতালির পিসা ইউনিভার্সিটির জীবাশ্মবিদ জিওভান্নি
বিয়ানুচ্চি বলেছেন, ‘এই প্রাণীটির প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো
এর মারাত্মক ওজন। আর এটি আমাদের দেখায়, বিবর্তন এমন প্রাণীও তৈরি করতে পারে, যা আমাদের
কল্পনার বাইরে যায়।’
সূত্র : আলজাজিরা