× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

গ্লোবাল ভিলেজের ফেস্টিভ্যালে এবারও নেই বাংলাদেশ, হতাশ প্রবাসীরা

কামরুল হাসান জনি

প্রকাশ : ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৫৪ পিএম

আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:২৮ পিএম

দুবাইয়ে বসেছে গ্লোবাল ভিলেজের ২৭তম শপিং ফেস্টিভ্যাল। ছবি : প্রবা

দুবাইয়ে বসেছে গ্লোবাল ভিলেজের ২৭তম শপিং ফেস্টিভ্যাল। ছবি : প্রবা

বিকালে দ্বার খোলে প্রবেশের। সময় গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই বাড়ে ভিড়। দলে দলে যোগ দেন পর্যটক ও ক্রেতারা। দিন যত বাড়ছে, আসর ততই জমছে। দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে আর বাহারি পণ্যে। মঞ্চগুলো সেজেছে নিজস্ব সংস্কৃতির ঢংয়ে।

কথা বলছি দুবাইয়ের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রদর্শনীর বৃহত্তর আয়োজন গ্লোবাল ভিলেজ নিয়ে। এটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের শীতকালীন ‘শপিং ফেস্টিভ্যাল’ -এর সবচেয়ে বড় আসর। প্রায় তিন দশক ধরে চলা এই মেলার এবার বসেছে ২৭তম আসর, যা চলবে এপ্রিলের শেষ পর্যন্ত। ছয় মাসব্যাপী মেলায় এবার ২৭টি আলাদা প্যাভিলিয়ন স্থান পেয়েছে। 

বিশ্ব বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুবাই গ্লোবাল ভিলেজ শপিং ফেস্টিভ্যাল অন্যতম স্থান। নিজেদের পণ্যকে রপ্তানিযোগ্য ও ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে প্রতিবছরই বিভিন্ন দেশ অংশ নেয় এ ফেস্টিভ্যালে। 

তবে বৈশ্বিক বৃহত্তম প্রদর্শনীতে এবারও নেই বাংলাদেশ। রেমিট্যান্সের বিবেচনায় আরব আমিরাত দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রম বাজার, অথচ গ্লোবাল ভিলেজ শপিং ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের কোনো অংশগ্রহণ নেই। ধারাবাহিকভাবে গত কয়েক আসরে ঢাকার অনুপস্থিতি হতাশ করছে মেলায় ঘুরতে আসা স্বদেশি দর্শনার্থীদের। এতে দেশীয় পণ্যের বাজার ধরা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ।

চলতি আসরে নতুন করে যোগ হয়েছে ওমান ও কাতার প্যাভিলিয়ন। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সৌদি আরব (কেএসএ), বাহরাইন, কুয়েত, আফগানিস্তান, আফ্রিকা, আমেরিকা, চীন, মিশর, ইউরোপ, ভারত, ইরান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, লেবানন, মরক্কো, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, সিরিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, ইয়েমেন এবং রাশিয়ার আলাদা প্যাভিলিয়ন রয়েছে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিকাল চারটায় মেলার প্রবেশপথ উন্মুক্ত করা হয়। দলে দলে মেলায় যোগ দেন পর্যটক ও দর্শনার্থীরা। প্রতিদিন নানা দেশের, নানা বয়সের দর্শনার্থী ভিড় করছেন মেলায়। দিন যত বাড়ছে, মেলা ততই জমে উঠছে। 

মেলায় ক্রেতা ও দর্শক টানতে প্রতিবারের মতো এবারও প্যাভিলিয়নগুলো সাজানো হয়েছে নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা, নিদর্শন ও স্বদেশি বাহারি পণ্যে। মেলার মূল মঞ্চ ছাড়াও প্রতিটি প্যাভিলিয়নে নিজস্ব দেশের সংস্কৃতি উপস্থাপনের সুযোগ দিতে তৈরি করা হয়েছে সাংস্কৃতিক মঞ্চ। এ ছাড়া আছে শিশু-কিশোরদের জন্য আলাদা খেলাধুলা ও বিনোদনের ব্যবস্থা।

