প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৪ ১৬:৫২ পিএম
আপডেট : ০৯ মে ২০২৪ ১৭:২৫ পিএম
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে শিশু কল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স রুমে এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রবা ফটো
‘ভারতের কারণেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যা হয়েছে’ এমন মন্তব্য করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। এ গণতন্ত্র আমাদের পুনরুদ্ধার করতে হবে। অন্য কেউ আমাদের গণতন্ত্র এনে দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক বাংলাদেশে তাদের আগ্রাসনের কোনো তারতম্য হবে না। তবে ভারতের নির্বাচনে মোদি ম্যাজিক দেশটির জনগণ বয়কট করেছে।’
বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদের কনফারেন্স রুমে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে দিল্লির নির্বাচন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও সংকট উত্তরণে গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মান্না বলেন, আমাদের গণতন্ত্র বন্ধ হয়ে গেছে। এটা আমাদেরই উন্মুক্ত করতে হবে। ভারত এটা করে দেবে না। বাংলাদেশে গণতন্ত্র হত্যার একমাত্র কারণ ভারত।
তিনি বলেন, আমাদের ডাকে দেশের জনগণ আন্দোলন করেছে, নির্বাচন বয়কট করেছে কিন্তু স্বৈরশাসক তো ক্ষমতা থেকে গেল না। তাহলে আমরা কি ব্যর্থ হয়েছি? বাংলাদেশে বর্তমান যে জুলুমবাজ স্বৈরশাসক সরকার আছে পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো দেশে এমন সরকার দেশ পরিচালনা করেনি। এরা দেশের প্রতিটা খাত চুরি করে খেয়ে ফেলেছে। সরকার অর্থনীতি ধ্বংস করে বিদেশি ঋণে জর্জরিত হয়ে গিয়েছে। দেশ গোল্লায় গেলেও এদের কিছু আসে যায় না। তারা তাদের নিজেদের স্বার্থে অটল। এ সরকারের সঙ্গে আপস করার মতো কোনো সুযোগ নাই।
তিনি আরও বলেন, গত নির্বাচনে দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ এ সরকারকে ভোট দেইনি, জনগণ এ সরকারকে ঘৃণা করে। গতকাল উপজেলা নির্বাচনও দেশের জনগণ বয়কট করেছে। ভারতও আজ বুঝে গেছে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। সরকার পতনের আন্দোলন করতে হলে আমাদের দমে গেলে হবে না। দেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে।
বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যায়। কিন্তু বাংলাদেশের ভোটাররা ভোট কেন্দ্রেও যায় না। সেই দিক থেকে পাকিস্তান আমাদের থেকে ভালো আছে।
তিনি বলেন, ভারত আজ বাংলাদেশকে দাসত্বে পরিণত করেছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলে ভারতের সঙ্গে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। সেই হিসেবে ভারত আমাদের স্বামী তারা তো আমাদের ওপর খবরদারি করবেই। সীমান্তে আমাদের দেশের জনগণকে যখন হত্যা করা হয় আমাদের দেশের মন্ত্রী এমপিরা বলে এটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তাহলে এ সরকারের অধীনে দেশের লোক কীভাবে নিরাপদে থাকবে। জামায়াতে ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সময় কী করেছে দেশ স্বাধীনের ৫৩ বছর পরে কেন তাদের যুদ্ধাপরাধীর তকমা শুনতে হবে। বিএনপি, জামায়াতের সঙ্গে রাজনীতি করে তাদের বলা হয় স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। আওয়ামী লীগ ভারতের কাছে আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য এ অপবাদ ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, দিল্লি বাংলাদেশে প্রতিবার নির্বাচনের আগে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য কাজ করে। বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গা আজ ভারতের দালালে ভরে গেছে। হাসিনা দুর্নীতিবাজ দুর্বৃত্ত মাফিয়াদের নিয়ে দেশ পরিচালনা করছে। দেশের ব্যাংকগুলো আজ শেষ করে ফেলেছে তারা। অথচ তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত টুকুও হয় না। বেনজিরের বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ তার বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত হয় না। এ স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে দিনক্ষণ ঠিক করে আন্দোলনে নামলে হবে না। সিনিয়র নেতাদের আহ্বান করব আপনারা আন্দোলনের কর্মসূচি দেন দেশের জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে।
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অহিদুজ্জামান দিপু, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুর রহমান ফুয়াদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ।