× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আমিরাতে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা চায় প্রবাসীরা

কামরুল হাসান জনি, ইউএই

প্রকাশ : ১০ মে ২০২৩ ১৬:৫১ পিএম

আপডেট : ১০ মে ২০২৩ ১৭:৩২ পিএম

সংগৃহীত ছবি

সংগৃহীত ছবি

দুবাইপ্রবাসী ফেনীর মোহাম্মদ ইছমাইল মাস্টার্স শেষ না করতে পারার মনোকষ্টে ভুগছেন। মাস্টার্সের সনদ থাকলে কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সুযোগ ছিল তার। আপাতত তিনি এই সুযোগ কাজে লাগাতে পারছেন না।

কুমিল্লার মোবারক হোসেন এসএসসি শেষ করে আমিরাতে পা রাখেন। বর্তমানে কাজ করছেন একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে। অসমাপ্ত পড়ালেখা শেষ করার খুবই আগ্রহ তার।

আরেক প্রবাসী মোহাম্মদ সোলাইমান কাজ করেন একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে। এইচএসসি শেষ করা এই তরুণও চান নিজের পড়ালেখা শেষ করতে। তাতে পরবর্তীতে মানসম্মত একটি কাজের ব্যবস্থাও হতে পারে।

কিন্তু কর্মক্ষেত্রের চাপ, সময়-সুযোগ ও উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় ইছমাইল, মোবারক, সোলাইমানদের নতুন করে পড়ালেখা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় প্রবাসীদের অসমাপ্ত শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে দেশটিতে থাকা প্রবাসীরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা চালুর দাবি করে আসছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে বর্তমানে ১০ লক্ষাধিক প্রবাসী বাংলাদেশির বসবাস। দেশটির দুবাইয়ের শ্রমঘন অঞ্চল সোনাপুর। যেখানে প্রায় ৭০ হাজারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। আমিরাতে এমন শ্রমঘন অঞ্চল আছে আরও বেশ কয়েকটি। এসব অঞ্চলে কাজ করছেন কয়েক লাখ বাংলাদেশি। এসব অঞ্চলের প্রবাসীদের ভাষাজ্ঞান, দক্ষতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতায় পিছিয়ে থাকায় এশিয়ান শ্রমিকদের মধ্যে সবচেয়ে কম মজুরিতে শ্রম বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ নতুন করে শিক্ষাগ্রহণ ও দক্ষতা বাড়াতে পারলে মানসম্মত কাজ পাওয়ার যেমন সুযোগ আছে, তেমনি আছে কর্মস্থলে পদোন্নতির সম্ভাবনা। যা রেমিট্যান্স হিসেবে দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।

প্রবাসীরা জানান, অধিকাংশ প্রবাসী কর্মের সন্ধানে মধ্যপ্রাচ্যে আসেন খালি হাতে। ভাষাজ্ঞানের স্বল্পতা, অদক্ষতা ও শিক্ষাগত দিক থেকে পিছিয়ে থাকায় অন্যান্য দেশের শ্রমিকদের তুলনায় কম মজুরিতে কাজ করতে হয় তাদের। অনেকে আবার এসএসসি শেষ করে বা এইচএসসি অধ্যয়নরত অবস্থায় প্রবাসী হচ্ছেন। হঠাৎ করে শিক্ষাঙ্গণ ছেড়ে আসা যুবক প্রবাসে পা রাখলে বুঝতে পারেন, দেশে আরেকটু পড়ালেখার প্রয়োজন ছিল। আরও দু-একটি সার্টিফিকেট অর্জন করা গেলে মানসম্মত কাজ ও কর্মস্থলে পদোন্নতির সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রবাসে সেই সুযোগ আর পাচ্ছেন না তারা। তাই কম মজুরিতে শ্রম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।  

আজমানের সিটি প্রাইভেট স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা জুইয়েনা আক্তার বলেন, ‘পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য অনেকে লেখাপড়ার মাঝপথে বিদেশে পাড়ি জমান। প্রবাসে কর্মক্ষেত্রে নানা সমস্যার সম্মুখীন হলে বুঝতে পারেন আরেকটু পড়ালেখার প্রয়োজন ছিল। একটি সার্টিফিকেটের দরকার ছিল। কিন্তু প্রবাসে সেই সুযোগ থাকে না। অথচ প্রবাসীদের কর্মক্ষেত্রে উন্নতি ও আমিরাতের নতুন ভিসা নীতির কারণে শিক্ষাগত সনদ থাকা এখন খুবই জরুরি।’

আমিরাতের কিংস্টন ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজির (কেআইএমটি) এডুকেশনাল অ্যাডভাইজার প্রিন্সিপাল ড. মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের বাইরে থাকা বাংলাদেশিদের অনেকের ডিগ্রি সম্পন্ন না থাকায় যথাযথ বেতনে কাজ পান না। কারিগরি প্রশিক্ষণ বা স্বপেশায় প্রশিক্ষিত না হওয়ায় অনভিজ্ঞ হিসেবে তুলনামূলক কম বেতনে কাজ শুরু করেন। অথচ তাদের যোগ্যতা ও দক্ষতা বাড়াতে পারলে আয়ের পরিমাণ বাড়বে কয়েকগুণ।’

আমিরাতের বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতা নওশের আলী প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিশ্বের সমৃদ্ধশালী দেশগুলোর মধ্যে যোগ্য ও দক্ষ শ্রমিকের প্রতিযোগিতা চলছে। নিজের পড়ালেখা শেষ করতে পারলে প্রতিযোগিতার বাজারে প্রবাসী বাংলাদেশিরাও যোগ্যতা যাচাইয়ে একটি সুযোগ পাবেন। বাড়বে কর্মস্থলে পদোন্নতির সম্ভাবনা। যার সরাসরি লাভ উঠাতে পারবে দেশের অর্থনীতি। এজন্য দীর্ঘদিন ধরে আমিরাতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা চালু করার দাবি করে আসছি। যাতে প্রবাসীরা তাদের অসমাপ্ত পড়ালেখা শেষ করতে পারেন।’

তিনি বলেন, ’অসংখ্য কর্মজীবী প্রবাসীর পুনরায় পড়ালেখা করার ইচ্ছা আছে। দক্ষিণ কোরিয়া, কাতার ও সৌদি আরবে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে রেমিট্যান্স যোদ্ধারা শিক্ষালাভের সুযোগ পাচ্ছেন। আগ্রহী আমিরাতপ্রবাসীদের লেখাপড়া শেষ করার সুযোগ দিতে বিষয়টি দুবাই ও উত্তর আমিরাতের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের নজরে আনা হয়।’

এসব বিষয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামাল হোসেন জানান, কনস্যুলেট থেকে প্রক্রিয়াটি শুরু করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তারা। আমিরাত থেকেই যাতে প্রবাসীরা কাঙ্ক্ষিত কোর্স সম্পন্ন করতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী নিবন্ধন ও টাকা জমা করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে কনস্যুলেট। এজন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্র উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। অচিরেই দুবাই ও উত্তর আমিরাতপ্রবাসীরা তাদের কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাকার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা