প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৮ পিএম
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৪৯ পিএম
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল প্রত্যাখান করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ সময় অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির সমর্থনে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) স্থানীয় সময় বিকালে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহাটনে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয় নেতাকর্মীরা।
এ সময় বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বেবী নাজনীন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ভুইয়া মিল্টন, জিল্লুর রহমান জিল্লু, গিয়াস আহমেদ, আব্দুল লতিফ সম্রাট, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন ভুইয়া, নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপির সভাপতি আতিকুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সাঈদ উর রহমান, নিউইয়র্ক মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, নিউইয়র্ক মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি আহবাব চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতাকর্মী।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে পুলিশের হামলা, গুলিবর্ষণ ও নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন এবং গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য দেন বিএনপির নেতারা।
এই বিষয়ে ইতোমধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বেবী নাজনীন বলেন, ‘বর্তমান সরকার নির্যাতনের সীমা অতিক্রম করেছে। তারা ভোট ডাকাতির মধ্যে দিয়ে জোর করে ক্ষমতায় থাকতে গিয়ে গোটা দেশকে কঠিন বিপদে ফেলেছে। আবারও একতরফা নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। প্রকৃতপক্ষে দেশবাসী এই অবৈধ তফসিল মানে না। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ভুঁইয়া মিল্টন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহারের মাধ্যমে বিএনপিসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে অন্যায়ভাবে কারাগারে রেখেছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে আবারও গায়ের জোরে একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করতে চায় সরকার। সেজন্যই রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়াই সরকারের অনুগত নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে দ্বাদশ সংসদের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ সমগ্র দেশবাসীসহ গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই একতরফা তফসিলকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে।
তিনি বলেন, অতি শিগগিরই শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ না হলে দেশের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। যা থেকে দেশকে বাঁচানো অসম্ভব। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অগণতান্ত্রিকভাবে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে কালক্ষেপণ না করে অবিলম্বে গ্রেপ্তার সকল নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
গিয়াস আহমেদ বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে কোনোমতেই বাংলাদেশ সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তার প্রমাণ বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও মহাসমাবেশে গুলিবর্ষণ। এসবের মধ্যেই আবারও একতরফা নির্বাচন করতে তড়িঘড়ি করে তফসিল দেওয়া হয়েছে। আমরা এই তফসিল প্রত্যাখান করছি।
জিল্লুর রহমান জিল্লু বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে। অথচ সমগ্র দেশের মানুষ অবিলম্বে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছেন। গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই দাবিতে সরকারকে বার বার সতর্ক করছে। এরই মধ্যে আমেরিকা বাংলাদেশে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা নিয়ে নতুন ভিসানীতি ঘোষণা ও কার্যকর করেছে। আমরা অবিলম্বে সরকারকে নির্যাতনের পথ পরিহার করে পদত্যাগের আহ্বান জানাই। অন্যথায় মাশুল দিতে হবে।
বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। এরপরই বিএনপিসহ সমমনা দল এবং জোটগুলো তফশিল প্রত্যাখান করে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছে। একইভাবে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনও তফসিল প্রত্যাখান করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে।