প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:১৯ পিএম
আপডেট : ২৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:৩১ পিএম
ফাইল ছবি
রাজনীতিতে এখন টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে। আগামীকাল শনিবার রাজধানীতে মহাসমাবেশ ডেকেছে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার মিত্ররা। একই দিনে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের এমন শক্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে জনমনে দেখা দিয়েছে নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিএনপি আগামীকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে এবং আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে সমাবেশের প্রস্তুতি চালাচ্ছে। বিএনপির আন্দোলনের সঙ্গী জামায়াতে ইসলামীও মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পুলিশের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে দুটি খোলা মাঠে জনসভা করার পরামর্শ দেওয়া হলেও তারা সম্মত হচ্ছে না। দুপক্ষই রয়েছে অনড় অবস্থানে। অন্যদিকে জামায়াতকে সমাবেশ করার কোনোরকম অনুমতি না দেওয়ার বিষয়ে পুলিশ অনড় অবস্থান নিয়েছে। তবে জামায়াতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অনুমতি না পেলেও তারা শাপলা চত্বরে সমাবেশ করবে। এমন পরিস্থিতিতে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে সমাবেশ ঘিরে রাজধানীসহ সারা দেশে ব্যাপক তল্লাশি ও ধরপাকড় শুরু করেছে পুলিশ। থানায় থানায় পুলিশের আটক বাণিজ্যের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে বিভিন্ন যানবাহন, বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, মেস ও বাসাবাড়িতে চলছে গণতল্লাশি। রাজধানীর প্রবেশমুখে যানবাহনে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ও র্যাব। সমাবেশে যোগ দিতে সারা দেশ থেকে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় প্রবেশ করেছে। তারা আত্মীয়-স্বজনের বাসা, মেস, আবাসিক হোটেলসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে। সেখানেও তারা পুলিশি তল্লাশি ও জেরার মুখে পড়ছে।
বিএনপি নেতাদের দাবি, গত দুই দিনে তাদের প্রায় ২০০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঢাকার নিম্ন আদালতের আইনজীবী শাকিল আহমেদ রিপন জানান, বিভিন্ন থানা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ২৪০ জন আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ১৫০ জন বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী। তাদেরকে পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘আমরা দুপক্ষকেই বলেছি রাস্তায় না করে খোলা জায়গায় সমাবেশ করার বিষয়ে। এতে সাধারণ মানুষের উপকার হবে।’ জামায়াতের সমাবেশের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জামায়াতের অতীত কর্মকাণ্ড অত্যন্ত জঘন্য। তারা সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। তাদের বিষয়ে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। আমরা কোনো অবস্থাতেই তাদেরকে অনুমতি দেব না।’ বিভিন্ন থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, বাসাবাড়িতে তল্লাশি এবং গ্রেপ্তার বাণিজ্য চলছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মী নয়, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
পুলিশের বিরুদ্ধে আটক বাণিজ্যের অভিযোগ
বিএনপির মহাসমাবেশ সামনে রেখে পুলিশ ব্যাপক হারে আটক বাণিজ্য শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, বিভিন্ন বাসাবাড়ি, আবাসিক হোটেল, মেস থেকে লোকজনকে আটক করা হচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মী আখ্যা দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ আদায় করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। কামরাঙ্গীরচর থানা পুলিশ আশ্রাফাবাদ এলাকা থেকে ৫ জনকে বিএনপিকর্মী সন্দেহে আটক করে। পরে তাদের কাছ থেকে কিছু অর্থ নিয়ে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও স্থানীয় পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। যাত্রাবাড়ী, লালবাগ, খিলগাঁও, রামপুরা, উত্তরা, মোহাম্মদপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে আটক বাণিজ্যের আরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে রাজধানীর সবকটি প্রবেশমুখে ব্যাপক হারে তল্লাশি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমিনবাজার, আশুলিয়া, শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ী, বাবুবাজার, কদমতলী, আবদুল্লাহপুর, টঙ্গীসহ সবকটি স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে যাত্রীবাহী বাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়। থানা পুলিশ ও র্যাবের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশও বিভিন্ন এলাকায় চৌকি বসিয়ে তল্লাশি করে। আশুলিয়া থেকে প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিবেদক জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতালের সামনে, আশুলিয়ায় থানা পুলিশ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে হাইওয়ে পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে গণহারে সব ধরনের যানবাহনে তল্লাশি চালায়। পুলিশ সদস্যরা লোকজনের মোবাইল ফোনও ঘেঁটে দেখছেন।
