৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা
টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৯ এএম
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১১:০২ এএম
টঙ্গীর তুরাগতীরে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু। প্রবা ফটো
গাজীপুরের শিল্পশহর টঙ্গীর তুরাগতীরে আজ শুক্রবার শুরু হচ্ছে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এ পর্বের আয়োজক সাদপন্থি তাবলিগ জামাত। তবে ইজতেমায় যোগদানের অনুমতি পাননি ভারতের তাবলিগ মারকাজের শীর্ষ মুরুব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভী। আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিশ্ব ইজতেমায় সাদ কান্ধলভী না এলেও তার তিন ছেলে অংশ নেবেন।
মাওলানা সাদ কান্ধলভীর ইজতেমায় অংশগ্রহণের অনুমতির দাবি করে সাধারণ মুসল্লি পরিষদের ব্যানারে রাজধানী ঢাকায় মানববন্ধন ও টঙ্গীতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও এখনও এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
দ্বিতীয় পর্বের ব্যবস্থাপনা ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বিষয়ক জিম্মাদার প্রকৌশলী মুহিব উল্লাহ জানান, ইতোমধ্যে দ্বিতীয় পর্বের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এবারের বিশ্ব ইজতেমায় ৬৪ জেলার জামাতবদ্ধ মুসল্লি ছাড়াও বিশ্বের অর্ধশতাধিক দেশ থেকে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মুসল্লি অংশ নেবেন। আশা করা হচ্ছে, বিভিন্ন দেশের ১০ হাজার মেহমান দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন। আগতদের খেদমতে প্রশাসনের পাশাপাশি আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের মাওলানা জোবায়েরপন্থি তাবলিগ জামাতের উদ্যোগে ২, ৩ ও ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। আখেরি মোনাজাতে প্রথম পর্ব সমাপ্ত হলে জোবায়েরপন্থি মুসল্লিরা ওই দিনই প্রশাসনের নির্দেশ অনুসারে ময়দান ছেড়ে চলে যান।
গত মঙ্গলবার ইজতেমা ময়দান সাদপন্থি তাবলিগ জামাতের মুরুব্বিদের কাছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ৬৪ জেলার মুসল্লির জন্য খিত্তা নির্ধারণ করে ময়দান প্রস্তুত করা হয়। আন্তর্জাতিক নিবাসকেও সম্পূর্ণ ঢেলে সাজানো হয়।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, প্রথম পর্ব শেষ হওয়ার পর পুরো ইজতেমা মাঠ, অজু-গোসলখানা ও টয়লেট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। আগতদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রথম পর্বের মুসল্লিদের যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে, দ্বিতীয় পর্বের আগত মুসল্লিদের জন্যও অনুরূপ বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা আগের পর্বের মতোই থাকছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা শুরু থেকে এখনও টঙ্গীতে অবস্থান করছেন।
তাবলিগের মুরুব্বিরা জানান, বিশ্ব তাবলিগ মারকাজে বিভক্তি দেখা দেওয়ার পর থেকে বিশ্ব ইজতেমা সাদপন্থি ও জোবায়েরপন্থি নামে দুই ভাগ হয়ে গেলেও দ্বিতীয় পর্বে বিশ্ব ইজতেমার বিভিন্ন কর্মসূচি আগের মতোই অভিন্ন থাকবে। তাবলিগ জামাতের মূল স্তম্ভ ছয় উসুলের হাকিকত কেন্দ্র করেই তিন দিনের কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এ ধর্মীয় সংগঠনের মহাসম্মেলনের প্রধান আকর্ষণ আম ও খাস বয়ান দাওয়াতে তাবলিগের মেহনত, ঈমান, আমল ও আখলাকের ওপর ভিত্তি করেই পেশ করা হবে। বিশ্ব ইজতেমা মূলত তাবলিগ জামাতের বিগত এক বছরের কাজের পর্যালোচনা ও আগামী এক বছরের কাজের পরিকল্পনা বিশ্লেষণ ও উম্মতের করণীয় নিয়ে হয়ে থাকে। আগত দেশবিদেশের মুসল্লিরা এখানে কুরআন ও হাদিসের ব্যাখ্যামূলক আলোচনা শুনে নিজের জীবন পরিচালনার দিকনির্দেশনা গ্রহণ করেন ও দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় মাসলা-মাসায়েল শেখার সুযোগ পান। ইজতেমায় বিভিন্ন দেশের ওলামায়ে কেরাম মুসল্লিদের উদ্দেশে আল্লাহর হুকুম ও মহানবীর (সা.) নির্দেশিত তরিকা অনুসরণের জন্য আমলের বিভিন্ন পদ্ধতি বাতলে দেন।