প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:৩৫ পিএম
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৪২ পিএম
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘ঘুরে ফিরে লাভ নেই, সময় শেষ হয়ে গেছে, দয়া করে কেটে পড়েন। না হলে জনগণ আপনাদের টেনে নামাবে।’
শনিবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইনিস্টিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে শিক্ষক-কর্মচারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে; যারা ভোট চুরি করেছে, খুন করেছে, গুম করেছে, লুটপাট ও দুর্নীতি করেছে, দলীয়ভাবে বিচার করেছে। সবাই এখন আতঙ্কিত। সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের ছাপ দেখি আওয়ামী লীগের সভাপতির মাঝে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের পরিকল্পনা হচ্ছে রাষ্ট্রকে একটা নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করা। সেজন্য সরকার আগের ক্লাস টু-থ্রিতে যে প্রবন্ধ পাঠ করানো হতো সেগুলো পরিবর্তন করে ফেলেছে। জ্ঞানী দেশপ্রেমিক মানুষগুলোর জীবনীগুলোকে বাতিল করে অন্য দেশের কালচার ঢুকিয়ে দিয়েছে।’
শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, ‘চাঁদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে জমির বিষয়ে অভিযোগ করে ডিসি বলেছেন, ৩৬৫ কোটি টাকা শিক্ষামন্ত্রীর আত্মীয়রা লোপাট করেছে। নদী কমিশনের চেয়ারম্যান সরকারি লোক, তিনি বলেছেন শিক্ষামন্ত্রীর মদদে তার লোকেরা ৬০০ কোটি টাকার বালু লোপাট করেছে। এদের উদ্দেশ্য একটাই- শিক্ষাকে পঙ্গু করা এবং আমরা জাতি হিসেবে যেন নির্ভরশীল হতে না পারি।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘একটি জাতির শিক্ষাব্যবস্থা যদি পঙ্গু করে দেওয়া যায়, তবে সেই জাতিকেই পঙ্গু করে দেওয়া যায়। আজ সেই দিকটা খেয়াল করুন, কেন হচ্ছে? রাষ্ট্রের যে কাঠামো সেই কাঠামোই তো এই সরকার পরিবর্তন করেছে। এই সরকারের তো কোনো জবাবদিহি নেই। পার্লামেন্ট একটা আছে। সেটা তোষামোদির কারখানা। যারা অনির্বাচিত তারা গেছেন ওখানে, একটা কোটার মাধ্যমে। ওখানে গিয়ে তাদের একটাই কাজ, প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন আর তারা বলবেন, আহ্ বেশ বেশ বেশ।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মঈন খান বলেন, ‘আমাদের সংবিধানের যে পাঁচটি মৌলিক অধিকার দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিক্ষা। পরিতাপের বিষয় স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও শিক্ষকদের অধিকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করতে হচ্ছে। এটা শুধু সরকার নয়, আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা। কেন আমাদের সংবিধানের প্রদত্ত মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না, এ প্রশ্ন আজ করতে হবে। শিক্ষার অধিকার অর্জনের জন্য এবং সেই অধিকার আদায়ের জন্য যদি সংবিধান পরিবর্তন করা প্রয়োজন মনে করি, আমরা সেটা করব। এর মধ্যে কোনো দ্বিমত থাকতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জার্মানির সবচেয়ে সম্মানিত পেশা হচ্ছে শিক্ষকতা এবং শিক্ষকদের সব দায়িত্ব সরকার নিজে গ্রহণ করেছে। আজ জার্মানির এত উন্নয়নের পেছনে মূল কারণ হচ্ছে শিক্ষা। যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে বিশ্বের কোনো দেশ শক্তিশালী হয় না। শিক্ষা দিয়ে শক্তিশালী হয়। আমেরিকা বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক দেশ ও শক্তিশালী হওয়ার পেছনে রয়েছে শিক্ষা। বিশ্বের সেরা ১ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯০০টি বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকার।’
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মুগিস উদ্দিন মাহমুদের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদসহ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।