× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

রমজানের শেষ দশ দিনের বিশেষ আমল

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২২ মার্চ ২০২৫ ১০:২৫ এএম

আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৫ ১৬:৫৯ পিএম

মুসলিম উম্মাহর জন্য রমজান শুধুই একটি মাস নয়; বরং রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অপার সম্ভাবনাময় এক সময়।

মুসলিম উম্মাহর জন্য রমজান শুধুই একটি মাস নয়; বরং রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অপার সম্ভাবনাময় এক সময়।

ধৈর্য, সংযম ও আত্মশুদ্ধির সোনালি মাস রমজান অবসানের পথে। মুসলিম উম্মাহর জন্য এটি শুধুই একটি মাস নয়; বরং রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের অপার সম্ভাবনাময় এক সময়। রমজানের শেষ দশক মানেই আল্লাহর অফুরন্ত করুণা ও ক্ষমা লাভের সুবর্ণ সুযোগ। এই দশকেই লুকিয়ে আছে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রাত— পবিত্র শবে কদর। তাই বিশ্বজুড়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এই সময়টিতে বিশেষ আমল ও ইবাদতে মগ্ন থাকেন, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় অতিবাহিত করেন প্রতিটি মুহূর্ত।

দেখতে দেখতে বিদায়ের পথে গুনাহ মাফ ও তাকওয়া অর্জনের মাস পবিত্র রমজান। রহমতের পর বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে মাগফেরাতও। একজন মুমিন বান্দার জন্য রমজান অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। এ অল্প আমলেই আছে অনেক বেশি ফজিলত রয়েছে। তাই রমজানের প্রতিটি ক্ষণ অনেক দামি ও মূল্যবান।

বিশেষত রমজানের তৃতীয় ভাগ বা শেষ দশকের তাৎপর্য অপরিসীম। খোদ রাসুল (সা.) এই সময়কে অধিক গুরুত্ব দিতেন। রমজানের অন্যান্য দিনে যে আমলগুলো করতেন, শেষ দশকে এসে তার পরিমাণ অনেক বেড়ে যেত।

আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, যখন রমজানের শেষ দশক আসতো তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাতে জেগে থাকতেন ও পরিবার-পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৯৭)

রমজানের শেষ দশক এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার মূল কারণ হলো এ মাসে আছে একটি রাত যেটি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। আরবি শব্দ লাইলাতুল কদরের অর্থ অতিশয় সম্মানিত ও মহিমান্বিত রাত। পবিত্র এই রাতকে ভাগ্যের রাতও বলা হয়। এই রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।

পবিত্র কুরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আমি এটি (পবিত্র কুরআন) নাযিল করেছি লাইলাতুল কদরে। তুমি কি জানো কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও অধিক উত্তম। এ রাতে ফেরেশতা আর রূহ তাদের রবের অনুমতিক্রমে প্রত্যেক কাজে অবতীর্ণ হয়। (এ রাতে বিরাজ করে) শান্তি আর শান্তি- ফজর উদয় হওয়া পর্যন্ত। (সুরা কদর, আয়াত: ১-৫)

পবিত্র রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর যেকোনো একটি রাত মূলত শবে কদরের রাত। বিভিন্ন হাদিস ও আলেমদের মতে, রমজানের ২৭ তারিখে শবে কদর, যা মূলত ২৬তম রোজার দিন রাতে। তাই শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোয় বেশি বেশি ইবাদত করা উত্তম।

এছাড়াও রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করার বিধান রয়েছে। এর মাধ্যমে কদরের রাত পাওয়া নিশ্চিত হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করতেন এবং বলতেন- তোমরা শেষ দশকে লাইলাতুল কদর তালাশ কর। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮৯৩)

এ ক্ষেত্রে ইতিকাফের জন্য বিশেষ সওয়াবও রয়েছে। ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ (সা.) ইতিকাফকারী সম্পর্কে বলেন- সে নিজেকে গুনাহ থেকে বিরত রাখে এবং নেককারদের সব নেকী তার জন্য লেখা হয়। (ইবনু মাজাহ, হাদিস: ১৭৮১)

এছাড়াও রমজানের শেষ দশকে ফিতর বেশি বেশি দান-সদকা করা উচিত। যাদের ওপর জাকাত ফরজ হয়েছে, তাদের তা আদায় করে দেয়া উচিত এবং যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী অধিক পরিমাণে দান-সদকা করা উচিত।

অন্যদিকে শেষ দশকের অন্যতম আমল সাদ্‌কাতুল ফিতর আদায় করা ইবনু উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, প্রত্যেক গোলাম, আজাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত বয়স্ক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের ওপর রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদ্‌কাতুল ফিতর হিসাবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক সা’ পরিমাণ আদায় করা ফরজ করেছেন এবং লোকজনের ঈদের সালাতে বের হওয়ার আগেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৫০৩) 

ইব্‌ন আব্বাস (রা.) বর্ণিত অপর হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদ্‌কাতুল ফিতর রোজাকে বেহুদা ও অশ্লীল কথাবার্তা ও আচরণ থেকে পবিত্র করার উদ্দেশ্যে এবং মিস্‌কিনদের খাদ্যের ব্যবস্থার জন্য ফরজ করেছেন। যে ব্যক্তি তা (ঈদুল ফিতরের) নামাজের পরে পরিশোধ করে তা অন্যান্য সাধারণ দান-খয়রাতের অনুরূপ হিসাবে গণ্য। (আবূ দাউদ, হাদিস: ১৬০৯)

শেষ দশকে কিছু বিশেষ আমল বেশি গুরুত্বের সঙ্গে করা উচিত—

  • ইতিকাফ: শেষ দশকে মসজিদে অবস্থান করে ইবাদত করা সুন্নত। এটি নবী (সা.)-এর অন্যতম প্রিয় আমল ছিল।
  • নফল নামাজ ও তাহাজ্জুদ: শেষ রাতে উঠে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
  • কুরআন তিলাওয়াত: আল-কুরআনের সঙ্গে অধিক সময় কাটানো এবং অর্থ বুঝে পড়া এই সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আমল।
  • দোয়া ও ইস্তেগফার: আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও দোয়া করা উচিত।
  • সদকা ও দান: দরিদ্রদের সহায়তা করা এবং ফিতরা ও জাকাত যথাযথভাবে প্রদান করা।

রমজানের শেষ সময় বেশি বেশি আমল করলে আল্লাহর রহমত পাওয়া সহজ হয় এবং গুনাহ মাফের সুযোগ থাকে। রমজানের শেষ দশকের ইবাদত পুরো জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বলে মনে করেন ইসলামী চিন্তাবিদরা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা