প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৩৭ পিএম
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:০২ পিএম
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সোমবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে। প্রবা ফটো
আইনের চোখে পলাতক লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আগুন সন্ত্রাসের হুকুমদাতা হিসেবে বিচার করা হবে বলেও জানিয়েছেন ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত অবরোধের নামে যে আগুন সন্ত্রাস করছে তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এদেশে কালো মেঘ আসে, আবার চলে যায়। জনগণের কাছে পারমাণবিক শক্তিও টিকে না। উদ্বেগ থাকবে, তা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘দেশে একটা সংকট চলছে। আমরা একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। রাশিয়া-ইউক্রেনসহ কয়েকটি দেশে যুদ্ধ চলছে। সারা পৃথিবীতে যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে। এ দুঃসময়ে মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘা’র মতো আমাদের দেশের একটি রাজনৈতিক দল আন্দোলন করেছে, আগুন সন্ত্রাস করছে। দলটি ব্যর্থ হয়ে বারবার অতীতের মতো আগুন সন্ত্রাস করেছে। এ দলটির দেশের জন্য সামান্য ভালোবাসা নেই। তাদের উদ্দেশ্য যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাট করা।’
গত ২৮ অক্টোবরের সহিংসতার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে-কুপিয়ে হত্যা করেছে বিএনপি। এটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায়। এমনকি তারা ৩০ জন সাংবাদিককে মারধর করেছে। প্রধান বিচারকের বাসায় হামলা করেছে। বিএনপি হলো একটা প্রতারক দল। বিএনপি উল্লাপাড়ার এক পাগলকে ধরে এনে জো বাইডেনের বন্ধু বানিয়ে দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আন্দোলনের নামে প্রতারণার নাটক যারা করে তাদের হাতে এদেশ কখনও নিরাপদ নয়। তাদের প্রতিহত করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি বলেছিল আওয়ামী লীগ পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। কিন্তু এখন বিএনপিই পালাবার অলিগলি খুঁজে পাচ্ছে না। ২৮ অক্টোবর আমরা দেখলাম মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতারা অলিগলি দিয়ে পালিয়ে গেল। তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা তোড়া বুরা পাহাড়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিবৃতির কথা উল্লেখ করে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিবৃতিতে ভুল আছে, ঘাটতি আছে। তারা হয়তো সঠিক তথ্য পায়নি। তারা বলেছে বিএনপির আট হাজার নেতাকর্মী আটক হয়েছে। কিন্তু পুলিশ পিটিয়ে হত্যা করা হবে, কেউ সন্তাসী কর্মকাণ্ড করবে, আগুন সন্ত্রাস করবে, তাদের আইনের আওতায় আনা যাবে না? ইউরোপীয় ইউনিয়ন সঠিক তথ্য জেনে বক্তব্য দিলে ভালো হবে। আমরা কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে চাই না।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি এখন চোরাগুপ্ত হামলা শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকতে হবে। চোরাগুপ্ত হামলা নিয়ে ভয় পাওয়া, আতঙ্কিত হবেন না। আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। যারা প্রতিদিন আগুন সন্ত্রাস করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আবারও ক্ষমতা আসব। জনগণের সমর্থন নিয়ে আমরা এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। শেখ হাসিনা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সকল অপশক্তি প্রতিহত করব।’
তিনি বলেন, ‘ফাইনাল খেলা তাদের সঙ্গে হবে, যারা মাঠে থাকবে। যারা মাঠে থাকবে না তাদের সঙ্গে তো খেলার প্রশ্নই আসে না। বিএনপি-জামায়া সহ কোনো ইসলামি দলকে তো দেখলাম না গাজা ইস্যুতে কোনো বিবৃতি বা কোনো কথা আছে? তাহলে তাদের বিবেক কোথায়? জুমার নামাজ শেষে তারা মিছিল করে। তারা ক্ষমতা চায়, মানবতা চায় না। তাদের মানবিকতা নেই।’
এছড়া নাশকতায় জড়িত সন্দেহে সাধারণ মানুষকে যেন গ্রেপ্তার করা না হয় সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ প্রমুখ।