× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জাতীয় সংসদ

জাতীয় পার্টিই বিরোধী দল, জিএম কাদের নেতা

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:৩০ পিএম

আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:২৮ এএম

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। ফাইল ছবি

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের। ফাইল ছবি

সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কমসংখ্যক সদস্য নিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। একই সঙ্গে দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) বিরোধীদলীয় নেতা এবং পার্টির কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিরোধীদলীয় উপনেতা নির্বাচিত হয়েছেন।

রবিবার (২৮ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

প্রজ্ঞাপনের পর এক প্রতিক্রিয়ায় জি এম কাদের প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমরা বিরোধী দল হিসেবে মানুষের কথা বলব। সরকার যদি কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি করে তা নিয়েও কথা বলব।’ 

তিনি বলেন, ‘মানুষ যেমন বিরোধী দল প্রত্যাশা করে, আমরা তা পূরণ করব। এর বাইরে আমাদের কোনো চিন্তা নেই।’ এ সময় তিনি নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা জানান।

তবে জাপাকে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদা দেওয়া হলো এমন এক দিনে, যেদিন দলটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও একাদশ সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে বহিষ্কার করে নিজেকে চেয়ারপারসন ঘোষণা করেছেন। 

জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব কে. এম. আব্দুস সালাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “জাতীয় সংসদে সরকারি দলের বিরোধিতাকারী সর্বোচ্চসংখ্যক সদস্য নিয়ে গঠিত দলের নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের (২১ রংপুর-৩) কে জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ২(১)(ট) অনুযায়ী বিরোধী দলের নেতা এবং ‘বিরোধীদলীয় উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) আইন ২০২১’ অনুসারে ২৮২ চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে স্পিকার স্বীকৃতি প্রদান করেছেন।’ 

২০১৮ সালে ২২ জন সংসদ সদস্য নিয়ে এবং ২০১৪ সালে ৩৪ জন সংসদ সদস্য নিয়ে সংসদে বিরোধী দল ছিল জাতীয় পার্টি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনের বাধ্যবাধকতা না থাকায় এবার মাত্র ১১ সদস্য নিয়ে বিরোধী দল হয়েছে জাপা। পর্যাপ্ত সদস্য না থাকায় ১৯৭৩ সালে সংসদ বিরোধী দলবিহীন ছিল। বর্তমানে ভারতের পার্লামেন্টেও কোনো বিরোধীদলীয় নেতা নেই। 

১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ একাই পায় ২৯৩টি। একটি করে আসন পায় জাসদ ও জাতীয় লীগ। বাকি পাঁচটি আসন পান স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা। তারা জাতীয় লীগ নেতা আতাউর রহমান খানকে তাদের নেতা নির্বাচন করে বিরোধী দলের নেতার মর্যাদা দিতে স্পিকারের কাছে আবেদন জানান।

তবে সংসদ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপত্তি জানিয়ে বলেন, বিরোধী দল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হলে একটি রাজনৈতিক দলের অবশ্যই কমপক্ষে ২৫টি আসন থাকতে হবে। না হলে তাদের পার্লামেন্টারি গ্রুপ হিসেবে বলা যেতে পারে, কিন্তু বিরোধী দল নয়।

১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী ও বামপন্থি দলগুলোর বর্জনের মধ্য ভোটের পর গঠিত সংসদেও একই ঘটনা ঘটে। 

গত ১৮ জানুয়ারি জাপার নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে সভায় জি এম কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা, আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে উপনেতা এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ নির্বাচিত করা হয়। তখন নেতারা জানিয়েছিলেন, এ সিদ্ধান্ত তারা লিখিতভাবে স্পিকারকে জানাবেন। স্পিকার সে আলোকে ব্যবস্থা নেবেন। তখন জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছিলেন, জাতীয় পার্টির বাইরে বিরোধী দল হওয়ার সুযোগ নেই। 

সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা মন্ত্রী ও উপনেতা প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা পান। বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) অধ্যাদেশে তাদের সুযোগসুবিধা নির্ধারণ করা রয়েছে। সংসদ ভবনে তাদের কার্যালয়ও রয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসন পেয়ে ইতোমধ্যে সরকার গঠন করেছে। তবে সংসদে কারা বিরোধী দল হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। নির্বাচনে বিজয়ী দ্বিতীয় বৃহত্তম দল বিরোধী দল হিসেবে থাকে। তবে এবার জাতীয় পার্টি দল হিসেবে দ্বিতীয় বৃহত্তম হলেও এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২ আসনে জয় পেয়েছেন, যাদের মধ্যে ৫৯ জনই আবার আওয়ামী লীগের নেতা। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা জোট করলে তাদেরও সংসদে বিরোধী জোট হিসেবে ‘বিরোধী দলের’ মর্যাদা পাওয়ার সুযোগ ছিল। নির্বাচনের পর স্বতন্ত্রদের কেউ কেউ আলাদা মোর্চা গঠনের কথাও বলেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত জাপাই বিরোধী দলের মর্যাদা পেল। 

সংবিধান বা সংসদ পরিচালিত হয় যে কার্যপ্রণালি বিধির দ্বারা, তার কোথাও বিষয়টি স্পষ্ট নয় যে সংসদের বিরোধী দল হওয়ার জন্য ন্যূনতম কতগুলো আসন পেতে হবে। তবে এ রকম একটি রেওয়াজ আছে যে মোট আসনের অন্তত এক-দশমাংশ না পেলে সেই দলকে বিরোধী দল বলা যায় না। তার মানে ৩০০ আসনের সংসদে অন্তত ৩০টি আসন থাকতে হবে বিরোধী দলের। প্রতিবেশী ভারতে এই চর্চা রয়েছে। যেমন এই ‍মুহূর্তে ভারতের লোকসভায় কোনো বিরোধীদলীয় নেতা নেই।

৫৪৫ জনের ভারতের লোকসভায় কমপক্ষে এক-দশমাংশ আসন না পেলে সেই দলকে বিরোধী দল হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয় না। যেহেতু বাংলাদেশের সংবিধান বা কার্যপ্রণালিবিধিতে এ রকম কোনো বিধান নেই। বরং স্পিকার চাইলে তার বিবেচনামতে সংসদে বিরোধিতাকারী দল বা সংঘের নেতাকে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে ঘোষণার এখতিয়ার রয়েছে। ফলে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের প্রজ্ঞাপনে মাত্র ১১ জন সদস্য নিয়ে এবার সংসদে বিরোধ দল হলো জাতীয় পার্টি। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা