প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:৪৬ পিএম
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:৪২ পিএম
সেঁজুতি সাহা। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের স্বনামধন্য অণুজীববিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহার প্রোফাইল প্রকাশ করেছে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট। নাতিদীর্ঘ প্রোফাইলে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং নিয়ে সেঁজুতি সাহা ও তার দলের সাফল্যের কথা তুলে ধরা হয়েছে।
ল্যানসেটের প্রোফাইলে বলা হয়, সেঁজুতি সাহা বর্তমানে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (সিএইচআরএফ) পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৭ সালে ঢাকায় গবেষণা কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করেন সেঁজুতি সাহার পিতা ও অণুজীববিজ্ঞানী সমীর কুমার সাহা। সেঁজুতির মা সেতারুন্নাহারও একজন বিশিষ্ট অণুজীববিজ্ঞানী।
২০১৮ সাল সিএইচআরএফে প্রথমবারের মতো সিকোয়েন্সিং অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করা হয়। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের প্রথম যন্ত্রটি পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে তখন সেঁজুতি সাহা বলেছিলেন, ‘বিশ্ববাসীকে আমি এটা দেখাতে চাই যে, যেখানেই তুমি থাক না কেন, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পেলে তুমি সেখানে বসেই জিনোম সিকোয়েন্সিং করতে পারবে। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে পাঠাতে হবে না। বিশ্বের যে কোনো জায়গায় বসে, সিকোয়েন্সিং করা যে সম্ভব, একটি ছোট যন্ত্র দিয়ে বাংলাদেশ থেকে এটা আমি প্রমাণ করতে চাই।’
সার্স-কভ-২ বা করোনা ভাইরাসের সিকোয়েন্স করার পর এক সাক্ষাৎকারে সেঁজুতি সাহা বলেন, ‘সক্ষমতা তৈরির ইতিবাচক ফল কী হতে পারে, আপনারা তা নিজ চোখে দেখুন। আমরা সঠিক প্রযুক্তির পেছনে বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন আমরা তার ফল পাচ্ছি।’
ল্যানসেটে নিজের প্রোফাইল প্রকাশে বেশ উচ্ছ্বসিত সেঁজুতি সাহা। গণমাধ্যমকে এ তরুণ বিজ্ঞানী বলেন, ‘আমার প্রোফাইল তৈরির জন্য ল্যানসেট থেকে যখন যোগাযোগ করা হয়, প্রথমে আমার ধারণা হয়েছিল কেউ আমাকে ফাঁসাচ্ছেন। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের কথা-বার্তায় আমি আশ্বস্ত হই। তাদের আমার বিস্তারিত তথ্য দেই।’
সেঁজুতি সাহা মনে করেন, ল্যানসেটে আমার প্রোফাইল বের হওয়ার একটা অর্থ হলো, বিশ্ব আমাদের কাজ পর্যবেক্ষণ করছে। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল।’
অণুজীববিজ্ঞানী মা-বাবার সন্তান সেঁজুতি সাহা অল্প বয়স থেকে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ঢাকায় ও এবং এ-লেভেল শেষ করে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টো থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন তিনি। এরপর একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে আণবিক জেনেটিক্স বা মলিকুলার জেনেটিক্স নিয়ে পিএইচডি করেন।
পিএইচডি গবেষণাকালে থাইরয়েড ক্যান্সার ধরে পড়ে সেঁজুতির। পরে চিকিৎসায় তা সফলভাবে ভালো হয়। চিকিৎসা থেকে সেরে ওঠে সেঁজুতি সাহা বলেন, ‘বর্তমানে আমি বেশ ভালো আছি। আমার সুচিকিৎসা সম্ভব হয়েছে কারণ আমি কানাডার মতো দেশে ছিলাম। কানাডার চিকিৎসা ব্যবস্থা চমৎকার। আমি চাই বিশ্বের সব দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কানাডার মতো হোক।’