প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:০৩ পিএম
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৩ পিএম
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে মঙ্গলবার গোলটেবিল আলোচনা সভার আয়োজন করে লিবারেল ইসলামিক জোট। প্রবা ফটো
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সরকারের পক্ষ থেকে সংলাপ আয়োজন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে ইসলামপন্থি ছয়টি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত লিবারেল ইসলামিক জোট। তারা মনে করছেন, সংকট সমাধানে বিদেশিরা নয়, এদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংলাপের বিকল্প নেই।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে লিবারেল ইসলামিক জোট আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় এসব বিষয় উঠে এসেছে। ‘বর্তমান রাজনৈতিক সহিংসতা ও সংকট নিরসনে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জোটের চেয়ারম্যান শাহজাদা ড. সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী।
তিনি বলেন, ‘এভাবে সহিংসতা চলতে থাকলে অরাজকতা দিন-দিন বাড়বে। বিদেশিদের উদ্বেগ থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের সমস্যার সমাধান আমাদেরই করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংলাপের বিকল্প কিছু হতে পারে না। সবাই মিলে ঠিক করতে হবে কী করলে সমস্যার সমাধান করা যায়। সংকট সমধানে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বসে কথা বলার জন্য আমরা প্রস্তুত। কেউ যদি শর্ত দিয়ে সংলাপে বসতে চায় তাহলে সেটা ঠিক হবে না। শর্ত ছাড়া সংলাপে বসতে হবে। রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে যারা কারাগারে আছেন তাদের মুক্তি দিতে হবে। সরকারকেই একটি সংলাপের ব্যবস্থা করতে হবে।’
লিবারেল ইসলামিক জোট ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান সাইফুদ্দীন আহমদ আরও বলেন, ‘বিরোধী দলগুলো যারা অবরোধ করছে, তাদের কারণে বর্তমানে বাজার সিন্ডিকেটরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। তাহলে এই অবরোধ কি জনগণের পক্ষে গেল? মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নাগালের মধ্যে আনতে হলে এ ধরনের কর্মসূচি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। জনগণের পক্ষে কাজ করতে হবে।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার করার দাবি তুলেছেন শিক্ষাবিদ নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী কার্যক্রম শেষ করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তাদের (নির্বাচন কমিশন) মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কিছু সংস্কার করতে হবে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর আমাদের যে নির্বাচন হয়, সেই নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার করতে হবে। যেন ছোটছোট দলগুলো নির্বাচনে আসতে পারে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনে লিবারেল ইসলামী জোট ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন জোটের নির্বাহী চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘তবে খালি মাঠে আমরা গোল দিতে চাই না। বর্তমান সরকার প্রধানের অধীনে নির্বাচনে যেতে আমাদের সমস্যা নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। সংলাপের আয়োজন করার আগে বিএনপির কারাবন্দি সিনিয়র নেতাদের মুক্তি দিতে হবে।’
জোটের সঙ্গী কৃষক শ্রমিক পার্টির চেয়ারম্যান ফারাহনাজ হক চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমানে ঘর থেকে বের হতে গেলে সবাই চিন্তা করে ঠিকমতো ঘরে ফিরে আসতে পারবে কি না। এই আতঙ্কে দেশের মানুষ থাকতে চায় না।’
জোটের আরেক সঙ্গী বাংলাদেশ জনদলের (বিজেডি) চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী বলেন, ‘দেশে দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের একটি আপদ অন্যটি বিপদ। আসুন আমরা সবাই মিলে এই আপদ-বিপদকে নিরসন করি। এর মাধ্যমে আমরা একটি সুন্দর দেশ গড়ে তুলতে পারব।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আশিক্বীনে আউলিয়া ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান আলম নুরী আল সুরেশ্বরী, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ ভাসানী) চেয়ারম্যান হাসরত খান ভাসানী, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক আকন্দ প্রমুখ।