প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:০৯ পিএম
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। প্রবা ফটো
ভারত এবারও স্থিতিশীলতার কথা বলে পাতানো নির্বাচনে মদদ যোগাতে গিয়ে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সোমবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় সংহতি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন এই কথা বলেন তিনি।
সাইফুল হক বলেন, ‘ভারত, চীন, রাশিয়া এই সরকারের প্রতি তাদের যে সমর্থন ব্যক্ত করেছে তা প্রধানত বাংলাদেশ কেন্দ্র করে তাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থের বিবেচনায়। ভারত এবারও স্থিতিশীলতার কথা বলে পাতানো নির্বাচনে মদদ যোগাতে গিয়ে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গতকালের বক্তব্যে এটা প্রমাণ হয়েছে যে, ভারতের মদদ ও হস্তক্ষেপেই তারা ডামি নির্বাচন করতে পেরেছেন ও ক্ষমতায় টিকে আছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জবরদস্তি করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে যেয়ে বাংলাদেশকে পরাশক্তি সমূহের লীলাক্ষেত্রে পরিণত করছে। এই পরিস্থিতি এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি ক্রমে বাড়িয়ে তুলছে।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মানুষ তাদের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলার এই নির্বাচনী তামাশা গ্রহণ করেনি। গণতান্ত্রিক বিশ্ব হিসেবে পরিচিত দেশসমূহ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও ভাগবাটোয়ারার এই নির্বাচনী প্রহসন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বিদেশীদের সৌজন্য সাক্ষাতকার ও কূটনৈতিক শিষ্ঠাচারকে সরকারের প্রতি সমর্থন বা তাদের অনৈতিক ক্ষমতা প্রলম্বিত করার বা টিকে থাকার সার্টিফিকেট হিসেবে দেখানোরও কোনো অবকাশ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে যেয়ে দেশের অবশিষ্ট গণতান্ত্রিক কাঠামো পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা আবারও একদলীয় শাসন জোরদার করতে তৎপর রয়েছে। জবরদস্তি করে ক্ষমতায় থাকতে তারা গোটা রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পথে সরকার পরিবর্তনের পথও তারা বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে দেশকে তারা অকার্যকরী করে তুলছে।’
সাইফুল হক বলেন, ‘ডামি নির্বাচনের সংসদ দিয়ে সরকারের আয়ু বাড়ানো যাবে না। দেশের মানুষ এই দুঃশাসনকে কোনোভাবেই আর বরদাস্ত করছে না। ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন বর্জন করে দেশের মানুষ সরকারের বিরুদ্ধে যে গণঅনাস্থা জানিয়েছে গণআন্দোলন, গণ সংগ্রামের পথে তাকে রাজপথে নিয়ে আসাই এখন বিরোধী দলসমূহের প্রধান কর্তব্য।’
তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিরোধী দলসমূহের মধ্যে রাজপথের যে ঐক্য গড়ে উঠেছে নতুন পর্যায়ে আন্দোলন পুনর্গঠন ও পুনর্বিন্যস্ত করে যুগপৎ ধারায় এই ঐক্য আরও সংহত ও জোরদার করা প্রয়োজন। এর মধ্য দিয়ে দেশের মানুষ তাদের অধিকার ও মুক্তির জন্য যে মরিয়া লড়াই এর জন্য প্রস্তুত তাকে সফল করতে বিরোধী দলসমূহকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানাই।’
আন্দোলনের কর্মসূচি
সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা, দ্রব্যমূল্যের ভয়াবহ উর্ধগতি ও বাজার নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির উদ্যোগে ঢাকাসহ জেলা পর্যায়ে সমাবেশ ও বিক্ষোভের কর্মসূচি করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাশিদা বেগম, সাইফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সংগঠক জামাল সিকদার, মো. স্বাধীন মিয়া প্রমুখ।