প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ১০:০৪ এএম
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৫৬ এএম
বাঁ থেকে রিড ওয়াইজম্যান, ভিক্টর গ্লোভার, জেরেমি হ্যানসন ও ক্রিস্টিনা হ্যামোক কোচ। ছবি : সংগৃহীত
সামনের বছরে আর্টেমিস মিশনে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি জমাবেন এমন চার নভোচারীর নাম প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা)। এদের মধ্যে
চন্দ্র মিশনে যাচ্ছেন প্রথম কোনো নারী, একজন কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি ও একজন কানাডীয় নভোচারী।
টেক্সাসের হিউস্টোনে সোমবার (৩ মার্চ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রিড ওয়াইজম্যান,
ভিক্টর গ্লোভার, ক্রিস্টিনা হ্যামক কোচ ও জেরমি হ্যানসেনকে ‘আর্টেমিস-২’ মিশনের ক্রু
হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
জনসন স্পেস সেন্টারের ডিরেক্টর ভ্যানেসা উইচ এক বিবৃতিতে বলেছেন,
‘৫০ বছরের বেশি
সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই ব্যক্তিরা চাঁদের আশপাশে উড়ে যাওয়া প্রথম মানুষ হতে
যাচ্ছেন। এ মিশনটি মানুষের গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানের পথ প্রশস্ত করবে এবং বৈজ্ঞানিক
আবিষ্কার, বাণিজ্যিক ও একাডেমিক অংশীদারির জন্য মহাকাশে নতুন সুযোগ উপস্থাপণ করবে।’
এ ছাড়া ভ্যানেসা এ চার নভোচারীকে মানব জাতির সেরা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
আর্টেমিস-২-এর উৎক্ষেপণের বছর হিসেবে ২০২৪-কে বেছে নেওয়া হয়েছে। বহুজাতিক
আর্টেমিস মিশনের উদ্দেশ্য চাঁদে দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতি হলেও, আর্টেমিস টুতে গমন করা
এ চার নভোচারী চাঁদের বুকে পা রাখবেন না।
এ মিশনে যোগ দেওয়াদের মধ্যে একমাত্র নারী নভোচারী ক্রিস্টিনা হ্যামোক
কোচ। যিনি মহাকাশ অভিযাত্রায় এর আগেও বেশ কয়েকবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন। এর আগে একজন
নারীর দ্বারা পরিচালিত একক স্পেস ফ্লাইটের রেকর্ড করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া প্রথম নারী
হিসেবে মহাকাশে হাঁটার (স্পেসওয়াক) অভিজ্ঞতাও তার রয়েছে।
আর্টেমিস-২ মিশনে যোগ দিতে যাচ্ছেন চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি জমাতে যাওয়া
প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি ভিক্টর গ্লোভার। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের সাবেক ফেলো।
২০২১-এ স্পেসএক্সের ক্রু-১ মিশনে তিনি যুক্ত ছিলেন।
রিড ওয়াইজম্যান হতে যাচ্ছেন আর্টেমিস-২ মিশনের কমান্ডার। যার রয়েছে
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) দীর্ঘদিন ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা।
টানা ১৬৫ দিন তিনি আইএসএসে কাটিয়েছেন। ১৩ ঘণ্টা স্পেস ওয়াকিংয়ের অভিজ্ঞতা তার রয়েছে।
এ ছাড়া মিশন স্পেশালিস্ট হিসেবে যাচ্ছেন কানাডার নাগরিক জেরেমি হ্যানসন। সাবেক এই কর্নেল ছিলেন কানাডীয় বিমানবাহিনীর একজন পাইলট। চাঁদের উদ্দেশে গমন করা প্রথম কোনো কানাডীয় হতে যাচ্ছেন তিনি।
২০২৫ সালের মধ্যে চাঁদে ফিরতে চায় নাসা। এবার সেখানে ঘুরে আসতে নয়,
স্থায়ীভাবে থাকতে চায় তারা। তার লক্ষ্যেই গত বছর ‘আর্টেমিস-১’ মনুষ্যবিহীন
মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করে নাসা।
২০২৪ সালে আর্টেমিস-২ মিশনও যদি সফল হয় তাহলে ২০২৫-এ আর্টেমিস ৩-এ
প্রথমবারের মতো এ মিশনে চাঁদের বুকে পা রাখবেন একজন নারী নভোচারী। এর আগে অ্যাপোলো
মিশনগুলোয় কোনো নারীকে পাঠানো হয়নি।
আগের চন্দ্রাভিযানের নামকরণ হয়েছিল গ্রিক চন্দ্রদেবতা অ্যাপোলোর
নামানুসারে।
এবার যেহেতু চাঁদে প্রথম নারীর পদচিহ্ন পড়তে যাচ্ছে, তাই অ্যাপোলোরই
যমজ বোন আর্টেমিসের নামে এ মিশনের নামকরণ করা হয়েছে।
১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো-১১ দিয়ে শুরু হওয়া পরবর্তী পাঁচটি মিশনে মোট ১০
জন নভোচারী চাঁদের বুকে হেঁটেছেন।
সূত্র : আলজাজিরা