প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৪ ১৮:১৪ পিএম
আপডেট : ১৯ মে ২০২৪ ১৮:১৪ পিএম
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারত ও চীনের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের তাদেরকে এখানে বেশি করে যুক্ত করে কাজ করা দরকার। আমরা সেই পথেই কাজ করছি।’
রবিবার (১৯ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘রোহিঙ্গা সংকট: ভবিষ্যৎ পথরেখা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ওভারসিজ করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ওকাব) সভাপতি নজরুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ডিপ্লোমেটিক পথে সমাধানে যাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা হয়েছে। এটি আমাদের অনুকূলে আছে। এর মাধ্যমে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কিছু পরামর্শ দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছিল। তারা আন্তর্জাতিক চাপের কারণে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আগ্রহী। তাছাড়া বর্তমানে রাখাইনের আর্মিরা নিরাপত্তার কারণে আমাদের দেশে পালিয়ে এসেছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদেরকে তো রাখাইনে পাঠানো যায় না।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে রোহিঙ্গাদের জন্য দেওয়া আন্তর্জাতিক ফান্ডিং কমে গিয়েছিল। বর্তমানে তা বাড়তে শুরু করেছে। কেউ কেউ বলছেন রোহিঙ্গারা যে রেশন পায় তা তারা বাইরে বিক্রি করে দেয়, অর্থাৎ তারা পর্যাপ্ত রেশন পাচ্ছে।’
মিয়ানমারের ইতিহাস সংঘাতপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গত ৭০ থেকে ১০০ বছর যাবত মিয়ানমারে সংঘাত ছিল, বর্তমানেও তা আছে। তাদের এসব সংঘাতকে অজুহাত হিসাবে দাঁড় করানো যায় না।’
কিরগিজস্তানে বাংলাদেশসহ বিদেশি শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয়দের হামলা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ছাত্রদের ওপর যে হামলা হয়েছে তা রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে। আমাদের কোনো ছাত্র গুরুতর আহত হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রদূত কিরগিজস্তানের বিষয়টি দেখে থাকে। রাষ্ট্রদূতকে দেশটিতে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে বলেছি।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ প্রমুখ।
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের রাজনৈতিকভাবে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রশংসিত হয়েছিলেন। বর্তমানে এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা প্রতি বছর ৩০ হাজার সন্তান জন্ম দিচ্ছে। কক্সবাজার ও উখিয়ার মূল জনগোষ্ঠীর চেয়ে তাদের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। বর্তমানে ইউক্রেন- রাশিয়া, গাজা যুদ্ধের কারণে বিশ্ব মনোযোগ বদলে গেছে। রোহিঙ্গারা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো কোনো সময় শুধু কূটনীতি দিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব হয় না। যেমন বর্তমানে ইউক্রেন- রাশিয়া, গাজা যুদ্ধে হচ্ছে না। ভারত আমাদেরকে ১৯৭১ সালে আশ্রয় দিয়ে ইন্দিরা গান্ধী বিশ্বনেতৃবৃন্দের মনোযোগ আকর্ষণ করেছিলেন। আমাদেরকেও আন্তর্জাতিক মনোযোগ বাড়াতে হবে। কেননা মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও গণতান্ত্রিক অংসান সূচিসহ সকল মহলের মানসিকতা হচ্ছে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বাইরে রাখবে। এখনই রোহিঙ্গাদেরকে তাদের দেশ ফেরত পাঠাতে হবে। আগামীতে এরা বিষফোঁড়ার মতো হয়ে জাতির জন্য ক্যান্সার হিসেবে দেখা দিবে।’