প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৫ ১৪:৩১ পিএম
শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। এই মাস মুসলিমদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য ও তাকওয়া অর্জনের মাস। ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের একটি হলো রোজা, যা প্রত্যেক সক্ষম মুসলিমের জন্য ফরজ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রোযা শুধু আধ্যাত্মিক প্রশান্তিই দেয় না, বরং এটি শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত রোজা পালন করলে দেহের বিপাকক্রিয়া উন্নত হয়, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোযা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো’ (সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)।
পবিত্র রমজান মাসে ইবাদত-বন্দেগির গুরুত্ব অপরিসীম। এ সময় মুসলিমরা কুরআন তিলাওয়াত, তারাবিহ নামাজ এবং দান-সদকা বেশি করে পালন করে। হাদিসে বর্ণিত আছে, ‘রোযাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহূর্ত আছে—একটি ইফতারের সময়, অপরটি যখন সে তার রবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে’ (সহিহ বুখারি, মুসলিম)।
রমজানের রোযা শুধু আত্মশুদ্ধির মাধ্যমই নয়, বরং এটি দরিদ্র ও অভাবী মানুষের কষ্ট অনুধাবনের সুযোগ দেয়। ফলে সমাজে সহমর্মিতা ও সহানুভূতির বৃদ্ধি ঘটে। ইসলামিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা রোযার মাধ্যমে নিজেদের অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারেন, তারা সারা বছরই আত্মসংযম ও শৃঙ্খলার সঙ্গে জীবনযাপন করতে সক্ষম হন।
রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলেমগণ বলছেন, এটি মুসলিমদের জন্য এক প্রশিক্ষণের মাস, যা পুরো বছরের জন্য আত্মশুদ্ধি ও উন্নতির পথ দেখায়। তাই এই মাসের যথাযথ গুরুত্ব বুঝে সঠিকভাবে আমল করা প্রত্যেক মুসলিমের দায়িত্ব।
প্রত্যেক নেক আমলের নির্ধারিত সওয়াব ও প্রতিদান রয়েছে, যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমলকারীকে পুরস্কৃত করবেন। কিন্তু রোযার বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ রোযার বিষয়ে আছে আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে এক অনন্য ঘোষণা।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
كل عمل ابن آدم يضاعف الحسنة بعشر أمثالها إلى سبعمائة ضعف، قال الله تعالى : الا الصوم فإنه لى وانا أجزى به يدع شهوته وطعامه من أجلى.
মানুষের প্রত্যেক আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। একটি নেকীর সওয়াব দশ গুণ থেকে সাতাশ গুণ পর্যন্ত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, কিন্তু রোযা আলাদা। কেননা তা একমাত্র আমার জন্য এবং আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে এবং পানাহার পরিত্যাগ করেছে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৫১ (১৬৪); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৯৭১৪; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ৮৯৮৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৬৩৮