প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৫:১৬ পিএম
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৪ ১৫:৩৫ পিএম
শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রবা ফটো
কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়া কেউ কোনো থানা বা উপজেলা কমিটি গড়তেও পারবে না, ভাঙতেও পারবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রংপুর বিভাগের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কারও নিজের ইচ্ছায় কোনো কমিটি গঠন করতে পারবেন না। আপনারা কোনো থানা বা উপজেলা কমিটি গড়তেও পারবেন না, ভাঙতেও পারবেন। আপনাদের কোনো কথা থাকলে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করবেন যে এই কারণে ওই কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আপনারা ভাঙবেন কেন? অনেক সময় দেখা যায় উপজেলা বা থানা কমিটি ভেঙে দিয়েছে কেন্দ্র জানে না। আওয়ামী লীগে এটা হতে পারে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘নিজের পকেট থেকে কমিটি করবেন, পকেটের কমিটি আমরা চাই না। কমিটি করবেন দলের দুঃসময়ের ত্যাগী নেতাদের দিয়ে। আজকে দুই পকেটে দুই জন নেতা নির্বাচন, এ ধরনের নেতৃত্ব দলের কোনো কাজে আসবে না। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠন করতে হবে।’ নিজের দলের ভেতরের শত্রু তাড়াতে হবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, আপন ঘরে যার শত্রু তার শত্রুতার জন্য বাইরের শত্রুর দরকার নাই। আপন ঘরের শত্রু তাড়াতে হবে। আপন ঘরে শত্রু রেখে কোনো দিনও আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করতে যে লড়াই বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে করে যাচ্ছি তা সফল হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্টি ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে। কোনো সমস্যা থাকলে নিজেরা সমাধান করবেন। না পারলে কেন্দ্রীয় কমিটি আছে। ঘরের সমস্যা ঘরেই সমাধান করব। ঘরের মধ্যে যদি আমরা একে অন্যের সঙ্গে শত্রুর মতো আচরণ করি, জাতীয় নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় এমনটাই হয়েছে এর পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে ব্যাপারে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
বিএনপি কী বলল এটা বিচার করে বাংলাদেশে রাজনীতি চলবে না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাস্তব অবস্থার সঙ্গে তাদের (বিএনপি) চিন্তাভাবনার মিল নেই। এখানে নির্বাচনে ঘাটতি কোথায়? টার্নআউট সন্তোষজনক। নির্বাচন নিয়ে যারা একসময় কথা বলত, নিষেধাজ্ঞার প্রশ্ন ছিল তারাও বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশের বাস্তব পরিস্থিতি। সেটা অনুধাবন করে বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির শক্তি কমে গেছে তাই মুখের বিষ উগ্র হয়েছে। বিএনপির কথা শুনলে এখন এটাই মনে হয়। এত নোংরা কথা একটা রাজনৈতিক দল বলতে পারে বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। এ দেশের গণতন্ত্র হত্যাকারী বিএনপি গণতন্ত্রের জন্য মায়াকান্না করছে। আমরা সঠিক পথে আছি যে যা-ই বলুক। আর্থিক বিভিন্ন সূচকে আমাদের কথা আমরা জানি। আমাদের অর্থমন্ত্রী এখানে আছেন, তার কণ্ঠেও আশাবাদের সুর। আপনারা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না।’
নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের খেলা হয়েছে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এমন খেলা একাত্তরেও চলছিল। সে অশুভ খেলায় একাত্তরে যেমন ভারতসহ কিছু বন্ধু দেশ পাশে ছিল তেমনি এখনও আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এটা হলো ভারতের অপরাধ। সেজন্য ভারতীয় পণ্য বর্জন করতে হবে। বর্জন করতে যারা বলে তাদের রান্নাঘরে ভারত, ড্রেসিংরুমে ভারত, তাদের শোবার ঘরে ভারত এটা হলো বাস্তবতা। বঙ্গবন্ধু আমলে ভারতবিরোধিতার যে অশুভ খেলা একই অশুভ খেলা আবার শুরু হয়েছে। সবকিছু ছাড়িয়ে বিএনপি এখন ভারতবিরোধিতায় নেমেছে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি এটা ম্যাজিশিয়ান অব পলিটিকস-এ অভিধায় আমরা তাকে ভূষিত করতে পারি। পিতা ছিলেন পোয়েট অব পলিটিকস, কন্যা হচ্ছেন ম্যাজিশিয়ান অব পলিটিকস। শেখ হাসিনার যে পজিটিভ রাজনীতি, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপির ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ফেলে দিয়েছে।’
আমরা চ্যালেঞ্জিং টাইম অতিক্রম করছি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ সময় ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা অনেকেই বলে ফেলে, পত্রপত্রিকায় বের হয়। দায়িত্বশীল ব্যক্তি দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলতে পারে না। এটা সবাই মনে রাখবেন।’
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, অর্থমন্ত্রী আবুল হাছান মাহমুদ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।