প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৫৪ পিএম
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ২১:১৭ পিএম
স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদ্যরা ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে। ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক রাজ্যের বাফেলো শহরে দুই প্রবাসী বাংলাদেশি দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। শনিবার (২৭ এপ্রিল) দিন দুপুরে বাফেলোর জেনার স্ট্রিটে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
এ হত্যাকাণ্ড প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্কা তৈরি করেছে। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবিবার (২৮ এপ্রিল) সকালে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির নেতারা।
পুলিশ জানায়, বাফেলোর জেনার স্ট্রিটে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দুই বাংলাদেশি দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয়। তাদের হত্যা করার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। ঘটার সময় তারা এক প্রবাসী বাংলাদেশির বাড়িতে মেরামতের কাজ করছিলেন।
প্রবাসীদের গণমাধ্যম ‘বাফেলো বাংলার’ ফেসবুক পেইজ থেকে জানা যায়, শনিবার নিহতদের একজনের নাম বাবুল। তার বয়স ৩৬ বছর।তিনি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার হরিপুর উত্তরপাড়ার মৃত আবদুল আজিজের ছেলে।
একই ঘটনায় নিহত দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম ইউসুফ। তার বয়স ৫৮। গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায়।
বাফেলোর কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মতিউর রহমান লিটু নামের এক সাংবাদিক বলেন, নিহতদের একজন ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। দ্বিতীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।
টুডব্লিউজিআরজেড নামের একটি স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াতকে খরব দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে। আলমত সংগ্রহ করেছে।
আগের দিন শুক্রবার বাফেলোর ইয়াং স্ট্রিটে রাত ৯টার সামান্য আগে দুর্বৃত্তদের হাতে প্রাণ হারান স্থানীয় এক যুবক। তার বয়স ৩১ বছর। তাকে একাধিক গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।
তথ্যমতে, কানাডা সীমান্তের পার্শ্ববর্তী যুক্তরাষ্ট্রের বাফেলো শহরে ৫০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি থাকেন। দুই প্রবাসীকে হত্যার ঘটনায় তাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় কমিউনিটি নেতা আবুল বাশার ও সাংবাদিক মতিউর রহমান লিটু জানান, হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে তারা রবিবার ৯৯৫ ফিলমোর অ্যাভিনিউতে জড়ো হবেন। দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাবে।
এদিকে দুই বাংলাদেশির মৃত্যুতে তাদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
নিহত বাবুল মিয়ার বড় ভাই হাবিবুর রহমান জানান, বাবুল মিয়া ১৯৯১ সালে ডিভি লটারিতে আমেরিকা যান। ২০১০ সালে পরিবারকে আমেরিকা নিয়ে যান। গত এক বছর আগে তিনি একা বাড়িতে আসেন। ১৫দিন গ্রামের বাড়িতে থেকে আমেরিকায় চলে যান।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, বাবুল মিয়া আমাদের সবার ছোট ভাই ছিল। খুব আদরের ভাই ছিল। তার মৃত্যু সংবাদে পরিবারের লোকজন আজ বাকরুদ্ধ। তার মৃত্যু সংবাদ শুনে আত্মীয়স্বজনরা বাড়িতে আসছেন। তিনি বাবুল মিয়া হত্যাকারীদের বিচার দাবি করেন।
ইউসুফের স্বজনরা জানান, আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন নিয়ে মাত্র এক বছর আগে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পাড়ি দিয়েছিলেন আবু সালেহ ইউসুফ জনি। কিন্তু স্বপ্ন ডানা মেলার আগেই দুর্বৃত্তরা কেড়ে নিল তার জীবন। এতিম হয়ে গেল দুই শিশু কন্যা।
ইউসুফের বাবা কানাইঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির নুরুল হক মেম্বার বলেন, ‘পরিবারের মুখে হাসি ফুটানোর পাশাপাশি নিজের বাচ্চাদের ভালো প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করাবেন এই স্বপ্ন নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলেন ইউসুফ। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। আজ আমার ‘ধন’ দুনিয়াতে নেই।’