রওশনপন্থিদের সম্মেলন
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৪ ১১:৪০ এএম
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২৪ ১৩:২৬ পিএম
রওশন এরশাদ। ফাইল ফটো
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি আরও একবার ভাঙতে চলেছে। শনিবার (৯ মার্চ) রাজধানীর রমনা ইনস্টিটিউটের সামনে খোলামাঠে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদসহ তার অনুসারী শীর্ষ নেতারা অংশ নিবেন।
রওশনপন্থি নেতারা বলছেন, এই সম্মেলনে জাতীয় পার্টির নতুন কমিটি গঠন করা হবে। শেষ পর্যন্ত কমিটি গঠন করা হলে দেশে জাতীয় পার্টি নামে দলের সংখ্যা হবে ৯টি। যেগুলোর অধিকাংশই নিবন্ধিত।
রওশনপন্থিরা শুরু থেকেই মূল জাতীয় পার্টির দাবিদার। প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের স্ত্রী, সন্তানসহ এরশাদ-ঘনিষ্ঠরা এ অংশে রয়েছেন। সম্মেলনের ঘোষণা দেওয়ার আগে একবার কাকরাইলে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখলে নিয়ে সভাও করেছে জাপার এই অংশটি।
এরশাদের মৃত্যুর পর থেকেই জাপার নেতৃত্ব নিয়ে রওশন এরশাদ ও জিএম কাদেরের মধ্যে টানাপড়েন চলে আসছে। তবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ পর্যন্ত একই কমিটিতে ছিলেন দুজনে। পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন জিএম কাদের। অন্যদিকে পৃষ্ঠপোষক পদে থাকা রওশন এরশাদ ছিলেন একাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা।
হিসাব-নিকাশে গোলমাল দেখা দেখ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি কেন্দ্র করে। জিএম কাদেরের সঙ্গে অভিমান করে নির্বাচনে অংশ নেননি পার্টির সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট রওশন এরশাদ। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা, ভরাডুবি এবং ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে বরখাস্ত করেন জিএম কাদের। তাদের সঙ্গে নিজে থেকেই দল ছেড়ে যান আরও অনেকে। সেই পদত্যাগী ও বহিষ্কৃতরাই দাঁড়ান রওশনের পেছনে।
রওশন এরশাদও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেন। একই সঙ্গে নিজেকে চেয়ারম্যান এবং কাজী মামুনুর রশিদকে মহাসচিব ঘোষণা করেন। একাধিক বৈঠক করে ঠিক করেন সম্মেলনের তারিখও।
দলটির নেতারা জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির আজকের সম্মেলনে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। যদিও গত জানুয়ারিতেই নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেন রওশনপন্থি নেতারা।
বর্তমানে জাপার সবচেয়ে শক্তিশালী বা মূল অংশটি জিএম কাদেরের নেতৃত্বে সংসদে ১১ জন এমপি নিয়ে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে। রওশনপন্থিদের তৎপরতা নিয়ে প্রকাশ্যে গুরুত্ব না দিলেও নতুন করে ভাঙনের বিষয়টি জিএম কাদেরকে নানাভাবে বিব্রত করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। উপরন্তু আরও দুর্বল হয়ে পড়বে এরশাদের হাতে গড়া দলটি।
১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর অন্তত আটবার ভেঙেছে দলটি। জাপা, জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি নামে চারটি নিবন্ধিত দল রয়েছে। জাতীয় পার্টি (জাফর) নামেও একটি অনিবন্ধিত দল সক্রিয় রয়েছে। রওশনপন্থিরা সম্মেলন করলে জাতীয় পার্টির সংখ্যা বেড়ে হবে ৯টি।