প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:২৫ পিএম
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ১৯:২৬ পিএম
সিম্যুলেশন ভিত্তিক ওয়ার্মহোলের গতিশীলতা গুগলের সাইকামোর কোয়ান্টাম প্রসেসর দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল।
দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দেয়ার জন্য দুই মহাবিশ্বের স্থান কালের একটি শর্টকাট আছে। আর তা হলো ওয়ার্মহোল। বিজ্ঞানীরা এখনও ওয়ার্মহোল খুঁজে না পেলেও আলবার্ট আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সমীকরণে এর বাস্তব সমাধান রয়েছে এবং এর তাত্ত্বিক অবস্থানও খুবই জোরালো।
বাস্তব জীবনে ওয়ার্মহোল না দেখলেও সায়েন্স ফিকশন জনরার চলচ্চিত্রগুলোতে আমরা প্রায়ই ওয়ার্মহোলের দেখা পাই। এটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর অন্যতম প্রধান ভিত্তি।
এবার গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভৌতস্থানে ওয়ার্মহোলের দেখা না পেলেও তাত্ত্বিকভাবে গবেষকরা ওয়ার্মহোল তৈরি করেছেন।
একটি কোয়ান্টাম কম্পিউটারে দুটি ক্ষুদ্র ব্ল্যাকহোলের (কৃষ্ণগহ্বর) সিম্যুলেশন তৈরি করেছে এবং এই টানেলের মাধ্যমে দুই ব্ল্যাকহোলে বার্তা পাঠিয়েছে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার সম্ভবত এই বার্তা পাঠাতে গিয়ে দুই ব্ল্যাকহোলের দূরত্বকে অগ্রাহ্য করে স্থান কালের ভেতর দিয়ে শর্টকার্ট অর্থ্যাৎ ট্রাভার্সেবল ওয়ার্মহোল তৈরি করেছে।
বাস্তব পৃথিবীতে কিন্তু এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি। পুরোটাই ঘটেছে কম্পিউটার সিম্যুলেশনে।
এই ওয়ার্মহোল হলো স্থান ও সময়ের মধ্যে একটি ফাটল। মহাবিশ্বের দুই প্রান্তের মধ্যে এটিকে সেতু হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বিজ্ঞানিরা এটিকে বলেন আইনস্টাইন-রোজেন সেতু। কারণ আলবার্ট আইনস্টাইন ও নাথান রোজেনই ওয়ার্মহোলের বর্ণনা করেছেন। দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করতে গেলে এটি স্থান ও সময়কে বাকিয়ে দেয়।
আমেরিকার কণা পদার্থবিদ ও নেচারে প্রকাশিত এই গবেষণার সহলেখক জোসেফ লিকেন বলছেন, কোয়ান্টাম কম্পিউটারে এক ব্ল্যাকহোল থেকে আরেক ব্ল্যাকহোলে তথ্য গমনের ক্ষেত্রে যে বৈশিষ্ট্যগুলো তারা পেয়েছে, এইটা অনেকটা ওয়ার্মহোলের মতোই দেখায়।
ক্যালটেকের পদার্থবিদ মারিয়া স্পিরোপুলু এটির বৈশিষ্ট্যকে শিশু ওয়ার্মহোলের বৈশিষ্টয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং তিনি ধাপে ধাপে প্রাপ্ত বয়স্ক ওয়ার্মহোল তৈরির আশা করছেন।
এই ওয়ার্মহোলের গতিশীলতা গুগলের সাইকামোর কোয়ান্টাম প্রসেসর দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞরা যারা পরীক্ষায় জড়িত ছিলেন না, তারা বার বার জোর দিয়ে বলছেন, এটি কোনো ভাবেই ফিজিক্যাল ওয়ার্মহোল নয়। তবে এতে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা বিকশিত হয়েছে।
এমআইটির একজন পদার্থবিদ ড্যানিয়েল হার্লো নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, পরীক্ষাটি এমন এক মডেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে যা পেন্সিল ও কাগজ ব্যবহার করেও অধ্যয়ন করা যেত।
তিনি বলেন, 'আমি বলবো যে এটি আমাদের কোয়ান্টাম মাধ্যাকর্ষণ সম্পর্কে এমন কিছু শেখায় না যা আমরা এরই মধ্যে জানতাম না। তবে আমি মনে করি এটি একটি প্রযুক্তিগত কৃতিত্ব হিসেবে উত্তেজনাপূর্ণ।'
গবেষণার লেখকরা নিজেরাই স্পষ্ট করেছেন, 'গবেষক বা জীবিত প্রাণীদের ওয়ার্মহোলে পাঠানোর সক্ষমতা' থেকে অনেক দূরে রয়েছেন তারা।
গবেষণার লেখকরা নিজেরাই স্পষ্ট করেছেন যে বিজ্ঞানীরা এই ধরনের একটি পোর্টালের মাধ্যমে মানুষ বা অন্যান্য জীবিত প্রাণীদের পাঠাতে সক্ষম হতে অনেক দূরে রয়েছেন। তবে তারা বলছেন, ওয়ার্মহোল সংক্রান্ত গবেষণা তারা শুরু করতে পেরেছেন।