× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সিডিবির নাগরিক সম্মিলনে বক্তারা

মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৯:২০ পিএম

মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে

সংবিধান মান্য করে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবে। তবে এক্ষেত্রে নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব বাড়বে। সমাজের দুর্নীতি, সিন্ডিকেট বাণিজ্যকে সমাজ, রাষ্ট্র থেকে চিরতরে উচ্ছেদ করে উন্নত বিশ্বের পর্যায়ে দেশকে নিয়ে যাবে। 

শনিবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ক্যাম্পেইন ফর ডেভেলপড বাংলাদেশের (সিডিবি) সহযোগিতায় বৃত্তান্ত ’৭১ ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক নাগরিক সম্মিলনে এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনেরা। 

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নাগরিক দায়বদ্ধতার অবস্থান থেকে দেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বিশিষ্টজনের অংশগ্রহণে সম্মিলনটি হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মনজুরুল আহসান বুলবুল, সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযুষ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মমতাজউদ্দিন ফকির, বিজেএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, চলচ্চিত্র নির্মাতা কাওসার চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা, আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের হস্তক্ষেপ নিয়েও সমালোচনা করেন বক্তারা।

তারা বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্থায়ী রূপে প্রতিষ্ঠা করার প্রত্যয়ে সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে রাজনীতির নামে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান এবং দেশের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সুদৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।

অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান বলেন, আমাদের অনেক তরুণ শিক্ষার্থী বিদেশ চলে যেতে চায়, কেননা তারা এদেশে চাকরি পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে আমরা শুধু তাদের দোষ দিতে পারি না যে তারা সঠিক শিক্ষা অর্জন করতে পারেনি বরং আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থারও ঘাটতি রয়েছে। তরুণদের কাছে আমাদের অঙ্গীকার হতে হবে আগামী দিনের নতুন বাস্তবতায়, নতুন সরকারের সময়ে সুশিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার পাবে তাই তারা যেন লেগে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আশ্রিত একটি নতুন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে উঠবে এ আশ্বাস তাদেরকে দিতে হবে। যারা এখন বিদেশ চলে যেতে চায় তারা সর্বত্রই দেখে নীতির থেকে দুর্নীতি বড়। বিপরীত পরিবেশে টিকতে না পারার শঙ্কা, নিরাপত্তাহীনতার বিষয়গুলোও রয়েছে। তাদের এই ইস্যুগুলোকে আমাদের ক্যাম্পেইনে রাখতে হবে। আগামী দিনে যে সমাজ বা অর্থনীতি আমরা গড়ে তুলবো সেখানে তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নগুলো কীভাবে পূরণ করা যায় সে চিন্তা থাকতে হবে। তাহলেই আমাদের মেধাকে এদেশে রাখতে পারব। 

তিনি বলেন, আমরা যারা সমাজ, অর্থনীতি বদলের কথা বলি তারা যেন তরুণদের এই আশাগুলো দেখাই। নির্বাচনে তরুণদের আকৃষ্ট করতে তরুণদের চিন্তাকে প্রাধান্য দিতে হবে। যারা তরুণদের মন জোগাতে পারবেন তারাই তরুণদের ভোট পাবেন। আমাদের আহ্বান থাকবে যারা তরুণদের, গণমানুষের আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে স্বচ্ছ সমাজ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সমাজ গড়তে চায় তারাই যেন ভোটে অগ্রাধিকার পায়। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে, নিয়মিতভাবে আমরা উন্নতির দিকে যাচ্ছি। আমাদের অর্থনীতি উন্নয়নের পথে অনেকদূর এগিয়েছে, আরও এগোচ্ছে। 

মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, আমরা পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ চেয়েছি, সেই প্রত্যাশিত স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছি, তাদের বিচারও আমরা পেয়েছি। আমার প্রত্যাশা খুবই কম। এখন যেটাই পাবো সেটা বাড়তি। রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য এখন আমাদের পদক্ষেপ হতে হবে। যদি রাষ্ট্রের কোনো বিষয়ে সমস্যা তৈরি হয় তাহলে সেটার সমাধানকল্পে কাজ করতে হবে। শুধু বসে কথা বা আলোচনা করলে হবে না। দেশের তরুণ সমাজকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তাদের দেশের প্রতি মায়া কাজ করে। তিনি তার বক্তব্যে আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে সরকার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালনকারী বিরোধী দলও কামনা করেন। 

