প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৫২ পিএম
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:০৮ পিএম
কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জিয়া প্রজন্ম দল কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক আয়োজিত বিএনপির সব রাজবন্দির নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বিএনপির জন্য দিনের আলো যেন নিষিদ্ধ। বিএনপির নেতাকর্মীরা মুক্ত বাতাস গ্রহণ করা থেকে নিষিদ্ধ। এদের সব সময় কারাগারে থাকতে হয়। বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারে ঢুকানো, ধরে ফেলা এই কর্মসূচি যেন শেখ হাসিনার শেষই হচ্ছে না। আমার মনে হয়, তিনি (শেখ হাসিনা) একটা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। এর কারণ হলো, তিনি জানেন তার কোনো জনসমর্থন নেই। জনসমর্থন না থাকলে সেই সরকাররা প্রচণ্ড স্বেচ্ছাচারী হয়, ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে এবং জনগণের আওয়াজ পেলেই তারা নিপীড়নভাবে সেটাকে দমন করে। সেই জিনিসটা বর্তমানে আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপির ২৫ থেকে ২৬ হাজার নেতাকর্মী একটা ডামি নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় চার মাস কারাগারে ছিলেন। কয়েক হাজার নেতাকর্মী এখনও কারাগারে বন্দি রয়েছে। এর জবাব কি শেখ হাসিনা দিতে পারবেন? এর জবাব যদি শেখ হাসিনা দিতে পারতেন তাহলে তিনি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিতেন। শেখ হাসিনা যেভাবেই হোক ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। তিনি আজকে বলেছেন, রাজবন্দি কেউ নেই ; রাজনৈতিক কারণে কেউ বন্দি নেই। যারা বন্দি রয়েছে তারা বিভিন্ন মামলার আসামি।’
শেখ হাসিনার উদ্দেশে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘রাজবন্দি নামে কোনো শব্দ কি আইনগ্রন্থে লেখা আছে? রাজনীতি যারা করে তাদের কারাগারে বিভিন্ন মামলা দিয়েই ঢুকানো হয়। এ রীতি ব্রিটিশ আমল থেকেই চলে আসছে। আপনার বাবা পাকিস্তান আমলে অনেকবার জেলে গিয়েছেন। সেখানে আপনার বাবা যে রাজনৈতিক কারণে জেলে গিয়েছেন সে কথা লেখা নেই। গাফফার চৌধুরীর একটা লেখা পড়ে জানতে পেরেছি, পাকিস্তান আমলে শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ১৭টা দুর্নীতির মামলা দিয়েছিল আইয়ুব খান। কিন্তু সারা দেশের মানুষ মনে করত শেখ মুজিবসহ
যারা রাজবন্দি রয়েছে তাদের নামে বিভিন্ন মামলা দিয়েই মূলত কারাগারে ঢুকানো হয়। উপমহাদেশে এ রকমভাবে অনেকেই কারাগারে গিয়েছেন। মহাত্মা গান্ধীসহ আরও অনেকেই কারাগারে গিয়েছেন। কিন্তু কোথাও রাজনৈতিক কারণে কারাগারে গিয়েছে সেটা লেখা থাকে না। যারা কায়েমি শাসক গোষ্ঠী তারা বিভিন্ন ধরনের অপরাধ দিয়ে তাদের নাম দেয়। আপনি বলছেন তারা (বিএনপির নেতাকর্মী) বিভিন্ন মামলার আসামি। এটা তো আপনি বলছেন! গোটা জাতি মনে করে আপনি ষড়যন্ত্র করে আন্দোলনকামী, গণতন্ত্রকামী, যারা সত্য কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশকতার মামলা, মিথ্যা মামলা দিয়ে আপনি তাদের কারাগারে বন্দি করে রেখেছেন।’
শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনার নামে যে ১৫টি মামলা ছিল, সেগুলো কি রাজনৈতিক কোনো মামলা ছিল? সেগুলো দুর্নীতির মামলা ছিল। আপনি ক্ষমতার জোরে সেটি উড়িয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আপনাকে বলে রাখি, প্রত্যেকটা জিনিসের রেকর্ড আছে।’
জিয়া প্রজন্ম দল কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট পারভীন কাউসার মুন্নীর সভাপতিত্বে এবং জিয়া প্রজন্ম দল কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব মো. সারোয়ার হোসেন রুবেলের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী শফু, সম্প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির প্রমুখ।