প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:০৫ পিএম
আপডেট : ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ২২:৪১ পিএম
কুকুরের সঙ্গে শিশুদের মেলামেশা স্বভাবজাত। ছবি : সংগৃহীত
গ্রামে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, বিড়াল-কুকুর, গাছ-পালাবেষ্টিত পরিবেশে বাচ্চারা বেড়ে ওঠে। বেড়ে ওঠার চমৎকার ওই পরিবেশ শিশুদের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এ দাবি করা হয়েছে।
হার্ভার্ড ও ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবর্তনমূলক নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক র্যাচনা রেড্ডি শিশু ও কুকুরদের মধ্যে সম্প্রতি কিছু পরীক্ষা চালিয়েছেন। পরীক্ষায় দেখা গেছে, শিশুরা স্বভাবগতভাবেই পশু-পাখি বা কুকুরের সঙ্গে মিশতে চায়। তাদের ভাষা বা আকাঙ্ক্ষা না বুঝেও তাদের সহায়তা করতে চায়। অথচ বিনিময়ে তাদের থেকে কিছু আশা করে না শিশুরা। এই পরার্থপরতা শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
র্যাচনা রেড্ডি বলেন, ‘মানবশিশু মানুষের সমাজেই বড় হয়। তাই জন্মের পর থেকে মানুষের সঙ্গে মেশা তাদের স্বভাবজাত। বড় হতে হতে মানবশিশু চেষ্টা করে মানুষের মানসিক অবস্থা বুঝতে। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অন্য পশু-পাখির সঙ্গে মেশাও শিশুদের স্বভাবজাত। শৈশব থেকেই এই প্রবণতা তাদের মধ্যে সুপ্ত থাকে। সুযোগ পেলে শিশুরা তা চর্চা করে। পশু-পাখির দিকে এগিয়ে যায়।’ তবে কিছু শিশু পশু-পাখিকে ভয় পায় বলেও মনে করেন র্যাচনা রেড্ডি।
গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষের চারপাশে যেসব পশু-পাখি থাকে, তাদের মধ্যে কুকুর অন্যতম। সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ২৩ হাজার বছর আগেই কুকুর অন্য পশু-পাখি থেকে জেনেটিক্যালি আলাদা হয়ে যায়। কুকুর মনুষ্যসমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে। মানবসমাজের বিকাশে কুকুরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
র্যাচনা রেড্ডি মনে করেন, মানুষ যে কেন পশু-পাখি পোষ মানাতে শুরু করেছিল, তা বিশেষ রহস্যজনক। এটা নিয়ে বিভিন্ন মত আছে। আমাদের এই গবেষণাও সেই রহস্য বুঝতে কিছুটা সাহায্য করবে।
নিজের গবেষণার জন্য ৯৭টি শিশু ও তিনটি শিশুবান্ধব কুকুর বেছে নেন র্যাচনা রেড্ডি। গবেষণায় অংশ নেওয়া শিশুদের বয়স ২২ থেকে ৪৭ মাস। কুকুর তিনটার নাম ফিওনা, হেনরি এবং সেমুর।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ল্যাবে নিজের পরীক্ষা চালান র্যাচনা রেড্ডি। এতে কুকুর তিনটিকে একটি বেড়ার একপাশে রাখা হয়, অন্যপাশে শিশুদের। শিশুদের পাশে কিছু খেলনা ও খাবার রাখা হয়, যা শিশু ও কুকুর উভয়ের প্রিয়।
পরীক্ষায় দেখা গেছে, অধিকাংশ শিশু গড়ে দুবার করে ওইসব খাবার ও খেলনা কুকুরদের দিকে এগিয়ে দিয়েছে। অথচ ওইসব কুকুরের সঙ্গে তাদের আগে থেকে কোনো পরিচয় নেই। গবেষণা ফলটি হিউম্যান-অ্যানিমাল ইন্টারঅ্যাকশন জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্র : গার্ডিয়ান।