প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ মার্চ ২০২৪ ১৮:২৪ পিএম
আপডেট : ০৭ মার্চ ২০২৪ ১৯:২৮ পিএম
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। প্রবা ফটো
আন্দোলন সফল করতে নতুন কৌশল নিয়ে এগোতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
গয়েশ্বর বলেন, ‘আমাদের লড়াইটা কিন্তু তারেক রহমানকে নেতা বানানোর জন্য না। কারণ তারেক রহমান অলরেডি জাতীয় নেতা। এখন আমাদের মূল কাজটা হলো তারেক রহমানের নেতৃত্বকে সফল করা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যদি তার নেতৃত্বকে সফল করতে চাই তাহলে আমরা স্ব স্ব কাজে স্ব স্ব দায়িত্বে আমাদের নিষ্ঠাবান হতে হবে। আমাদের ঝিমিয়ে পড়লে হবে না, চাপাবাজিও চলবে না। আমাদের বুঝতে হবে মনের সঙ্গে আর কাজের সঙ্গে যেন অসঙ্গতি না থাকে। আমাদের নতুন নতুন কৌশল আবিষ্কার করতে হবে যে কৌশলের মধ্য দিয়েই জনবিচ্ছিন্ন শেখ হাসিনাকে বিতাড়িত করতে, আমাদের বাঁচার জন্য, দেশটাকে রক্ষার জন্য এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি মনে করি। সেই জরুরি কাজটা করতে গেলে আমাদের সততা নিষ্ঠার দরকার আছে।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনে তারেক রহমানকে বন্দি করা হয়। আর জাতি ও গণতন্ত্র তখন থেকেই বন্দি রয়েছে। বলা হয় তিনি (তারেক রহমান) মুক্তি পেয়েছিলেন। আসলে তিনি পান নাই। তিনি মুক্তি পান নাই মানে দেশের মানুষও মুক্তি পায় নাই। যে লড়াই ও সংগ্রামকে লক্ষ্য করে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে, সেই দেশটিতে এখনও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় নাই।’
তিনি বলেন, ‘এই লড়াই আমাদের চালিয়ে যেতে হবে। এই লড়াইয়ের শেষ কোথায় আমরা জানি না। তারপরও আমাদের চলার পথ অর্থাৎ গণতন্ত্র উদ্ধার করার পথ থেকে আমাদের সরে যাওয়া যাবে না। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আজকে নিষ্পেষিত, আজকে বন্দি। এ থেকে আমাদের অবশ্যই পরিত্রাণ পেতে হবে।’
দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কত মিথ্যাচার করেছে, কত অপপ্রচার করেছে তারপরও সরকার কিছু করতে পারছে না। প্রতিদিন প্রযুক্তির মাধ্যমে সত্য প্রকাশ পাচ্ছে। প্রতিদিন প্রতিনিয়ত তার বক্তব্য ইথারে ভেসে আসছে বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে। মানুষ জানছে তিনি আইন করে, বিচার করে তার বক্তব্য বন্ধ করছেন। কিন্তু তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত তিনি যা বলেন, তার কথা মানুষের কানে এসে পৌঁছায়। এই কারণে শেখ হাসিনার আক্রোস, প্রতিহিংসা দিন দিন আরও বাড়ছে। গণতন্ত্রকামী, ভিন্নমতের মানুষকে কারাগারে নিচ্ছে, গুম করছে, হত্যা করছে, নির্যাতন করছে।’
তিনি বলেন, ‘সুতরাং এই গণবিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াইয়ে জিততেই হবে, বিজয় অর্জন করতে হবে। আমাদের জাতিকে আত্মনির্ভরশীল জাতিতে পরিণত করতে হলে এই সরকারকে সরাতেই হবে। এই সংগ্রামে জয়ী হয়ে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, সংগ্রামের প্রতীক দেশনায়েক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’
বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৮তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়।
বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মীর হেলালের সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আহসানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, তথ্য ও গবেষণা সহসম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
২০০৭ সালের ৭ মার্চ সেনাসমর্থিত ফখরুদ্দিন আহমেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তারেক রহমানকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। পরে তার বিরুদ্ধে ১২টি মামলা দেওয়া হয়। এক বছর পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডনে যান তিনি।