চলমান মেলায় ‘রোড অব এশিয়া’কে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রাখা হয়েছে। যেখানে প্রায় ৪৩টি ছোট ছোট স্টল ও পথচারীদের জন্য একটি রাস্তা রাখা হয়েছে। এশিয়া মহাদেশের প্রাচীন সভ্যতা, সংস্কৃতি ও নানা ঐতিহ্য এখানে তুলে ধরা হচ্ছে। যেসব দেশের প্যাভিলিয়ন নেই, সেসব দেশের পণ্য সরবরাহ করছে ছোট ছোট এই স্টলগুলো। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই, লাওস, হংকং, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও ফিলিপাইনের নাম রয়েছে। 

গ্লোবাল ভিলেজ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে চল্লিশ হাজারের অধিক পর্যটক ও দর্শনার্থী টানছে গ্লোবাল ভিলেজ। গত আসরে মেলায় দর্শনার্থী ছিল প্রায় ৭৮ লাখের মতো। করোনার ধাক্কা সামলে নেওয়ায় এবার আরও বেশি দর্শনার্থী টানতে সক্ষম হবে গ্লোবাল ভিলেজ।

কলকাতার ষাটোর্ধ্ব এক নারী দর্শনার্থী মেলা ঘুরে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘দুবাইতে বেড়াতে আসার সুবাদে গ্লোবাল ভিলেজ দেখতে এসেছি। এখানে বিভিন্ন দেশের আলাদা ঐতিহ্য, সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে গ্লোবাল ভিলেজ বৈচিত্র্যের মাঝে এক ঐক্য।’

মেলা ঘুরে আরও কয়েকজন ভারতীয় নিজ দেশের প্যাভিলিয়নের প্রশংসা করেন। খাবারের পরিবেশনা ও বৈশ্বিক এই আয়োজনের মাধ্যমে নিজ দেশকে তুলে ধরার সুযোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।

অপরদিকে প্রতিদিনের বাংলাদেশের কাছে হতাশা ব্যক্ত করেন মেলায় ঘুরতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। 

আমেরিকা থেকে দুবাইয়ের গ্লোবাল ভিলেজ দেখতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশি মর্তুজা আহমেদ বলেন, ‘ছয় মাসের এই মেলার বিশ্বব্যাপী খ্যাতি আছে। বাবা-মা ও পরিবার নিয়ে গ্লোবাল ভিলেজ দেখতে এসেছি। তাদের আয়োজন দেখে আমরা মুগ্ধ। তবে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন না থাকায় হতাশ হয়েছি। নিজ দেশের অংশগ্রহণ থাকলে আরও ভালো লাগত।’

প্রবাসী বাংলাদেশি গোলাম মোস্তফা বলেন, আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। ঐতিহ্য আছে। বিশ্বের কাছে সেসব তুলে ধরার একটি বড় সুযোগ এই গ্লোবাল ভিলেজ। সেদিক থেকে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। আবার ব্যবসায়িক পণ্য উপস্থাপনের মাধ্যমেও এখানে বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগটিও আমাদের কাজে লাগানো উচিত। 

সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ আহমেদ সিআইপি জানান, ‘ছয় মাসব্যাপী এই মেলার প্যাভিলিয়ন ভাড়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল। বিনিয়োগের তুলনায় আয়ের পরিমাণ কম। দর্শনার্থী থাকলেও ক্রেতা কম। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া সরাসরি এই মেলায় অংশগ্রহণ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কম। তবে দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি উপস্থাপন ও মানসম্মত পণ্যের বাজার ধরতে সরকারি উদ্যোগ নেওয়া গেলে আগামীতে বাংলাদেশও এই মেলায় অংশীদার হতে পারবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা