× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

বিজয়া দশমী শেষে আজ বিসর্জন

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২৮ এএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

একই দিনে তিথি হওয়ায় গতকাল শনিবার মহানবমীর পূজার পর দশমীর বিহিত পূজাও অনুষ্ঠিত হয় মণ্ডপে মণ্ডপে। তবে বিজয়া দশমীর অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা আজ রবিবার উদযাপন করবেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এর মধ্য দিয়ে আজ ইতি ঘটতে চলেছে এবারের দুর্গাপূজার সব আনুষ্ঠানিকতার। গতকাল সকাল থেকেই দেবীর বন্দনায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে ছিল বিষাদের ছায়া। ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টাসহ বিভিন্ন বাদ্যে, আলোকিত করা ধূপ আরতি ও দেবীর পূজা-অর্চনায় ফুটে ওঠে সেই চিত্র। আজ চোখের জলে বিসর্জন দেওয়া হবে প্রতিমাকে। মর্ত্যলোক ছেড়ে আবারও কৈলাসে ফিরে যাবেন দেবী দুর্গা। এরই মধ্যে হাসিমুখে দেবী দুর্গাকে বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভক্তরা। বিসর্জনের এই দিনে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইজিপি ময়নুল ইসলাম।

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের উপদেষ্টা পুরোহিত প্রণব চক্রবর্তী বলেন, ‘এবার নবমী তিথি শুক্রবার শুরু হয়ে শনিবার সকাল ৬টা ১৩ মিনিট পর্যন্ত ছিল। তাই আমরা ভোর থেকেই নবমীর বিহিত পূজা করেছি। এবার তিথি অনুযায়ী নবমী পূজা সকাল ৯টা ২০ মিনিটের মধ্যে শেষ করার নিয়ম ছিল। এখানে সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে নবমী পূজা শেষ করে ৮টা ৫০ মিনিটে ভক্তরা দেবীকে অঞ্জলি প্রদান করেন। পরে শুরু হয় দশমীর বিহিত পূজা।’

তিনি বলেন, ‘সকাল ৬টা ১৪ মিনিট থেকে দশমী তিথি শুরু হয়েছে। এই দশমী তিথি থাকবে রবিবার রাত পৌনে ৪টা পর্যন্ত। দশমী তিথিতে দিনের মধ্যে পূজা করার নিয়ম আছে। এজন্য আমরা নবমীর পরই দশমী পূজা করছি।’

দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য আচার নিয়ে গতকাল প্রণব চক্রবর্তী বলেন, ‘আরও অনেক কিছু সংযুক্তি রয়েছে। যেমন সিঁদুর খেলা, মাকে মিষ্টি দান, শোভাযাত্রা এবং প্রতিমা বিসর্জন। এগুলো করা হবে রবিবার (আজ)।’

দশমীর দিন দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের নিয়ম থাকলেও এবার সেটি না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে প্রণব চক্রবর্তী বলেন, ‘দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের নিয়ম। তবে পাশাপাশি আরও একটি নিয়মও আছে। ওই দিনের মধ্যে যদি শ্রবণা নক্ষত্রের শেষ প্রাত হয়, তাহলে দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জন দিতে হবে। কিন্তু আজকে (গতকাল) শ্রবণা নক্ষত্রের শেষ প্রাত হচ্ছে অনেক রাতে। ফলে রাতে তো বিসর্জন দেওয়া যাবে না। এজন্য কাল (আজ) বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। তবে দশমীর যে পূজা, সেটি আজ (গতকাল) দিনেই করা হচ্ছে।’

ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের প্রধান পুরোহিত ধর্মদাশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘নবমীতে এসেই পূজার ষোলোকলা পূর্ণ হয় এবং বিদায়ের সুর বাজে। দশমীতে বিদায় জানানো হয়। এবার নবমীতেই দর্পণ বিসর্জন হয়েছে, ফলে মাকে আমরা বিদায় দিয়েছি। প্রতীকীভাবে মায়ের বিদায় হবে কাল (আজ)।’

