প্রবা ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২২ ১২:৫৪ পিএম
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২২ ০২:৩৮ এএম
সম্ভবত বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় নিউরালিংকের ইউটিউব চ্যানেলে দেখা যাবে ইভেন্টটি। ছবি : সংগৃহীত
মানুষের মস্তিষ্কে কি নিউরালিংকের ডিভাইস বসানো হয়েছে? এমন জল্পনা চলছে প্রযুক্তিপ্রেমী নেটিজেনদের মধ্যে। আর এই প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে আজই। প্যাসিফিক সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে সবার সামনে উপস্থিত হবেন নিউরালিংকের গবেষকরা। আশা করা হচ্ছে খোদ ইলন মাস্কই সেখানে থাকবেন। নিউরালিংকপ্রেমীরা জবাব পাবে অনেক প্রশ্নেরই, আর হয়তো সাক্ষী হবে বিস্ময়কর বিজ্ঞানের।
এর আগের দুটি নিউরালিংকের ইভেন্ট ও প্রযুক্তি সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় ইউটিউবে লাইভ দেখানো হয়েছিল। তাই প্রযুক্তিপ্রেমীরা আশা করছে, এবারের ইভেন্টটিও লাইভ দেখানো হবে। এমনটা হলে বাংলাদেশ সময় ১ ডিসেম্বর সকাল ৮ টায় সরাসরি সম্প্রচার শুরু হবে।
এই ইভেন্টটি হওয়ার কথা ছিল ৩১ অক্টোবরে, হ্যালোউইনের দিনে। পরে ইলন মাস্ক তা পিছিয়ে দিয়ে নতুন তারিখ ঘোষণা করেন ৩০ নভেম্বর। তবে মানুষের মস্তিষ্কে নিউরালিংক ডিভাইসের সংযোগ আদৌ ঘটেছে কি না। সেই বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
কিন্তু গত ২৪ নভেম্বর তারিখ নিউরালিংক তার অফিসিয়াল টুইটার পেজে ১৪ সেকেন্ডের ছোট্ট একটি ভিডিও শেয়ার করে। যেই ভিডিওর ক্যাপশনে ইভেন্টের সময় দেওয়া হয় এবং ভিডিওর মধ্যে দেখা যায়, কালো একটি স্ক্রিনে একটি বার্তা ফুটে উঠছে, যেখানে দেওয়া হচ্ছে, নিউরালিংকের ইভেন্টে যোগদানের আহ্বান।
এরপরেই মূলত নিউরালিংকপ্রেমী নেটিজেনদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারা বলছেন, সম্ভবত এই বার্তাই নিউরালিংক ডিভাইসের মাধ্যমে কেউ কম্পিউটার স্ক্রিনে লিখেছে।
নিউরালিংক এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে নিশ্চুপ। তবে সব প্রশ্নের উত্তর জানা যাবে আজই।
২০২২-এর শুরুতেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য পরিচালক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান নিউরালিংক। যুক্তরাষ্ট্রের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত নতুন ডিভাইস ট্রায়ালের আগে ট্রায়াল ডিরেক্টর নিয়োগ করে থাকে।
ডিরেক্টরের দায়িত্ব সম্পর্কে সে সময় বলা হয়েছিল, নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিকে খুবই আন্তরিকতার সঙ্গে সৃজনশীল একদল ডাক্তার ও উচ্চমানের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কাজ করতে হবে।
এর আগে গত বছরের ডিসেম্বরে ওয়ালস্ট্রিট জার্নালকে ইলন মাস্ক জানিয়েছিলেন, ২০২২ সালের কোনো এক সময়ে নিউরালিংক মানবদেহে চিপ স্থাপন করবে।
এরই মধ্যে শূকর ও বানরের মস্তিষ্কের সঙ্গে নিউরালিংক ডিভাইসের সংযোগ সাধন সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে নিউরালিংকের বানর পেইজা তো রীতিমতো নিউরালিংক ডিভাইসের মাধ্যমে ভিডিও গেমও খেলেছে। ইলন মাস্ক পেইজার বিষয়ে বলেছেন, ‘সুখী বানর’।
পেইজার ভিডিওর ভয়েসওভারে বলা হয়েছিল, ‘নিউরালিংক তার ব্রেন চিপের মাধ্যমে বানরের মোটর কর্টেক্স অঞ্চলে প্রতিস্থাপন করা দুই হাজারের বেশি সূক্ষ্ম তারের ইলেকট্রোড ব্যবহার করে মস্তিষ্ক থেকে বৈদ্যুতিক সংকেত রেকর্ড ও ডিকোডের কাজ করে, যা সরাসরি কম্পিউটার ডিভাইসে প্রেরণ করে।’
২০২০-এর ইভেন্টে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এর মালিক ইলন মাস্ক জানান, ভবিষ্যতে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলা, ব্রেন ড্যামেজ, হতাশা, উদ্বেগ ও আসক্তি, এমনকি নিউরো সংক্রান্ত বহু সমস্যার সমাধান করবে নিউরালিংক। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ভবিষ্যতে নতুন কোনো ভাষা শেখার ক্ষেত্রে কিংবা কোনো দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে নিউরালিংক ডিভাইস মুহূর্তে তা মস্তিষ্কে আপলোড করে দেবে। এমনকি ব্রেনকে কপি করা সম্ভব হবে বলেও আশাবাদী মাস্ক।
প্রাথমিক অবস্থায় প্যারালাইসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্পর্শ করা ছাড়াই মোবাইল ও কম্পিউটারের মতো ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবে নিউরালিংক দিয়ে।
নিউরালিংক মূলত ব্রেন মেশিন ইন্টারফেস (বিএমআই) বা ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করে। এ ধরনের প্রযুক্তিতে মানব মস্তিষ্কের সঙ্গে সরাসরি কম্পিউটারের সংযোগ করে দেওয়া হয়। ফলে শুধু মস্তিষ্ককে কাজে লাগিয়ে কম্পিউটার ব্যবহার করা সম্ভব।