প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৫১ পিএম
বিএনপি নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। প্রবা ফটো
দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে প্রাণ ফিরে পেল বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। গত বছরের ২৮ অক্টোবরের পর থেকে বন্ধ ছিল কার্যালয়টি। এরপর থেকে পুলিশের উপস্থিতি ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে ছিল কার্যালয়মুখী নেতাকর্মীরা। তখন থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত শুনশান নীরবতা ছিল নয়াপল্টন কার্যালয়। ২ মাস ১৩ দিন পর আজ নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর কার্যালয়টি।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী নেতৃত্বে এই তালা ভেঙে কার্যালয়ে প্রবেশ করে নেতাকর্মীরা।
এ সময় রিজভী বলেন, আমাদের যুবদলের একজন নেতা ও একজন প্রবীণ সাংবাদিক হত্যার মধ্য দিয়ে এক ভয়াবহ নিপীড়নের তাণ্ডব শুরু হয়। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ পণ্ড করে পুলিশ এক নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছিল। এই দুই মাসের অধিক সময় পুলিশ কাউকে এখানে ঢুকতে দেয়নি এবং পাশে ভিড়লেও তাদেরকেও আটক করে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, পুলিশ তালা মেরে এই কার্যালয়ের চাবি নিয়ে যায়। কত নাটক করেছে। তারপরে গেইট বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। সবই গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা দেখেছেন এবং জানেন। আমরা আমাদের প্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এখন ঢুকেছি। পুলিশের কাছে চাবি চাওয়ার পরেও আমাদেরকে চাবি দেওয়া হয়নি। পরে আমাদের কর্মীরাসহ তালা ভেঙে এই কার্যালয়ে আমরা প্রবেশ করি।
তালা ভাঙার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, সেইদিনের তাণ্ডবের পর আপনারা দেখেছেন আপনাদের চোখের সামনে তালা লাগিয়ে পুলিশ চাবি নিয়ে যায়। এরপর কত নাটক ওরা করেছে। আমরা পুলিশের কাছে চাবি চেয়েছিলাম। সেটা তারা দেয়নি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশের একটি নিয়মতান্ত্রিক কার্যকর রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দল বারবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে। সেই দলের প্রধান কার্যালয় একটি মাফিয়াতন্ত্র, একটি মাফিয়া সরকার বন্ধ করে রেখেছে। সুতরাং পুলিশ চাবি না দেওয়াতে তালা ভেঙে আমরা ঢুকেছি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে কোনো কার্যক্রম করতে পারিনি এই কার্যালয়ে। একপ্রকারের পুলিশি বেষ্টনীতে ছিল অফিসটি।
ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর জন্য এই কার্যালয়টি তীর্থ স্থানের মতো। এখানে না আসলে মনের তৃপ্তির পূর্ণ হয় না।
আজ বিকাল ৩টায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন।
নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা গেছে পুরো কার্যালয় ধুলোবালির স্তুপ জমেছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষগুলো এলোমেলোভাবে পড়ে আছে চেয়ার টেবিল, কাজগপত্র, পত্রিকা প্রভৃতি।
গত ২৮ অক্টোবর দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশে পুলিশ টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে পণ্ড করে দেওয়ার পর থেকে এই কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে চাবি নিয়ে যায়। এরপর থেকে সিআইডির ‘ক্রাইম সিন’ স্টিকার লাগিয়ে কার্যালয়ের সামনে সকলের প্রবেশ বন্ধ করে রাখে এবং এখান থেকে তারা ১১টি আলামত সংগ্রহ করে।