সনাতন ধর্মমতে, নবমীর পুণ্য তিথিতে অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটিয়ে বিশ্বে শুভ শক্তির প্রকাশ ঘটিয়েছিলেন দেবী দুর্গা। নবমী তিথি শুরু হয় সন্ধিপূজা দিয়ে। তিথি অনুযায়ী সন্ধিপূজা আয়োজিত হয় গত শুক্রবার। অষ্টমীর শেষ ২৪ মিনিট ও নবমীর প্রথম ২৪ মিনিট সর্বমোট ৪৮ মিনিটে সন্ধিপূজা হয়। এ সময় মূলত দেবী চামুণ্ডার পূজা করা হয়। এ সময়েই দেবী দুর্গার হাতে বধ হয়েছিল মহিষাসুর, আর রাম বধ করেছিলেন রাবণকে। এ দিনকেই দুর্গাপূজার অন্তিম দিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ পরের দিন কেবল বিসর্জনের পর্ব। নবমীর রাতে উৎসবের রাত শেষ হয়। আর দশমী রাতে মণ্ডপে মণ্ডপে বিদায়ের ঘণ্টা বাজে। তবে এ বছর একই দিনে তিথি হওয়ায় নবমী ও দশমীর পূজা অনুষ্ঠিত হয় গতকাল শনিবার সকালে।

গোপীবাগে রামকৃষ্ণ মিশনে গতকাল সকাল ৮টা ২৬ মিনিটে শুরু হয় নবমী পূজা। সকালে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে পূজায় অঞ্জলি নিতে হাজির হন ভক্তরা। অতিরিক্ত বৃষ্টির মধ্যে অনেককেই যানবাহনের জন্য দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে ঠিক সময়ে মণ্ডপেও পৌঁছাতে পারেননি। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ভোর থেকেই নবমীর বিহিত পূজা অনুষ্ঠিত হয়। 

গতকাল রামকৃষ্ণ মিশনে পূজা দিতে আসা অদ্রিতা সেন বলেন, ‘আমাদের সব কষ্ট দূর করে তিনি (দেবী দুর্গা) চলে যাবেন। এক বছর পর মা আবার আসবেন। আগামী বছর আবার আমাদের মাঝে এসে শান্তি বিলিয়ে দিয়ে যাবেন এই কামনা করি।’

রাহুল দেন নামে আরেকজন বলেন, ‘দেখতে দেখতে মায়ের বিদায়ে সুর বেজে উঠে গেল। শেষবেলায় তার কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের সবাইকে ভালো রাখেন।’ 

হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রতি শরতে কৈলাস ছেড়ে কন্যারূপে মর্ত্যলোকে আসেন দেবী দুর্গা। তার এই ‘আগমন ও প্রস্থানের’ মধ্যে আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী থেকে দশমী তিথি পর্যন্ত পাঁচ দিন চলে দুর্গোৎসব। মহালয়ার মধ্য দিয়ে ২ অক্টোবর এবারের দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছিল। ওই দিন থেকেই দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতার সূচনা হয়। এরপর গত বুধবার ষষ্ঠী থেকে পাঁচ দিনের যে দুর্গোৎসব শুরু হয়েছিল, আজ রবিবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হতে চলেছে এ আয়োজন। মাঝখানে বৃহস্পতিবার নবপত্রিকায় প্রবেশ ও স্থাপনে হয় মহাসপ্তমী। পরদিন শুক্রবার সকালে কুমারী পূজার পাশাপাশি মহাঅষ্টমীর বিহিত পূজা এবং সন্ধিপূজা হয়।

পূজা উদযাপন পরিষদ জানিয়েছে, দেশের ৩১ হাজার ৪৬১টি মন্দির ও মণ্ডপে এবার পূজা হচ্ছে। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ৪০৮টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে এবার ২৫২টি পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে, গত বছর হয়েছিল ২৪৮টিতে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা