প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ১২:২৬ পিএম
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:১৫ পিএম
প্রশান্ত মহাসাগরে নাসার মহাকাশযান ওরিয়ন। ছবি : সংগৃহীত
চাঁদে সফল অভিযান শেষে পৃথিবীতে ফিরে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মহাকাশযান ওরিয়ন।
বিবিসি জানিয়েছে, ২৬ দিনের অভিযানের পর রবিবার (১১ ডিসেম্বর) এটি পৃথিবীতে ফিরেছে।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে উত্তপ্ত অবস্থায় প্রবেশের আগে এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৫ হাজার মাইল। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর এর গতি হয় ঘণ্টায় ৩২৫ মাইল। পরে ১১টি প্যারাসুট খোলার পর এর গতিবেগ কমে হয় ঘণ্টায় ২০ মাইলেরও কম। পরে এটি প্রশান্ত মহাসাগরের কিউবার দক্ষিণ পূর্বে গুয়াডালুপ দ্বীপের কাছে এসে পড়ে।
এরই মধ্যে ক্যাপসুলটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুরো সফল এই মিশনে কোনো নভোচারী পাঠায়নি নাসা। তবে এতে পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য মানবাকৃতির অনেক সেন্সরযুক্ত ডামি রাখা ছিল। ২০২৪ সালে এই ধরনের ক্যাপসুলেই আর্টেমিস ২ মিশনে চাঁদের উদ্দেশে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে নাসার।
এবারের মিশনের বিষয়ে নাসা প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, ‘আমরা অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলেছি। এখন আমরা আবার এর যাত্রা শুরু করছি। কিন্তু এবার একেবারে ভিন্ন উদ্দেশ্যের জন্য। কারণ এবার আমরা চাঁদে ফিরে যাব বাঁচতে শিখতে, কাজ করতে, উদ্ভাবন করতে, তৈরি করতে, আরও অন্বেষণে, আরও মহাজাগতিক বিষয় শিখতে।’
ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে ১৬ নভেম্বর সফলভাবে উৎক্ষেপিত হয় ওরিয়ন মহাকাশযান বহন করা আর্টেমিস ১ মিশনের স্পেস লঞ্চ সিস্টেম রকেট। এখন পর্যন্ত নাসার বানানো সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট এটি। এর উৎক্ষেপণকে বর্ননা করা হয়েছিল মানুষের চন্দ্রাভিযানের দ্বিতীয় অধ্যায়ের সফল শুরু হিসেবে।
এর আগে দুবার প্রস্তুতি নিলেও শেষ মুহূর্তে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উৎক্ষেপণ পরিকল্পনা বাতিল করে নাসা।
আর্টেমিস মিশনের উদ্দেশ্য কেবল মহাকাশে মানুষ পাঠানো নয়।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৯৭২ সালের অ্যাপোলো মিশনের পর ২০২৫ সালে আর্টেমিস-৩ মিশনে চাঁদের পৃষ্ঠে নভোচারী নামাতে যাচ্ছে নাসা।
প্রথমবারের মতো এই মিশনে চাঁদের বুকে পা রাখবেন একজন নারী নভোচারী। এর আগে অ্যাপোলো মিশনগুলোতে কোনো নারীকে পাঠানো হয়নি। এ ছাড়া অশ্বেতাঙ্গ কেউই এখন পর্যন্ত চাঁদে পা রাখেননি।
এবার যেহেতু চাঁদে প্রথম নারীর পদচিহ্ন পড়তে যাচ্ছে, তাই অ্যাপোলোরই যমজ বোন আর্টেমিসের নামে এই মিশনের নামকরণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে এবার একজন অশ্বেতাঙ্গ ব্যক্তিও চাঁদের বুকে পা রাখবেন।
নাসার বর্তমান পরিকল্পনা হলো নভোচারীদের তারা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করাবে। সেখানে তারা প্রায় ১ সপ্তাহ পানির চিহ্ন খুঁজে কাটাবে এবং সেখানে এমন কিছুর সন্ধান করবে যা মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার পথে রকেটগুলোকে জ্বালানি সহায়তা দিতে পারবে।
তার মানে খনন ও বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম চালানোর জন্য সেখানে স্থায়ী মানব বসতি নির্মাণ করতে হবে।
নাসার ওরিয়ন চন্দ্র মহাকাশযান কর্মসূচির নেতৃত্বদানকারী হাওয়ার্ড হু বলেছিলেন, ‘আমরা মানুষকে সারফেসে (চন্দ্রপৃষ্ঠে) পাঠাবো, তারা সেখানে বসবাস করবে এবং বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করবে। আমরা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়, বিশ্বের জন্য দীর্ঘমেয়াদি গভীর মহাকাশ অনুসন্ধানের জন্য আমরা প্রথম পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।’
১৯৬৯ সালে অ্যাপোলো-১১ দিয়ে শুরু হওয়া পরবর্তী পাঁচটি মিশনে মোট ১০ জন নভোচারী চাঁদের বুকে হেঁটেছেন।