× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জাতিসংঘকে চিঠি দিয়ে নির্বাচন ও আগুন নিয়ে যা জানাল বিএনপি

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:০৪ এএম

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ফাইল ছবি

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ফাইল ছবি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশে অগ্নিসংযোগ ও নাশকতা চলছে অভিযোগ করে এ বিষয়ে জাতিসংঘকে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছে বিএনপি। এতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনকে ‘ডামি নির্বাচন’ বলে আখ্যায়িতও করা হয়েছে। এ-সংক্রান্ত চিঠি ঢাকায় প্রতিটি বিদেশের মিশনে পাঠিয়েছে দলটি।

রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকালে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে এই চিঠি পড়ে শোনান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

এ বিষয়ে বিএনপি মিডিয়া সেল সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, দলের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিবের দপ্তর চিঠিটি গ্রহণ করেছে।

জানতে চাইলে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য তার লোকজনকে দিয়ে বিভিন্ন নাশকতা ঘটাচ্ছে। এরপর এর দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। বিএনপির চলমান জনসম্পৃক্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে পরিকল্পিতভাবে এটা করা হচ্ছে। তবে দেশের মানুষ রাজনীতি-সচেতন। প্রকৃতপক্ষে কারা এসব নাশকতা ঘটাচ্ছে, সে সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল। আন্তর্জাতিক বিশ্বও বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো সম্পর্কে অবগত। সুতরাং এভাবে ক্ষমতায় থাকা যাবে না।’

জাতিসংঘে পাঠানো বিএনপির চিঠিতে বলা হয়েছে, চলমান অগ্নিসংযোগের প্রতিটি ঘটনায় একটি সুনির্দিষ্ট প্যাটার্ন লক্ষ করা যাচ্ছে, যার একমাত্র বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগ ও তার অধীন রাষ্ট্রযন্ত্র। আর প্রধান ভুক্তভোগী বিএনপি। শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাসীন শীর্ষ নেতৃত্ব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো তদন্ত, তথ্য বা সূত্র ছাড়াই প্রতিটি ঘটনার পরপর অবলীলায় ও একই সুরে, অগ্নিসন্ত্রাসের দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। নিজেদের সুপরিকল্পিত এই ধ্বংসযজ্ঞকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহার করে তারা রাষ্ট্রীয় দমন-নিপীড়নকে উস্কে দিচ্ছে, যা শেখ হাসিনার প্রতিহিংসামূলক বক্তব্যে বারবার প্রমাণিত।

গত ১৯ ডিসেম্বর ট্রেনে মর্মান্তিক ঘটনার উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকায় চলন্ত ট্রেনের তিনটি বগিতে অগ্নিসংযোগ করা হয় এবং চারজন যাত্রী মারা যান। ঘটনার বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, রাষ্ট্রযন্ত্রের একটি চিহ্নিত অংশের যোগসাজশে এই নাশকতা সংঘটিত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের দুই দিন আগে, ১৯ ডিসেম্বরের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে বিশেষভাবে সরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত শয্যা, জরুরি পরিষেবা, ডাক্তার এবং অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি। আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, এই নির্দেশনাটি কোনো কাকতালীয় বিষয় নয়। ডিএমপির এই প্রস্তুতিমূলক উদ্যোগ কেন নেওয়া হয়েছিল, নাশকতার সুস্পষ্ট তথ্য ও পরিকল্পনা তাদের কাছে কীভাবে এলো এবং তারপরও এটি রোধে কেন তারা কোনো ব্যবস্থা নিলেন না, জনমনে এসব প্রশ্ন রয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, আমরা গভীর হতাশার সঙ্গে দেখলাম, ঘটনার পরপরই ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান দাবি করে বসলেন, বিদেশে অবস্থানরত নেতাদের নির্দেশে এই হামলা হয়েছে এবং এর জন্য বিএনপিই দায়ী। কোনোরূপ তদন্ত বা প্রমাণ ছাড়াই নিজেদের ব্যর্থতা বা সম্পৃক্ততাকে আড়াল করতে, পুলিশের একজন দায়িত্ববান ব্যক্তি কীভাবে আওয়ামী লীগের সাজানো বক্তব্যের প্রচারণায় অংশ নেন, তাতে দেশবাসী হতবিহ্বল। এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং রাষ্ট্রযন্ত্রের সমর্থনে আওয়ামী লীগের যে চিরন্তন ‘ব্লেইম’ গেম পলিটিক্স, তাকেই আরও একবার জনসমক্ষে নিয়ে এসেছে।

চিঠিতে বলা হয়, বিগত বছরগুলোতে বিএনপি যতবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, আওয়ামী লীগও একই দিনে পরিকল্পিত নাশকতার উদ্দেশ্যে কর্মসূচি ডেকেছে। আমরা দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সর্বদা একটি অহিংস আন্দোলন বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছি এবং সব উস্কানি এড়ানোর আহ্বান জানিয়েছি। গত ২৮ অক্টোবর আমরা ঢাকায় একটি মহাসমাবেশের আয়োজন করেছিলাম, যেখানে সারা দেশ থেকে গণতন্ত্রকামী লাখ লাখ মানুষ যোগ দিয়েছিল। নানা প্রতিকূলতা-প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে, জনগণের অংশগ্রহণ আবারও প্রমাণ করেছিল, বিএনপির পক্ষে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে এবং একটি সত্যিকারের নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের বিব্রতকর পরাজয় অনিবার্য। আর তাই আমাদের মহাসমাবেশকে বানচাল ও চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, সেদিন একটি ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে শেখ হাসিনার আজ্ঞাবহ পুলিশের চিহ্নিত অংশ।

চিঠিতে আরও বলা হয়, মুখোশধারী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পুলিশের সহায়তায়, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালায় এবং পুলিশ হাসপাতালের সামনে বাস ও গাড়িতে আগুন দেয়। তারা প্রকাশ্য দিবালোকে একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যাও করে, কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে পুলিশের কেউ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসেনি, যা ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যায়। এই নৃশংসতার পর ফ্যাসিবাদী অপশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে জোরদারের প্রস্তুতি নিলে, আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দেশজুড়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগের এক নোংরা কৌশল অবলম্বন করে।

চিঠিতে বলা হয়, অগ্নিসন্ত্রাসের সময় নীরব দর্শক হিসেবে পুলিশের মৌন সহযোগিতা, নাশকতা শেষে অপরাধীদের অবলীলায় ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়া এবং পরবর্তীতে এর দায়ে বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গণগ্রেপ্তার ও নিরপরাধ মানুষকে হত্যার মতো ঘটনাপ্রবাহের বিশ্লেষণে আওয়ামী লীগের একটি বৃহৎ ষড়যন্ত্রের আলামত স্পষ্ট হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, বানোয়াট অভিযোগ ও গায়েবি মামলাগুলো সাজানো হচ্ছে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার পুনরুদ্ধারে বিএনপির আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করবার জন্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগের যৌথ এই উদ্যোগ আসলে সরকারের মাস্টার প্ল্যানেরই অংশ। এটি আজ দৃশ্যমান যে, অবৈধ সরকার একটি সিস্টেম্যাটিক ফরমুলা অনুসরণ করছে। প্রথমে তারা মিডিয়া কাভারেজ দিয়ে নাশকতার ঘটনা তৈরি করে। এরপর বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তিগুলোর ওপর দায় চাপিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের গণগ্রেপ্তার করছে। পরবর্তীতে তারা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায় প্রদান করে ও আমাদের চলমান আন্দোলনকে বিতর্কিত করার একটি হীন প্রচারণা চালায়।

চিঠিতে ২৮ অক্টোবর থেকে ঘটে যাওয়া ‘রাষ্ট্রযন্ত্রের’ অগ্নিসন্ত্রাসের ১০টি উদাহরণও উল্লেখ করা হয়। একই চিঠিতে নির্বাচনী সহিংসতা এবং ভোটারদের ভয়-ভীতি সম্পর্কিত ১০টি উদাহরণ তুলে ধরা হয়।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা