প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৪৭ পিএম
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ২১:১৬ পিএম
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ফটো
সারা দেশে অগ্নিসন্ত্রাস-নাশকতার ঘটনা ক্ষমতাসীনরাই ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগে করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে ভীতির রাজত্ব কায়েমের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন নৈরাজ্যে লিপ্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতকারী কর্মীরা। তারা গণপরিবহনে অব্যাহতভাবে অগ্নিসংযোগ করছে আর নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জ্বালাও-পোড়াও করে অপরাধীরা খুব সহজেই ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ছে। অথচ প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে অধিকাংশ ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে বা বড় পুলিশ চেকপোস্টের কাছাকাছি ঘটছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও তাদের আজ্ঞাবাহী পুলিশ সদস্যরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে চালক বা তাদের সহকারীদের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, কীভাবে পুলিশ বা ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা তাদের বাসে আগুন দেওয়ার জন্য দায়ী।’
উদাহরণ হিসেবে ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে একটি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় ফেনীর ‘যুবলীগ নেতা’ নুরুল উদ্দিন টিপুকে গ্রেপ্তার এবং ১৪ নভেম্বর নাটোরের তাশরীক জামান রিফাত নামে ‘আওয়ামী লীগ’ কর্মীকে মুখোশসহ গ্রেপ্তারের পর ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ওদের এসব কর্মকাণ্ড বারবার প্রমাণিত হয়েছে। বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এসেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ২০১৪ সালে ছাত্রলীগের তিন সদস্যকে বাসে অগ্নিসংযোগের সময় হাতেনাতে আটক করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দুজন ছাত্রলীগ সদস্য ককটেল ও পেট্রোল বোমাসহ আটক হয়েছিল। একই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় পেট্রোল বোমাসহ গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পর বাধ্য হয়ে পুলিশ দুজন যুবলীগ কর্মীকে ছেড়ে দিয়েছিল।’
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে পুলিশ ৪৭৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ’বিভিন্ন মামলায় ১ হাজার ৭২০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।’
রিজভী অবরোধ সফল করার জন্য নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এই অবরোধ কর্মসূচি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ। আমরা সত্যের পথে আছি, আমরা ন্যায়ের পথে আছি, আমরা মানুষের কল্যাণের পথে আছি, আমরা গণতান্ত্রিক দর্শনের পক্ষে আছি।’
গত ২৮ অক্টোবরে রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশের পর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে দলটি হরতাল-অবরোধের মতো টানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে। রবিবার থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের পর এক দিন বিরতি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছি বিএনপিসহ সমমনা জোটগুলো।