যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপের আহ্বান
বাছির জামাল
প্রকাশ : ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২৯ এএম
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৪০ এএম
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রধান তিন রাজনৈতিক দলকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য শর্তহীন সংলাপে বসতে চিঠি দিয়েছে। ক্ষমতাসীন ও বিরোধীপক্ষের অনমনীয় অবস্থানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর এই চিঠি নিয়ে কী ভাবছে বিএনপি? এমন প্রশ্নে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তাদের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি।
তবে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চিঠিটি দলের হাইকমান্ডের কাছে দেওয়া হবে। তারাই সংলাপের ব্যাপারে কী করবেন সেই সিদ্ধান্ত নেবেন। বিএনপির এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দলটির নীতিনির্ধারণী সর্বোচ্চ ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে। কিন্তু দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসহ অধিকাংশ সিনিয়র নেতারা এখন কারাগারে। যারা বাইরে আছেন, তাদের নামে মামলা রয়েছে। এজন্য তারা আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের ছাড়া বিএনপি কাদের নিয়ে সংলাপে যাবে, এমন বক্তব্য এসেছে বিএনপি নেতাদের বরাতে।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দল গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকও এ প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছেন। তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেছেন, যাদের সঙ্গে সংলাপ হবে, তারাই তো কারাগারে। বিএনপির সিনিয়র নেতারা জেলখানায়। তাদের নামে মিথ্যা মামলা রয়েছে। সারা দেশে চলছে গ্রেপ্তার অভিযান। এ অবস্থায় সংলাপ কীভাবে সম্ভব? তিনি বলেন, নেতাদের মুক্তি দিয়ে, সব মামলা প্রত্যাহার করে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব সংলাপে যাব কি না বা সংলাপে গেলে কী নিয়ে আলাপ করব।
গত ৪ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করেছে। সেখানে যায়নি বিএনপি। তখন এ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেছিলেন, ‘কিসের সংলাপ? দলের মহাসচিব, কেন্দ্রীয় নেতাসহ অনেকেই জেলে, অনেকে রিমান্ডে, কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ। যেসব নেতা বাইরে রয়েছেন, তাদের বাসাবাড়িতে তল্লাশি করা হচ্ছে। অনেকে রাতের পর রাত বাড়িতে থাকতে পারছেন না। এ অবস্থায় কিসের সংলাপ?’
অবশ্য আওয়ামী লীগও বিএনপির সঙ্গে বসতে চায় না। গত ৩১ অক্টোবর গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি সন্ত্রাসী ও খুনিদের দল। যারা পুলিশ খুন করেছে, বাসে আগুন দিয়েছে, তাদের সঙ্গে কিসের আলাপ, কিসের বৈঠক? বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি জনগণও চায় না।’
যুক্তরাষ্ট্রের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে আবার সংলাপের প্রসঙ্গটি আলোচনায় এলো। বিশেষ করে কয়েকদিনের মধ্যে দ্বাদশ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। আওয়ামী লীগ ও তার মিত্র দলগুলো নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। অপরপক্ষে তফসিল ঘোষণা করলে অসহযোগসহ কঠোর কর্মসূচিতে যাবে বলে জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মিত্র গণঅধিকার পরিষদের (নুর) সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, সমঝোতা ছাড়া তফসিল ঘোষণা হলে পরিস্থিতি ভালো হবে না।