প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:০০ পিএম
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:২৪ পিএম
জার্মানির কোলন শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদ। ছবি : সংগৃহীত
জার্মানির মসজিদগুলোতে এত দিন পর্যন্ত তুরস্কে প্রশিক্ষিত ইমামদের নেওয়া হতো। কিন্তু এবার তা বন্ধ করা হচ্ছে। তুর্কিদের পরিবর্তে জার্মান নাগরিকদেরই ইমাম হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এতে দেশের সঙ্গে তাদের সংহতি থাকবে। জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ ঘোষণা দিয়েছে।
তুরস্কের নাগরিকদের ইমাম হিসেবে নেওয়া বন্ধ করলেও জার্মান নাগরিকদের প্রাথমিকভাবে তুর্কি আলেমরাই প্রশিক্ষণ দেবেন। এজন্য জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তুরস্কের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ দিয়ানেট ও ডিটিটিবির মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। প্রতিবছর একশজন জার্মানকে ইমামতির প্রশিক্ষণ দেবে তারা। পশ্চিমের শহর ডালেমে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
তথ্যমতে, জার্মানিতে এখন তুরস্কের এক হাজার ইমাম আছেন। তাদের পর্যায়ক্রমে সরিয়ে নতুন প্রশিক্ষিতদের নিয়োগ করা হবে। আর যাদের সরানো হবে, তাদের দিয়ানেট অন্যত্র নিয়োগ দেবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা এমন ধর্মীয় নেতা চাই, যারা আমাদের দেশকে জানে, আমাদের ভাষায় কথা বলে এবং আমাদের মূল্যবোধেকে সমর্থন করে। আমরা চাই ইমামরা বিভিন্ন ধর্মের মানুষদের সঙ্গে আলোচনা করুন এবং আমাদের সমাজে বিশ্বাস তৈরি করুন।
নতুন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে জার্মানির ইমাম কনফারেন্স নামের একটি সংগঠন। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানায়, জার্মানিতে ৫৫ লাখ মুসলমান বাস করে। তারা মোট জনসংখ্যার ছয় দশমিক ছয় শতাংশ। তাদের মতে, নতুন সিদ্ধান্ত জার্মানির মুসলিমদের মিলন ও যোগদানের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে।
জার্মানিতে আড়াই হাজার মসজিদ আছে। তার মধ্যে ৯০০ মসজিদ ডিটিটিবি নিয়ন্ত্রণ করে। ডিটিটিবি হলো তুরস্কের প্রেসিডেন্সি অব রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্সের একটি শাখা। তারাই জার্মানিতে সবচেয়ে বড় ইসলামিক সংস্থা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা তুরস্ক সরকারের কথাতে ওঠাবসা করে।
ডিটিটিবিকে নিয়ে সম্প্রতি একটা বিতর্কও দেখা দিয়েছে। কোলনের একটি মসজিদে একজন আফগান তালেবান সদস্য নভেম্বরে ভাষণ দেন। সেটা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়।
২০১৭ সালে জার্মান কর্মকর্তারা ডিটিটিবিকে মৌলিক সংস্কার করতে বলেন। তখন অভিযোগ উঠেছিল, তারা যে ইমামদের নিয়োগ করে, তারা তুরস্কের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করেন। তুরস্কে এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর এই অভিযোগ ওঠে। দিয়ানেট অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকের করেছে।
এরদোয়ান সরকার জানায়, তারা এ নিয়ে তদন্ত কমিটি করেছিল। সেই কমিটির দাবি, তাদের হাতে এ রকম কোনো তথ্যই নেই।
জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর এঙ্গেলা মের্কেল ২০১৮ সালে প্রথমে জার্মানিতে জার্মান ইমামদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব করেন। তার যুক্তি ছিল, এ পদক্ষেপ জার্মানিকে এ বিষয়ে আরও স্বনির্ভর করবে। এটা জার্মানির ভবিষ্যতের জন্য জরুরি।
সূত্র : ডয়চে ভেলে