রাজধানীর সায়েদাবাদ, গোলাপবাগ এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে সব ধরনের যানবাহনে তল্লাশি করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার যেহেতু বড় দুটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি আছে, তাই যেকেউই বিস্ফোরক বা অস্ত্র বহন করে এনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে। সেজন্যই চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
ফকিরাপুল এলাকার রেস্টুরেন্ট মালিক আলম হোসেন বলেন, ‘আমরা সাধারণত সারা রাত রেস্টুরেন্ট খোলা রাখি। পুলিশ এসে আমাদেরকে বলে গেছে, যাতে রাত ৯টার পর রেস্টুরেন্ট খোলা না রাখি। একই কথা জানান নয়াপল্টনের রুটি হাউস নামে একটি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজারও।
সারা দেশে গ্রেপ্তার-তল্লাশি
দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার এবং তল্লাশি অভিযান চলছে বলে প্রতিদিনের বাংলাদেশের স্থানীয় প্রতিবেদকরা জানিয়েছেন।
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার মধ্যরাতে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনকে রাজধানীর সিপাহীবাগের নবীনবাগ ক্যান্ট রেস্টুরেন্ট ভবনের তার ভাইয়ের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি, যুবদল, শ্রমিক দল ও ছাত্রদলের বহু নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার ও আটক করা হয়।
চট্টগ্রাম অফিস জানায়, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় তল্লাশি করা হচ্ছে। তল্লাশি এড়িয়ে নেতাকর্মীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে রাজধানীতে সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে বিএনপির ২০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনা অফিস জানিয়েছে, নগরীর বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করে বিএনপি-জামায়াতের ৫২ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুলনা থেকে প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী মহাসমাবেশে যোগ দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপি নেতারা। রংপুর অফিস জানিয়েছে, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি-জামায়াতের ২০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, বাস-ট্রেন বোঝাই হয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাচ্ছে। জেলায় বিএনপির ৫ জন ও জামায়াতের ৩ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ প্রতিবেদক জানান, কোটালীপাড়ায় বিএনপির তিন নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। পার্বতীপুর প্রতিবেদক জানান, জামায়াত-বিএনপির ৩ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাবনা প্রতিবেদক জানান, পাবনার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ চিরুনি অভিযান চালিয়ে বিএনপির ৬৭ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। মেহেরপুর প্রতিবেদক জানান, নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে মুজিবনগরে জামায়াতের ৫ জন মহিলা কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কুষ্টিয়া প্রতিবেদক জানান, জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির ১১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নওগাঁ প্রতিবেদক জানান, জেলার মান্দা, পোরশা ও সদরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফেনী প্রতিবেদক জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালিয়ে ফেনী জেলা যুবদলের ৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদক জানান, জেলা বিএনপির একজন ও জামায়াতের ৩ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নয়াপল্টনেই অনড় বিএনপি
পুলিশের অনুমতি না পেলেও নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেই মহাসমাবেশ করতে চায় বিএনপি। তারা গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএমপিকে চিঠি দিয়ে বলেছে, সমাবেশে ১ লাখ ২০ হাজারের মতো লোক হবে। পাঁচ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক সমাবেশের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। সন্ধ্যা ৬টার আগেই তারা সমাবেশ শেষ করবে। বিকল্প কোনো স্থানে যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। সমাবেশের জন্য বিকল্প ভেন্যু খোঁজাসহ সাত তথ্য জানতে চেয়ে পুলিশ যে চিঠি দিয়েছিল, রুহুল কবির রিজভী তার জবাবে পল্টন থানায় পাঠানো একটি চিঠিতে এসব কথা জানান। নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করার