প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৩ ১৮:৩৭ পিএম
আপডেট : ১৮ মে ২০২৩ ১৫:২৫ পিএম
এর আগে ২০২০ সালেও বলা হয়েছিল, যেকোনো বছর ১.৫ ডিগ্রি সীমা ভেঙে যেতে পারে। ছবি : সংগৃহীত
মানবজাতির অস্তিত্ব হুমকিতে পড়তে পারে বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে। এমনটি দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন গবেষকরা। বিশ্ববাসীও এর গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০১৫ সালে প্যারিস
চুক্তির অধীনে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সীমাবদ্ধ
রাখার বিষয়েও সম্মত হয়েছিল। ফলে এর একটি প্রতীকী মূল্যও দাঁড়িয়ে গেছে, ১.৫ ডিগ্রির
সীমাটি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের আলোচনার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এবার গবেষকরা বলছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে প্যারিস চুক্তির এই তাপমাত্রা
বৃদ্ধির সীমা অতিক্রম করে ফেলতে পারে চলমান বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। ৬৬ শতাংশ শঙ্কা রয়েছে
২০২৭ সালের মধ্যেই এমনটি হতে পারে। তবে এরপরেও সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৈশ্বিক
উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণ করার সময় এখনও আছে।
এর আগে ২০২০ সালেও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, যেকোনো বছর এ সীমা ভেঙে যেতে পারে। তবে সে সময় বলেছিল, পাঁচ বছরের মধ্যে এ সীমা অতিক্রমের
শঙ্কা ২০ শতাংশেরও কম। গত বছর এটি বেড়ে হয়েছে ৫০ শতাংশ। আর চলতি বছরে এটি ৬৬ শতাংশে উন্নীত
হয়েছে।
টানা এক বা দুই দশক ধরে যদি প্রতিবছর ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি
তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, তবে দীর্ঘ তাপপ্রবাহ, আরও তীব্র ঝড় ও দাবানলের মতো ঘটনা বেশি
বেশি দেখা যাবে। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, আসন্ন তাপমাত্রার সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা স্থায়ী
হবে না। আর একবার অতিক্রম হওয়া মানে এই নয় যে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সীমাসংক্রান্ত প্যারিস
চুক্তি ভেঙে গেছে। তবে বিষয়টি যে বৈশ্বিক মনোবলে প্রভাব ফেলবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ দুটি। জ্বালানি তেলের ব্যবহার, সিএফসি ও
কার্বন নির্গমণের মতো মানবসৃষ্ট কারণ। অপরটি এল নিনোর মতো প্রাকৃতিক কারণ। যদিও তিন বছর ধরে লা নিনা ইভেন্ট চলছে, ফলে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এর প্রভাবে খুব একটা বাড়ছে না।
কিন্তু খুব শিগগিরই এল নিনো ইভেন্ট শুরু হবে। এর ফলে প্রশান্ত মহাসাগরের পৃষ্ঠে যে অতিরিক্ত
তাপ তৈরি হবে তা আগামী বছর বৈশ্বিক তাপমাত্রাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। যদিও এল নিনোর
সূত্রপাত ও এর মাত্রা সম্পর্কে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
এল নিনো ও লা নিনা কী?
দক্ষিণ আমেরিকার দুই দেশ পেরু ও ইকুয়েডরের উপকূল বরাবর প্রশান্ত মহাসাগরে কোনো কোনো
বছরের ডিসেম্বরে উষ্ণ সমুদ্রস্রোত উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়, যা এল নিনো হিসেবে
পরিচিত। বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে এর প্রভাব থাকে। লা নিনা হলো এল নিনোরই ঠিক বিপরীত।
এ সময় শীতল সমুদ্রস্রোত দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবাহিত হয়। যার ফলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া
ও অস্ট্রেলিয়াতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়।
সূত্র : বিবিসি