প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৪২ পিএম
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ১৫:১৫ পিএম
ত্বকে প্রতিস্থাপন উপযোগী গ্রাফাইনের তৈরি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। ছবি : সংগৃহীত
ইঁদুরের হৃৎপিণ্ডে লাগানো গ্রাফাইনের ট্যাটু
অস্বাভাবিক ধীরগতির হার্টরেটে বৈদ্যুতিক সিগন্যালের মাধ্যমে সঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে সহায়তা করে হৃদযন্ত্রের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে। আর ভবিষ্যতে
এই ট্যাটুই মানবদেহে পেসমেকার হিসেবে প্রতিস্থাপন করবে- এমনটাই বলছেন গবেষকরা।
২৫ মার্চ অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়ালসে এ সংক্রান্তপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে। শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির কার্ডিওভাসকুলার প্রকৌশলী ইগর এফিমভের মতে, বর্তমানে ধারণা পর্যায়ে থাকা ইলেকট্রনিক ডিভাইসটি মানুষের হৃৎপিণ্ডে স্থাপনের জন্য আরও ৫ বছরের পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হবে।
দীর্ঘদিন ধরেই মানবদেহে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রতিস্থাপনযোগ্য
ডিভাইস তৈরিতে কাজ করেছেন এফিমভ ও তার দল। তারাই মূলত গ্রাফাইন ট্যাটুর এই প্রকল্পে
কাজ করছেন। তাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো নরম ও স্পন্দিত টিস্যুর সঙ্গে শক্ত ও কঠিন ইলেকট্রনিক
ডিভাইস স্থাপন করা।
বর্তমানে হৃৎপিণ্ডের চিকিৎসার ক্ষেত্রে পেসমেকার
ব্যবহার করা হয়। যেখানে শিরার মাধ্যমে লম্বা তারের ইলেক্ট্রোড থ্রেড প্রবেশ করানো হয়।
প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ বার হৃৎস্পন্দন হওয়ায় ডিভাইসটি একসময় ভেঙে যায়। এর সমাধান হলো
হৃৎপিণ্ডের পেশিগুলোর নড়াচড়ার সঙ্গে সেটিও নড়বে। গ্রাফাইন ট্যাটুর মাধ্যমেই এর সমাধান
সম্ভব। কারণ গ্রাফাইন পারমাণবিকভাবে পাতলা।
অস্টিন অঙ্গরাজ্যের টেক্সাস ইউনিভার্সিটির বায়োমেডিক্যাল
প্রকৌশলী দিমিত্রি কিরিভ ২০২১ সালে সর্বপ্রথম ত্বকে প্রতিস্থাপনযোগ্য গ্রাফাইন ট্যাটু
তৈরি করেছিলেন। তবে কিরিভ এর আগে কখনও হৃৎযন্ত্রের টিস্যুতে গ্রাফাইন ট্যাটু প্রতিস্থাপন
করেননি। পরে এফিমভ তার সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রাফাইন টিস্যু হৃৎপিণ্ডে স্থাপন সংক্রান্ত
বিষয়ে কাজ করার প্রস্তাব দেন। পরে তারা ইঁদুরের হৃৎপিণ্ডে সফলতার সঙ্গে তা স্থাপন করে
কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পেয়েছেন।
পুরো বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মনে হলেও
তা এখন পুরোপুরি বাস্তব। ক্যালটেক পদার্থবিদ নাই-চ্যাং ইয়ের মতে, কার্বন পরমাণুর (গ্রাফাইন
প্যাটার্ন) একক স্তর বায়োমেডিকেল কাজে ব্যবহারের জন্য একটি আকর্ষণীয় উপাদান। এটি
খুবই নমনীয়, জৈব-সঙ্গতিপূর্ণ, স্বচ্ছ, পরিবাহী ও যান্ত্রিকভাবে শক্তিশালী।
সূত্র : সায়েন্স নিউজ