ড. মিজানুর রহমান বলেন, সবাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলছেন। কিন্তু অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কী? এর সংজ্ঞা কে দেবে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেবে? অনেকেই বলছেন, বিএনপি নির্বাচনে না আসলে নির্বাচনই হবে না। আমি তো মনে করি, এমন দলকে আইন করে নির্বাচন থেকে নিবৃত্ত করা দরকার। আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির বিজয়ের কথা বলছি। তার মানে একটি বিপক্ষ শক্তিও আছে। তারা কীভাবে দেশে রাজনীতি করে- বিষয়টি আমার বুঝে আসে না। বিচার বিভাগের উপর আস্থা চলে গিয়েছিলো ১৯৭৫ সালে। তখন বলা হয়েছিলো, সামরিক শাসন সংবিধানের ঊর্ধ্বে। এখন বিচার বিভাগের উপর আস্থা ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার মধ্য দিয়ে আস্থা ফিরিয়ে এনেছেন।

আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠিত হবে, সে সরকারের মন্ত্রীপরিষদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সিন্ডিকেট যারা ভাঙতে পারে না, যারা অর্থপাচার ঠেকাতে পারে না, তারা কেউ যেন নতুন সরকারের মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব না পায়।

মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, আমরা এ দেশে নির্বাচন চাই। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে আসুক—সেটাও চাই। আজকে আমেরিকা গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে। তারা কোথাও কি আসলে গণতন্ত্র আনতে পেরেছে? লিবিয়া, সিরিয়া, ভিয়েতনাম—কোথাও তো পারেনি। বর্তমান সরকার সাংবাধিনাক উপায়ে গণতন্ত্রের ধারায় নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। এটি অনেক সাহসের বিষয়। নির্বাচন না করলে কী করা যেতে পারে? এতে মূলত রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। যারা নির্বাচন চায় না, তারা বাংলাদেশকে একটি অরাজনৈতিক ধারায় নিয়ে যেতে চায়। 

বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি কোনো দল নয়। এটি একটি প্ল্যাটফর্ম। যারা মূলত ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা করে। যে দল পরিচালনার জন্য ২০০ সহ-সভাপতির প্রয়োজন পড়ে, সে দল তো নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করে দেবে। 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান বলেন, অনেকে বলছে, এবার নির্বাচন হবেই না। কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচন হতেই হবে। এই নির্বাচনে এখনও পর্যন্ত ৩০-৩২টি দল অংশ নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ এখন পর্যন্ত ২৯৮ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। তারা সব আসনে বিজয়ী হলেও আমি বিস্মিত হবো না। নির্বাচিত হলে তাদের দায়িত্ব বেড়ে যাবে। আমি চাই, নির্বাচনে জয়ী হলে তারা আক্ষরিক অর্থে ’৭২-এর সংবিধান ফিরিয়ে আনবে। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মো. শারফুদ্দীন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আমরা কলঙ্কিত ছিলাম। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করে তিনি আমাদের কলঙ্কমুক্ত করেছেন বিধায় বঙ্গবন্ধু কন্যাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা অনির্বাচিত সরকার চাই না। গণতান্ত্রিক উপায়ে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার চাই। এটি না হলে আমাদের যে উন্নয়ন প্রক্রিয়া, সেগুলো ব্যর্থ হবে। বাংলাদেশ, জাতির পিতা, জাতীয় পতাকা—এগুলো নিয়ে যারা কথা বলবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল দৃশ্যমান। পাঁচ কোটি মানুষ ভাতা পাচ্ছে, গৃহ পাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার পেয়েছেন। কিন্তু কিছু কিছু ঘটনা অনেক অর্জনকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে টাকা পাচারকারী দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা