প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ মে ২০২৪ ১৭:১৫ পিএম
আপডেট : ০৫ মে ২০২৪ ১৭:১৬ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ড সফর থেকে ফিরে ২ মে ঢাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত বাম দলগুলোর প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন, ‘আমাকে উৎখাত করলে পরবর্তীতে কে আসবে?’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রবিবার (৫ মে) বিএনপির সরকারবিরোধী আন্দোলনের মিত্র দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের পরিবর্তে কারা দেশ চালাবে তা দেশের জনগণ নির্ধারণ করবে। একটি অবাধ,নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের সরকার ও নেতৃত্ব নির্বাচন করবে। কিন্তু কেউ যদি মনে করেন তারা ছাড়া আর কেউ চালাতে পারবে না- সেটা গণতন্ত্র নয়।’
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংহতি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সাইফুল হক বলেন, ‘ভোটের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি এবং অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ও সংবিধানের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়েই রাজপথে বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠেছে। বাস্তবে একটি কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসন রাজনৈতিক দল ও জনগণকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এই কৃতিত্ব অনেকখানি সরকার ও সরকারি দলের। এখানে অন্য কোনো ম্যাজিক নেই। ’
তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনে অতি বাম কারা আছে তা আমাদের জানা নেই। তবে সরকার ও সরকারি দলের রাজনৈতিক পরিমন্ডলের বাইরে থাকা বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল ঘরানার প্রায় সব দল স্বাধীনভাবে নিজেদের মত করে দল ও জোটগতভাবে গণতান্ত্রিক এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।’
তার সরকারের অপরাধটা কি- প্রধানমন্ত্রী এমন বক্তব্য প্রসঙ্গেও তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের বিপজ্জনক রাজনৈতিক দিক উল্লেখ করে বলেন, প্রথমত, সরকার পরিবর্তনের নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পথ সরকার বন্ধ করে দিয়েছে, দ্বিতীয়ত, দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বাস্তবে তারা বিদায় করে দিয়েছেন ও তৃতীয়ত, দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ দুর্বল ও ভঙ্গুর করে দিয়ে দেশের অবশিষ্ট বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক কাঠামোকে তারা নষ্ট করে দিয়েছেন। এসব তৎপরতার মধ্য দিয়ে দেশকে গভীর এক অনিশ্চয়তা ও ভয়ংকর বিপর্যয়ের পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব প্রদানকারী ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল হিসাবে টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর দেশকে সম্ভাব্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে এখন প্রধানমন্ত্রীর সরকার ও তার দল আওয়ামী লীগকে একটা অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়ে তাদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ দেওয়া দরকার। তা নাহলে সরকারের প্রতিহিংসা- প্রতিশোধের রাজনীতি দেশকে অনিবার্য বিপর্যয়ের খাদে নিপতিত হবে।’
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘৭ জানুয়ারি কথিত ডামি নির্বাচন সরকারকে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার রাজনৈতিক ও নৈতিক বৈধতা দেয়নি। সেকারণে এই সরকার যত প্রলম্বিত হবে দেশের বহুমাত্রিক সংকট তত বৃদ্ধি পাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব কালক্ষেপণ না করে বিদ্যমান গভীর রাজনৈতিক সংকট উত্তরণে সরকার ও সরকারি দল অচিরেই কার্যকরি বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শহীদুল আলম নান্নু, শহীদুজ্জামান লাল মিয়া, মহানগর সদস্য জোনায়েত হোসেন, বাবর চৌধুরী, নান্টু দাস প্রমুখ।