প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:৩৪ পিএম
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ২০:২৪ পিএম
রাজধানীতে এক পেশাজীবী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রবা ফটো
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লন্ডনে সংবর্ধনা সভায় যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা থেকে এ সত্য বের হয়ে এসেছে যে—এ দেশে যা কিছু ঘটে সব তার (প্রধানমন্ত্রী) ইঙ্গিতেই ঘটে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান দখলদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লন্ডনে দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেছি, নিন্দা জানিয়েছি। তার বক্তব্য অশ্লীল ও ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়—এ কথা বলেছি। তবে এ অশ্লীল বক্তব্য থেকে সত্যটি বের হয়ে এসেছে—এ দেশে যা কিছু ঘটে তার ইঙ্গিতেই ঘটে।’
বুধবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীতে আয়োজিত পেশাজীবী পরিষদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।
সোমবার লন্ডনের মেথডিস্ট সেন্ট্রাল হল ওয়েস্টমিনস্টারে
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিচার বিভাগের প্রয়োজন নেই। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের
প্রয়োজন নেই। তার (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্তই সিদ্ধান্ত। তিনি লন্ডনে
বলেছেন, যেদিন তাকে ক্যান্টনমেন্টে ঢুকতে বাধা দেওয়া
হয়েছিল, সেদিনই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কোনোদিন যদি সুযোগ পান তাহলে খালেদা জিয়াকে
ক্যান্টনমেন্ট থেকে উচ্ছেদ করবেন এবং সেটা করেছেন।’
বিএনপি মহাসচিব তার ছোটবেলায় তার পিতার কাছ থেকে শোনা ফার্সি সাহিত্যের একটি উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের ভাইদের মধ্যে যখন মারামারি হতো, তখন বাবা বলতেন—তোমরা কী করছ! হাম সু দিগা নিস্ত- আমি হচ্ছি অদ্বিতীয়। এখন ভাবে মনে হয়—শেখ হাসিনা অদ্বিতীয় হয়ে গেছেন। তাহলে সিজারের মতো ঘোষণা করে দেন—আই এম দ্যা এমপায়ার (আমিই সাম্রাজ্য)।’
তিনি বলেন, ‘তার (শেখ হাসিনা) পুরোটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং এক ধরনের ঔদ্ধত্য—এ দেশ আমার, আমার ও আমার।’
চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুই বছর ধরে
রাস্তায় আন্দোলন করছি। ২২ জনের প্রাণ গেছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মানে এই না যে কেউ আঘাত করলে তার প্রত্যাঘাত করব না।’
তিনি বলেন, ‘এবার দেশ-বিদেশে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এর একটিমাত্র কারণ এবং তা হচ্ছে—তারা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আইন ত্রয়োদশ সংশোধনী এখনও বিদ্যমান আছে। ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়েছে। সবাই যখন তত্ত্বাবধায়ক রাখতে বলেছে, শুধু শেখ হাসিনা একা তা পরিবর্তন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ দেশে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ
সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে হবে। এর বাইরে কোনো নির্বাচন
হবে না। পদত্যাগ করে নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা গঠন করার ব্যবস্থা নিন। তারপরই
কেবল নির্বাচনের প্রশ্ন আসবে। তার আগে নয়।’
দেশের প্রথিতযশা আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এজে মোহাম্মদ
আলীর সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন
খান ও পেশাজীবী নেতারা।
সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির
চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি
মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ
মুহম্মদ ইবরাহিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ
সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী
জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক
ড. আবু আহমেদ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ড.
ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ
রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর
প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব
কাদের গনি চৌধুরী,
অ্যাডভাকেট কামরুল ইসলাম সজল ও শামীমুর রহমান শামীম।