প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:২৯ এএম
জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। ছবি : সংগৃহীত
দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে একাট্টা হচ্ছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) পরাজিত প্রার্থী এবং তাদের অনুসারী নেতাকর্মীরা। দলের শীর্ষ দুই নেতাকে বহিষ্কারের পর তাদের কর্মকাণ্ড আরও গতি পেয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ রবিবার দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থীরা বিশেষ সভা আহ্বান করেছেন। সভায় দলীয় প্রার্থীরা ছাড়াও পার্টির সিনিয়র নেতারা অংশ নেবেন বলে জানা গেছে। যদিও গতকাল দলটি থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজকের সভায় নেতাকর্মীদের যেতে বারণ করা হয়েছে।
কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আজ বেলা ১১টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভা সফল করতে শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে জাপার কাকরাইল কার্যালয়ে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে বিভিন্ন প্রার্থী ছাড়াও দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পার্টির বিভিন্ন সভা-সমাবেশে পার্টির যে তিনজন নেতা সব সময় জনবলের জোগান দেন, সে তিনজন সিনিয়র নেতাও এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত ঢাকা-১২ আসনের জাপা মনোনীত প্রার্থী খোরশেদ আলম জানান, রবিবারের সভায় সারা দেশ থেকে দলীয় প্রার্থীরা শরিক হবেন এবং কোন কারণে পরাজিত হতে হয়েছে এবং পার্টির শীর্ষ নেতাদের অসহযোগিতার কথা তুলে ধরা হবে।
জাপার কয়েকজন প্রার্থী বলেন, নির্বাচনের সময় আমাদের হাত-পা বেঁধে সাঁতরাতে দেওয়া হয়েছে। আর্থিক সহযোগিতা তো দূরের কথা, আমরা নির্বাচনী মাঠে প্রচার চালাতে গিয়ে ক্ষমতাসীনদের বাধার মুখে পড়েছি। প্রার্থীদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। তা জানানোর জন্য ফোন দেওয়া হলেও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ফোন ধরেননি। মূলত নির্বাচনের সময় আমাদের প্রতি যে বিরূপ আচরণ করা হয়েছে, আজ তার ব্যাখা দাবি করব।
গত বুধবার বনানী কার্যালয়ে পার্টির চেয়ারম্যান ও মহাসচিবকে অপসারণের দাবি ওঠে। সে সময় উপস্থিত জাপার একাধিক নেতা বলেন, চেয়ারম্যানের অপসারণের বিষয়ে আমরা কিছু জানতাম না। তবে, পরাজিত প্রার্থী এবং নেতাকর্মীরা নির্বাচনে ভরাডুবির জন্য সেদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আজকের সভা প্রসঙ্গে জাপার কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, এ সভা কারও বিরুদ্ধে নয়। সারা দেশের দলের প্রার্থীরা এ সভা আয়োজন করেছেন। কোন কারণে প্রার্থীরা পরাজিত হয়েছেন, তা তারা তুলে ধরবেন।
এদিকে দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বনানী কার্যালয়ে বলেছেন, নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবি হয়েছে, তা অস্বীকার করছি না। সে দায়ভারও আমাদের ওপর বর্তায়। তবে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, এভাবে প্রকাশ্যে করা ঠিক হয়নি।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে ধানমন্ডির একটি অফিসে জাতীয় পার্টির কয়েকজন শীর্ষ নেতাসহ পরাজিত বেশ কয়েকজন প্রার্থী বৈঠকে মিলিত হন। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বুধবার দলীয় প্রার্থীসহ অসংখ্য নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর পদত্যাগ দাবি করেন। তার জেরে গত শুক্রবার দলটির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়কে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।