প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:১৭ পিএম
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৫:২৫ পিএম
সুপার ইন্টেলিজেন্ট মেশিনের পৃথিবীতে বিরাজমান থাকাটাই মানব জাতির জন্য হুমকি। অথচ বাস্তবতা হলো সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআই তৈরি হয়ে গেলেও প্রথম দিকে সাধারণ মানুষের পক্ষে হয়তো তা জানা সম্ভব হবে না। ছবি : সংগৃহীত
বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে হলিউডে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর চলচ্চিত্রের জোয়ার শুরু
হয়। টার্মিনেটর কিংবা ম্যাট্রিক্স চলচ্চিত্রে আমরা দেখেছি সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআই-এর
সঙ্গে মানুষের লড়াই। কিন্তু বাস্তবে আমরা এমনটা দেখা পেতে পারি বলে ভেবেছি কজন?
ম্যাক্স প্ল্যাংক ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্টের চালানো এক গবেষণায়
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, কল্পবিজ্ঞানের এই ঘটনা আসলে বাস্তবেই বেশ সম্ভব। তত্ত্বীয় হিসাবনিকাশ
করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, মানুষের পক্ষে সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআইকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব
নয়।
যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা জ্ঞানে, চিন্তাশক্তিতে ও বুদ্ধিমত্তায় মানুষকে ছাড়িয়ে
যেতে সক্ষম তাকেই বলা হয় সুপার ইন্টিলিজেন্ট এআই।
আর এটি কোনোভাবে ইন্টারনেটের সঙ্গে যদি সংযোগ পায়, তখন অনলাইনে থাকা মানবজাতির
সব ডেটাতেই প্রবেশ করতে পারবে। এমনকি বিরাজমান সব প্রোগ্রামকে সরিয়ে দিয়ে নিজে জায়গা
করে নিতে পারবে এবং পুরো বিশ্বে ইন্টারনেট সংযোগে থাকা সব যন্ত্র ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের
নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নিতে পারবে। পরে সে এই অসীম ক্ষমতা কীভাবে কাজে লাগাবে, তা আর মানুষের
পক্ষে বলা সম্ভব হবে না।
গবেষকরা বলছেন, সুপার ইন্টেলিজেন্ট মেশিনের পৃথিবীতে বিরাজমান থাকাটাই মানব
জাতির জন্য হুমকি। অথচ বাস্তবতা হলো সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআই তৈরি হয়ে গেলেও প্রথম দিকে
সাধারণ মানুষের পক্ষে হয়তো তা জানা সম্ভব হবে না।
সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআই কতটা হুমকি সৃষ্টি করতে পারে তা বুঝতে এর একটি তত্ত্বীয়
এলগরিদমের কাঠামো তৈরি করেন বিজ্ঞানীরা। পরে এর ওপর বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তারা
দেখতে পান নিয়ন্ত্রণযোগ্য সুপার ইন্টেলিজেন্ট আসলে তৈরিই সম্ভব নয়।
গবেষকরা দেখেছেন, যদি কোনো সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআইইয়ের মধ্যে মানুষের ক্ষতি
করবে না এমন নির্দেশনার কোনো এলগরিদম যুক্ত করা হয়, তবে এটি নিজেকেই ধ্বংস করে ফেলে।
এমনকী দীর্ঘ গবেষণায় তারা এমন একটিও এলগরিদম পাননি, যা দিয়ে আসলে সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআইকে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
তাহলে মানবজাতি কীভাবে রক্ষা পাবে?
সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআইকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে মানুষ কম্পিউটার
প্রোগ্রামিং-এর ক্ষেত্রে নৈতিক নীতিমালা বেঁধে দিতে পারে। এতেও দুর্বলতা রয়েছে। কোনো
দেশ, সংস্থা বা কোনো কোম্পানি প্রোগ্রামিং নিয়ে কী করছে, তা পর্যবেক্ষণে রাখা কার্যত
অসম্ভব।
এ ছাড়া আরও যেসব পদক্ষেপ রয়েছে তার মধ্যে হলো সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআইয়ের
সক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা। কৌশলগত যন্ত্রপাতি ও ইন্টারনেট থেকে আলাদা রাখার
মাধ্যমে এর সক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যাতে বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে এটি কোনো যোগাযোগ
রাখতে না পারে।
এতেও ঝামেলা রয়েছে। যদি সুপার ইন্টেলিজেন্ট এআইয়ের সক্ষমতাই নিয়ন্ত্রণে
রাখা হয়, তবে এটি তৈরির প্রয়োজনই আসলে থাকে না। কারণ তখন এটি মানুষের চাহিদা এবং প্রত্যাশা
মেটাতে পারবে না।