প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:২৮ পিএম
আপডেট : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:১৪ পিএম
বুদ্ধিমান ও সামাজিক সামুদ্রিক প্রাণী ডলফিন। ছবি : সংগৃহীত
মানুষের মতো ডলফিনও অবিশ্বাস্যরকম বুদ্ধিমান ও সামাজিক প্রাণী। পরিবার নিয়ে তারাও বসবাস করে। দলবদ্ধভাবে শিকার করে। তাদের দলে নেতাও থাকে, নেতার প্রতি অনুগত থাকে বাকিরা। তারা ছোট ডলফিনদের মাছ ধরা শেখায়। শিস বাজিয়ে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও সক্ষম। এবার নতুন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মতোই স্মৃতি ভুলে যাওয়া রোগে ডলফিনরাও আক্রান্ত হয়।
ইউরোপীয় জার্নাল অব নিউরোসায়েন্সে প্রকাশিত নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ডলফিনও মস্তিষ্কে আলঝেইমার (যে কারণে স্মৃতিবিভ্রাট দেখা দিতে পারে) রোগে আক্রান্ত হয়। এর ফলে তারা দিকও ভুলে যায়, অগভীর পানিতে আটকা পড়ে মারা যায়।
গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক ইউনিভার্সিটি অব গ্লাসগোর স্কুল অব বায়োডাইভার্সিটির অ্যানাটমিক প্যাথলজির প্রধান ড্যাগলিশ বলেছেন, এটি নিশ্চিত করে প্রমাণ করে না যে সব সামুদ্রিক প্রাণী আলঝেইমারে আক্রান্ত হতে পারে। বরং এটি অগভীর পানিতে সমুদ্রে দিক নির্ধারণে দক্ষ ডলফিনের আটকে পড়ার ব্যাখ্যা দেয়।
ডলফিনের আলঝেইমার-সংক্রান্ত গবেষণার জন্য ড্যাগলিশ ও তার সহকর্মীরা পাঁচটি ভিন্ন প্রজাতির ২২টি ডলফিনের মস্তিষ্ক পরীক্ষা করেছিলেন। এই ডলফিনের প্রতিটিই স্কটিশ উপকূলের অগভীর পানিতে আটকা পড়ে মারা যায়।
এর মধ্যে তিনটির মস্তিষ্কে মানুষের মধ্যে আলঝেইমার নির্ণয়ের যে মার্কার, সেগুলো পাওয়া গেছে। তাহলে বাকি ১৯টি ডলফিন আটকা পড়ে মারা পড়ল কেন?
গবেষকরা এরও ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তারা বলছেন, সম্ভবত বাকি ডলফিনগুলো তাদের নেতাদের দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় ছিল। দুর্ভাগ্যবশ্যত তাদের বয়স্ক নেতারাই আলঝেইমারে আক্রান্ত ছিল।
এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটির স্নায়ুবিজ্ঞানী ও গবেষণার সহলেখক বলেছেন, ‘মানুষের বার্ধক্য ও আলঝেইমার রোগের মতো বয়স্ক ডলফিনের মস্তিষ্কের পরিবর্তন দেখে আমরা মুগ্ধ। এখন এই প্যাথলজিক্যাল পরিবর্তনগুলো অগভীর পানিতে আটকে পড়ার কারণ কি না, তা ভবিষ্যতের কাজের জন্য একটি আকর্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।’
মানুষের মধ্যে আলঝেইমার নির্ণয় করার সময় ডাক্তাররা মস্তিষ্কের শারীরিক প্রমাণ শনাক্তের পাশাপাশি স্মৃতিশক্তি হ্রাস, কাজে অক্ষমতার মতো আচরণগুলো বিবেচনা করলে রোগ শনাক্তকরণ সহজ হয়।
ড্যাগলিশ বলছেন, ডলফিনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
তিনি বলেন, ‘এটি এমন কিছু যা আপনি জীবন্ত প্রাণীতেও দেখতে পাবেন। যদিও আমাদের শুধু মৃত ডলফিন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ ছিল।’