পিরোজপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ মে ২০২৩ ১৭:৩৭ পিএম
আপডেট : ০১ মে ২০২৩ ১৮:১৯ পিএম
মোহাম্মদ শামীম হোসেন। প্রবা ফটো
দালালের মাধ্যমে দুবাই গিয়ে বিভীষিকাময় জীবন পার করছেন পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার মোহাম্মদ শামীম হোসেন নামে এক যুবক। তিনি উপজেলার নদমূলা ইউনিয়নের দারুলহুদা গ্রামের আব্দুল হাই সরদারের ছেলে।
শামীমের পরিবার জানায়, ভাণ্ডারিয়া পৌরসভার কানুয়া এলাকার আব্দুল কাদের হাওলাদারের ছেলে দুলাল হাওলাদার শামীমকে উচ্চ বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তিন লাখ টাকার বিনিময় দুবাই নিয়ে যায়। কিন্তু শামীম দুবাই যাওয়ার পর পাল্টে যায় দুলালের আচরণ। সেখানে ছিনিয়ে নেওয়া হয় শামীমের পাসপোর্ট এবং নিয়ে যাওয়া হয় একটি অজ্ঞাত স্থানে। এরপর তার কাছ থেকে দাবি করা হয় আরও আড়াই লাখ টাকা। টাকা দিতে না পারায় চলে অমানবিক শারীরিক নির্যাতন।
রবিবার (৩০ এপ্রিল) শামীম একটি ভিডিও বার্তায় জানান, মা-বাবার স্বপ্ন পূরণের জন্য গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তিন লাখ টাকা ঋণ করে দালালের মাধ্যমে দুবাই আসেন কাজের সন্ধানে। কিন্তু দুবাই পৌঁছানোর পর দালাল মারধর করে তার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয় এবং দুবাইয়ের একটি অজ্ঞাত স্থানে একটি কক্ষে রেখে যায়। তিন মাস হয়ে গেলেও দুলাল হাওলাদার তাকে কোনো চাকরির সন্ধান দেয়নি। মোবাইলে ফোন করলেও দুলাল রিসিভ করে না।
শামীম আরও জানান, গ্রামের বাড়ি থেকে স্বজনরা কিছু টাকা ধার করে পাঠালে তা থেকে কোনো রকমে জীবন বাঁচিয়ে রাখছেন তিনি। একবেলা খেলে দুই বেলা না খেয়ে থাকতে হচ্ছে।
সম্প্রতি দুলাল এসে তার ওপর শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে এবং আরও আড়াই লাখ টাকা দাবি করে। দুলালকে ওই টাকা দিলে সে তাকে দেশে পাঠাবে বলে জানায়। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় শামীমের ওপর চলে শারীরিক নির্যাতন। নির্যাতনের ফলে শামীমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ওই বন্দিদশা থেকে পালিয়ে দুবাইয়ে ভাণ্ডারিয়া এলাকার পরিচিত এক লোকের কাছে গিয়ে আশ্রয় নেন তিনি।
শামীম জানান, তার পাসপোর্ট ওই দালালের কাছে। টাকার অভাবে তিনি কীভাবে দেশে ফিরবেন তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। এ অবস্থায় পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ ও ভাণ্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসিলামের কাছে বেঁচে থাকার আকুতি জানান শামীম।
ভিডিওতে শামীম বলেন, ‘দুবাই যাওয়ার আগে আমি ভাণ্ডারিয়া ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম।’
ভাণ্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। এলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’