জন্য গত ২১ অক্টোবর ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি দিয়েছিল বিএনপি। তাদের চিঠির জবাবে গত বুধবার বিকল্প দুটি ভেন্যুর নামসহ সাত তথ্য চায় পুলিশ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এক দফার দাবি আদায়ে আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানী ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ সারা দেশের ভোটারদের মহাসমাবেশ। এতে গণতন্ত্রকামী প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সহযোগিতা ও সমর্থন রয়েছে। এই সমাবেশের প্রতি বিশ্বের সব গণতান্ত্রিক শক্তিরও নৈতিক সমর্থন রয়েছে। এটি সরকারের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক কর্মসূচির শেষের শুরু।
অনড় আওয়ামী লীগও
পুলিশের পক্ষ থেকে সাতটি শর্ত দিয়ে বিকল্প ভেন্যুর নাম জমা দিতে বলা হয়েছিল আওয়ামী লীগকেও। দলটি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউকে বিকল্প হিসেবে বিবেচনায় নিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তে না থেকে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনেই শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করার বিষয়ে অনড় রয়েছে আওয়ামী লীগ। নতুন করে প্রস্তুতি নেওয়ার সীমাবদ্ধতার কথা বিবেচনায় নিয়ে পূর্বের স্থানের সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে তারা। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির অনড় অবস্থানের বিষয়টি জানার পরই আওয়ামী লীগও তাদের পূর্বের অবস্থানে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া হুট করে জামায়াতে ইসলামী শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়ার কারণেও সমাবেশস্থল নিয়ে আওয়ামী লীগ আগের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে গেছে।
আজ থেকেই মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ
বিএনপির মহাসমাবেশকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। আজ শুক্রবার থেকেই টানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবেন ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। যদিও সহযোগী সংগঠনগুলো এরই মধ্যে মাঠের কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, নির্বাচন বানচাল করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ব্যাহত করতে বিএনপিসহ কিছু রাজনৈতিক দল কর্মসূচির নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে সারা দেশ থেকে সন্ত্রাসীদের জড়ো করানো হচ্ছে। নগরবাসীর জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শুক্রবার থেকেই ঢাকা মহানগরীর থানা ও ওয়ার্ডে মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে চলবে সতর্ক পাহারা। ২৮ অক্টোবরের পরেও বিএনপি ও তাদের মিত্রদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে টানা কর্মসূচি পালন করা হবে।
গতকাল আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার সারা দিন ঢাকার বিভিন্ন সংসদীয় এলাকা, থানা ও ওয়ার্ডে মিছিল করে বিএনপি ও তার মিত্রদের সতর্কবার্তা দেওয়া হবে। জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সব ধরনের প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ নিতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল বলেন, বিএনপি নেতারা যেভাবে কথা বলছেন- তার মানে দাঁড়ায় তারা প্রতিরোধের নামে সহিংসতায় যেতে চান। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি সমাবেশ করব। তারা আক্রমণ করতে এলে চুপচাপ বসে থাকব না। শান্তি সমাবেশে হামলা হলে পাল্টা হামলা হবে। তাদের সমাবেশস্থলে হামলা করব না, অতীতেও করিনি।’
ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিএনপি বা তাদের মিত্ররা যদি কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার ঘোষণা দেয় তাহলে আমরাও কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকব। কাউকে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না।’
ব্যাপক প্রস্তুতি পুলিশের
গতকাল থেকেই রাজধানীর মোড়ে মোড়ে মোতায়েন ছিল বিপুলসংখ্যক পুলিশ। ডিএমপির নিয়মিত বাহিনী, রিজার্ভ ফোর্স, এপিবিএনের পাশাপাশি ঢাকা রেঞ্জ ও চট্টগ্রাম রেঞ্জ এবং রাজধানীর পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক ফোর্স চেয়ে পাঠায় ডিএমপি। আজ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেবে পুলিশ, আমর্ড পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশ। থাকবে রায়ট কার, জলকামানসহ দাঙ্গা দমনের সামগ্রী। এপিবিএন বা দাঙ্গা পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্যকে স্ট্যান্ডবাই রাখা হবে। এ ছাড়া বিজিবির পর্যাপ্তসংখ্যক প্লাটুন মোতায়েন থাকবে। সমাবেশস্থলে থাকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। দুই দলের সমাবেশের নিরাপত্তাব্যবস্থা মনিটর করা হবে ড্রোনের মাধ্যমে। ডিএমপির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।