চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:২৩ পিএম
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে (চট্টগ্রাম-৫ আসন) ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এম আব্দুল ওহাব। এরপর ৪৮ বছর পার হয়ে গেলেও এই আসনে কোনো দলীয় সংসদ সদস্য পায়নি আওয়ামী লীগ। এবার সেই আক্ষেপ ঘোচাতে চায় দলটির নেতাকর্মীরা।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৫ আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। পরের দুই দফায় বিরোধী দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করলেও আওয়ামী লীগের কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করায় অনেকটা বিনা বাঁধায় নির্বাচিত হন তিনি।
চটগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেলেও মহাজোট প্রার্থীর সমর্থনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় সমাবেশে আনিসুল ইসলামকে ‘আওয়ামী লীগের কাঁধে চেপে বসা সিন্দাবাদের ভূত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন এ সালাম।
এম এ সালাম বলেন, ‘হাটহাজারিতে জাতীয় পার্টির কোনো অস্তিত্ব নাই। অথচ গত তিনবার উনি দলের উপর দিয়ে জয়ী হয়েছেন। জিয়াউর রহমানের আমলে প্রথম এমপি হন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এরশাদের আমলেও তিনি এমপি হন। ৯৬ সালে নির্বাচন করে জামানত হারিয়েছেন। এই আসনে ৪৮ বছর আওয়ামী লীগের কেউ নির্বাচিত হয়নি। আমরা এবার দলীয় সাংসদ চাই। আমি নিজেও মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে দল থেকে অন্য কাউকে মনোনায়ন দিলেও আমার আপত্তি নেই।’
হাটহাজারীতে আওয়ামী লীগের আরও চারটি বলয় আছে। এর মধ্যে একটি বলয়ের নেতৃত্ব দেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস গনী চৌধুরী, বাকি তিনটি বলয়ের নেতৃত্ব দিচ্ছেন যথাক্রমে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন শাহ, জেলা যুবলীগের সভাপতি রাশেদুল আলম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন নোমান।
এই আসনে নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১০ জন। তারা হলেন-চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট ইব্রাহিম চৌধুরী চৌধুরী বাবুল, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউনুস গনি চৌধুরী, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মইনুদ্দিন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ ইউনুছ, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ কমিটির সদস্য মো. রাশেদুল ইসলাম, উত্তর জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. শামীম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মনজুরুল আলম চৌধুরী এবং উত্তর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বাসন্তী প্রভা পালিত।
এখনো জাতীয় পার্টি নির্বাচনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ বিষয়ে কথা বলতে আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সফল হওয়া যায়নি।
এলাকায় শক্ত অবস্থান রয়েছে বিএনপিরও। এখান থেকে টানা চারবার নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ ওয়াহিদুল আলম। বর্তমানে হাটহাজারিতে বিএনপি তিন ধারায় বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে সাকিলা ফারজানা, অন্য ধারায় রয়েছেন দলটির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিষ্টার মীর হেলাল উদ্দিন। কয়েক দফা হরতাল অবরোধে হাটহাজারীর বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ব্যারিষ্টার মীর হেলাল বলেন, আমরা আন্দোলন সফল করার লক্ষ্যে কাজ করছি। আমাদের মধ্যে কোন বিরোধ নেই।