প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৫২ পিএম
আপডেট : ০৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৫৮ পিএম
২০ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে সমুদ্রে দাপিয়ে বেড়াত ইচথিওসর। ছবি : সংগৃহীত
বর্তমান পৃথিবীতে প্রাণিজগতের মধ্যে সবচেয়ে বড় হলো সমুদ্র দাপিয়ে বেড়ানো নীল তিমি। বিশাল তার দানবীয় আকৃতি। প্রাপ্তবয়স্ক একটি নীল তিমি প্রায় ৩০ মিটার লম্বা হতে পারে এবং এর ওজন হতে পারে ১ লাখ ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার কেজি পর্যন্ত। এত বিশাল হওয়ার পরেও নীল তিমি এ পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত বিচরণকারী সবচেয়ে বড় প্রাণী নয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইচথিওসর নাম দেওয়া আরেক প্রাণীর ব্যাপারে জানতেন জীবাশ্ম গবেষকরা। ২০ থেকে ২৫ কোটি বছর আগে সমুদ্র দাপিয়ে বেড়াত ভয়ংকর এই শিকারি প্রাণীগুলো। এতদিন গবেষকদের অনুমান ছিল সম্ভবত ইচথিওসরের দৈর্ঘ্য ও ওজন নীল তিমির থেকে কম।
কিন্তু নতুন করে ১৮৪০ থেকে ১৮৫০ সালে ইংল্যান্ডে খুঁজে পাওয়া জীবাশ্মকে পুনরায় বিশ্লেষণ করে জীবাশ্ম গবেষকরা বলছেন, একটি প্রাপ্তবয়স্ক ইচথিওসর লম্বায় ৩৫ মিটারও হতো। অর্থাৎ বড় বড় দাঁতওয়ালা ইচথিওসর শুধু একটি সামুদ্রিক ভয়ংকর শিকারি প্রাণীই ছিল না, বর্তমান নীল তিমি থেকেও বড়। সে হিসেবে এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে বিচরণ করা সবচেয়ে বড় প্রাণী এটি।
এ ছাড়া আগে বিজ্ঞানীরা জানতেন ইচথিওসর কেবল জুরাসিক ও ক্রিটেশিয়াস যুগে সমুদ্রে বিচরণ করত। কিন্তু নতুন এই বিশ্লেষণ বলছে, এ দুই যুগ ছাড়াও ট্রায়াশিয়াস যুগেও এই প্রাণীর বিচরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
প্রায় ২০ বছর আগে প্রয়াত জীবাশ্মবিদ এলিজাবেথ নিকোলস কানাডার আলবার্টার রয়্যাল টাইরেল মিউজিয়ামে কাজ করার সময় তিনি ও তার এক সহকর্মী বিশাল এক জীবাশ্মকে ইচথিওসরের হাড় বলে শনাক্ত করেছিলেন। পরে জীবাশ্মটিকে ইচথিওসরের একটি প্রজাতি হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছিল।
তখন ধারণা করা হয়েছিল, প্রাপ্তবয়স্ক ইচথিওসর লম্বায় ২১ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু এ সিদ্ধান্তও বেশিদিন টেকেনি। ইচথিওসরের ৯৬ সেন্টিমিটার লম্বা চোয়ালের হাড় খুঁজে পান জীবাশ্মবিদরা। তার আলোকে ২০০৪ সালে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এ প্রজাতিটি ২৫ মিটারের বেশি লম্বা হতো।
সবশেষ এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ট্রায়াসিক যুগে বিচরণ করা এ প্রাণীটি লম্বায় ৩৫ মিটারও হতো। গবেষকদের নেওয়া এ সিদ্ধান্ত কেবল এটিকে বিশাল শিকারি প্রাণী হিসেবেই স্বীকৃতি দেবে না, পৃথিবীতে বিচরণকারী এখন পর্যন্ত জানা সবচেয়ে বড় প্রাণীতে পরিণত করবে।
ইচথিওসর আসলে কি ডাইনোসর?
ইচথিওসরকে অনেকেই সামুদ্রিক ডাইনোসর হিসেবে মনে করেন। তবে এমনটি শুনলে জীবাশ্মবিদদের ভালো লাগার কথা নয়। কারণ তারা এটিকে সামুদ্রিক ড্রাগন হিসেবেই পরিচয় দেন এবং এটি পুরোপুরি ডাইনোসর থেকে আলাদা ভিন্ন একটি প্রজাতি। সরীসৃপ এ প্রাণীটি দেখতে ছিল অনেকটা ডলফিনের মতো। তবে গবেষকরা বলছেন, ইচথিওসর ডলফিনের মতো হলেও এটি মোটেও বুদ্ধিমান ছিল না। তবে শিকারি হিসেবে ছিল ভয়ংকর।